অটোবায়োগ্রাফি-০১
......................................
একদিন কবিতা লিখতাম
একদিন কবিতাকে ধরার নেশায় মাঠ আড়াআড়ি
যেতে যেতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত গিয়ে, তারপর সারারাদৱত
অন্ধকার ধরে ধরে লিখেছি, শাদা কাগজে লিখেছি...
আমি তো জানি, কবিতার কালো কালি সেই
অন্ধকার থেকে আসে
আসলে কবিতা লিখতাম, নাকি কবিতার উদ্দেশ্য
যেতে যেতে আম আমাদের বাড়ির পথের ধারা বর্ণনা লিখতাম?
যেই কবিতা এলো, কবির সংসার সাজালো
বাচ্চাকাচ্চা দিল আর সেই আবেশেই গদগদ কবি-
আসলে কি কবি ছিলাম কখনো?
নাকি কবিতার কাছে যাওয়ার জন্য, কবিতাকে কাছে পাওয়ার
জন্য ব্যস্ত ছিলাম?
একদিন, কবিতা আমাকে চিনুক, মনে মনে চাইতাম
কবিতা আমার ডাক নাম জানুক- আমি প্রজাপতিদের
পিসতুতো ভাই
তাই যা লিখেছি তাকে আর কবিতা বলি না
কবিতায় পৌঁছুনোর অভিপ্রায় হতে পারে...
একদিন কবিতার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লাম
একদিন কিংবা সারারাত ঘুমই এলো না
কবিতাকে কাছে থেকে দেখার দিনগুলি কত অন্য অন্য
হয়তো বন্যরকম ছিল
তারপর সামষ্টিক কারণগুলোকে ঢিবি থেকে পাহাড়
মনে হল
কবিতার সঙ্গে সেপারেশন হয়ে গেল
কবিতা বলে গেল- তোমার সঙ্গে আর থাকা যায় না
কেন?
কবিতা বলল, তোমার ভেতর তরুণ কবির বিহঙ্গপনা
উধাও হচ্ছে, তুমি এখন প্রতিষ্ঠানের চাকর, সিস্টেমাইজ...
শুনে আমার ঘোর কেটে যায়, ঘোর চলে আসে
ঘোর ভেঙ্গে যায়, ঘোর দানা বাঁধে, খিদে লাগে
উঠে পড়ি, হাঁটি... আগেই তো বলেছি-
আমার পূর্বপুরুষ ছিল জোসনাখোর
বিচ্ছিন্নতাও সত্য, দূরে দাঁড়িয়ে, মনে মনে ভাবব,
অমর কবিতা, অঞ্জলি লহ মোর...
৩১.০১.২০১০
...................................
জাদুকর
......................................
হতে পারে কিশোর ছিলাম-
তারও আগে নাছোঢ় ছিলাম;
হতে পারে অন্ধ জাদুকরের প্রতি আকৃষ্ট ছিলাম-
একদিন, স্কুল মাঠের সন্ধ্যায়, খোঁড়া ভিখিরির সঙ্গে যুবতী পাগলি
কি করছিল কি করছিল যা করছিল দেখে, বুঝলাম
অসম্ভব সম্ভবত সম্ভব হয়ে ওঠার আগ পর্যন্তই অসম্ভব-
পরদিন স্কুলে যাওয়ার পথেই আমি স্কুলকে এড়িয়ে
আরো দূরের এক ঝিলের ধারের নির্জন কলেজে গিয়ে বসি-
যে আমাকে ডেকে নিয়ে যায়, তার অনেক শক্তি, তার অনেক দাবি
তার নাম ঘোর-
হঠাত খেয়াল করি, স্কুল-কলেজ ঘোরকেই দিয়ে দিছি একুশ বছর...!
হতে পারে বালক ছিলাম
হতে পারে আলপথে খসে যাওয়া কিশোরির নূপুর, ঘুঙুর
ছিলাম মধুপুরের আমবাগানের ভৌতিক দুপুর...
সেই ভূতেরও অনেক ক্ষমতা, সেই ভূতেরও ডাকনাম ঘোর-
হঠাত খেয়াল করি, স্কুলঘর, সেই মাঠ, নির্জন কলেজ
সেই সময়ের অনেক মানুষ, ঘটনাপ্রবাহ, চিঠিপত্র, প্রেম
পৌত্তলিকতা
দৃশ্যত সবই আছে আমার চোখের ভেতর
হঠাত খেয়াল করি, সেই ভূত, ঘোরকেই
কখন যে দিয়ে দিছি অনেক অনেক বছর...
হতে পারে পাখি বা পালক ছিলাম
হঠাৎ খেয়াল করি, আমার কল্পিত ডানায় রোদ বৃষ্টি ধূলোরাই
ভুল করে ৪১ না লিখে লিখে দিচ্ছে ১৪ বছর...
আমার বয়স আমাকে পাহারা দিয়ে
আমাকে গার্ড অব অনার দিয়ে
আমাকেই অন্ধ করে নিয়ে যাচ্ছে জাদুকর
জাদুকরের নাম ঘোর...
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।