আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কবি সুমনা মেহেরুন আত্মহত্যা মামলার আপডেট ০৮ জুন ২০১০

যে কোন লড়াই শেষ পর্যন্ত লড়তে পছন্দ করি।

কবি সুমনা মেহেরুন আত্মহত্যা মামলার আপডেট ০৮ জুন ২০১০ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পত্র মারফত সুমনা মেহেরুনের আত্মহত্যা বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র সচিব সাহেবকে বলা হয়েছে সে কথা আগেই আপনাদের জানিয়েছি। ইতিমধ্যে বিডিপিসি জানতে পেরেছে হাজারিবাগ থানা এই মামলাটির বিষয়ে একটি ফাইনাল রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেছে। পুলিশের দৃষ্টিতে ফাইনাল রিপোর্টটির দ্বারা মামলাটির পরিসমাপ্তি ঘটেছে। অর্থাৎ এই আত্মহত্যার ঘটনায় কাউকে দায়ী করা হয়নি বা কারো বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

লক্ষ্যনীয় যে এই মামলাটির ক্ষেত্রে মিটফোর্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সল্পতম সময়ে মেডিকেল রিপোর্ট প্রদান করেছে যা বাংলাদেশে সাধারনতঃ ঘটেনা। অপরদিকে হাজারিবাগ থানাও মেডিকেল রিপোর্ট পেয়ে খুব দ্রুত ফাইনাল রিপোর্ট প্রদান করেছে। আরো লক্ষ্যনীয় যে থানা যে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এই কথাটি বিডিপিসি তদন্ত দলকে কখনও জানাননি। মে মাসের ২৬ তারিখ (২৬/০৫/২০১০) হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট থেকে বিডিপিসি’র পরিচালক বিষয়টি প্রথম জানাতে পারেন। আইন সহায়তা প্রদানে এবং সরেজমিন তদন্ত অনুষ্ঠানে বিডিপিসি’র দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায় যে, পুলিশকে জানিয়ে কোন মানবাধিকার সংস্থা সরেজমিন তদন্ত শুরু করার পর ব্যতিক্রম ছাড়া তদন্তটি সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ সাধারনতঃ মামলার রিপোর্ট চুড়ান্ত করে না।

এক্ষেত্রে পুলিশ বিডিপিসি’র তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা না করেই ফাইনাল রিপোর্ট প্রদান করেছে। আরো লক্ষ্যনীয় যে, পুলিশ ময়নাতদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছে। অথচ সুমনা মেহেরুন আত্মহত্যা ঘটনার মামলার ক্ষেত্রে ময়না তদন্ত কোন গুরুত্বপূর্ন বিষয় নয়। আত্মহত্যা তিনি করেছেন এ কথা সত্য। কিন্তু এই মামলার ক্ষেত্রে মূল বিবেচ্য বিষয় হল তিনি কি কারনে আত্মহত্যা করেছেন সেটি।

এই প্রশ্নটির উত্তর সন্ধান করতে গেলে দেখা যায় এক বা একাধিক ব্যক্তির শঠতা, প্রতারণা এবং অমানবিক আচরণের কারনে বিক্ষুব্ধ ও ব্যাথিত হয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে একটি প্রধান চরিত্র রয়েছে। আর এ কারনেই আত্মহত্যায় প্ররোচনা অথবা আত্মহত্যা করতে বাধ্য করার অপরাধে যে সব ব্যক্তি তার সাথে অমানবিক আচরণ করেছে তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দন্ডবিধির ৩০৬ ধারায় মামলা হতে হবে। এই ধরনের অপরাধকে আইনের ভাষায় In-voluntary man-slaughter বলে। আমাদের দেশে পুলিশ বাংলাদেশ দন্ডবিধির ৩০৬ ধারার অধীনে সহজে কোন মামলা গ্রহণ বা রুজু করতে চায় না।

এটি ন্যায় বিচারের পরিপন্থী একটি প্রবণতা। মামলাটির দ্রুত ফাইনাল রিপোর্ট যাতে হয় সে বিষয়ে মূল সন্দেহভাজন কাজী আরিফ এবং সুমনা মেহেরুনের স্বামী মাকসুদুর আব্বাস সমান আগ্রহী ছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে মাকসুদুর আব্বাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে পুলিশ কর্তৃক ফাইনাল রিপোর্ট প্রদানের মাধ্যমে মামলাটির পরিসমাপ্তি ঘটেনি। কারন, ক্রিমিনাল বা ফৌজদারী মামলা কখনো তামাদি হয় না।

যে কোন ব্যক্তি, যে কোন সময় এই মামলা নতুন করে রুজ করতে পারবেন এবং আসামীদের শাস্তিসহ ন্যায় বিচার দাবী করতে পারবেন। ফলে সুমনা মেহেরুনের আত্মহত্যার মামলাটি শেষ হয়ে যায় নাই। এই আত্মহত্যার ঘটনার ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা এবং অপরাধীকে (বা অপরাধীদের) বিচারের সমুক্ষীন করতে যা যা করা দরকার বিডিপিসি তা করবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।