সবসময় যুদ্ধের ময়দানে
Click This Link
উপরের লিঙ্কটি একটি BD JOBS এর AD। প্লিজ ভিসিট দা লিঙ্ক। আমি ৩১-৫-২০১০ তারিখে এই জব টিতে এপ্পলাই করি। পরের দিন আমাকে ডাকা হয় ভাইবার জন্য। ভাইবা দিতে গিয়া দেখলাম একটি বিলডিং এর নিচ তালায় তাদের অফিস।
দেখে মনে হল না এটি একটি অফিস, তবে এটি একটি বায়িং হাউস। যাই হোক, ভাইবা দিলাম, সিলেক্ট হলাম, আমাকে ওই দিন ই ট্রেনিং এর জন্য ডাকা হল। দেখলাম আমি সহ আরও ১০ জন ট্রেনিং এর জন্য এসেছে। ট্রেনিং-এ যে কথা গুলো বলা হল তা হচ্ছে, তারা একটা তৈরি পোশাকের ব্র্যান্ড প্রতিস্ঠিত করতে চান সারা বিশ্ব জুড়ে। এর জন্য প্রয়োজন প্রতিটি দেশে একটি করে শো রুম এবং পরিচিতী (মার্কেটিং)।
শো রুম এর বিকল্প হিসেবে থাকবে একটি ওয়েব সাইট (http://www.rawsunworld.com) এবং মার্কেটিং এর জন্য নিয়োগ দেওয়া হয় আমাদের। মার্কেটিং করতে হবে বাসায় বসে অনলাইনে, বেতন ১০,০০০ টাকা।
এখন প্রশ্ন হল বিদেশের মানুষ কেন আমাদের পোশাক কিনবে? আমাদের দেশে একটি পোশাকে খরচ হয় ১.৭৫-১.৮০ ডলার। একই পোশাক বিদেশে বিক্রি হয় ২০-২৫ ডলার, যার ট্যাগ লাগানো হয় আমাদের দেশ থেকেই। যদি ১.৮০ ডলারের পোশাক ২৫ ডলারে বিক্রি হয়, তাহলে বড় অঙ্কের লাভ থাকবে, যা ভাগ করে নিবে ক্রেতা এবং বিক্রেতা (that means, MLM business system)।
তার মানে, যারা পোশাক কিনবে তারও লাভ করবে। নিঃস্বন্দেহে এটি একটি ভাল উদ্যেগ। এগুলো ছিল প্রথম দিনের গল্প।
কিন্তু এর আড়ালে লুকিয়ে আছে তাদের বদ মতলব। আমাদের ইন্টারভিউ এবং ট্রেনিং এ উপস্থিত ছিলেন FBDA Fashion Ltd. এর Managing Director দিলরুবা জাহিদ (cell:01711679845, email: ওয়েবঃ http:/www.fbda-bd.com) এবং Director শোভা রায় (cell:01712567352, 01671164772, email: )।
ইন্টারভিউ এবং ট্রেনিং এ দিলরুবা জাহিদ বসে ছিলেন শো পিচ হিসেবে, তেমন কোন কথা তিনি বলেন নি। তার বয়স হবে ৫০ এর কাছাকাছি, শিক্ষাগত যোগ্যতা জানতে পারিনি। তবে বেশীরভাগ কথা বলেছেন শোভা রায়। কথা প্রসঙ্গে, তার অনেক বাক্তিগত তথ্য জানতে পারি, যেমন তার বাড়ি দিনাজপুর, ২০০৩ সালে সে সম্মান ২য় বর্ষে পড়ত, সে তখন ডেসটিনি করা শুরু করেছিল। সে অধিক বাক পটু হওয়ায় ডেসটিনিতে শক্ত অবস্থান তৈরী করেছিল।
তির কথা মত প্রতিমাসে আয় করত ৫০,০০০ টাকা।
FBDA বায়িং হাউস এর একটি ব্র্যান্ড হচ্ছে RAWSUN যার কোন লিগালিটি নাই (FBDA এর কর্মী সাইফুল কে চার মাস ধরে বেতন দেওয়া হয় না)। যাই হোক ট্রেনিং ২য় দিন আমাদের সামনে তাদের মুখোষ উন্মোচন হয়ে যায়। মিস শোভা আমাদেরকে বলে, তাদের সিস্টেমে মার্কেটিং করে ইনকাম করতে হলে একসাথে ২৫,০০০ টাকার পোষাক কিনে মেম্বারশীপ অর্জন করতে হবে (অনলাইনের নিয়মানুসারে)। এই মেম্বারশীপ টাকা ইনকাম হবে ডেসটিনির নিয়মানুসারে।
অর্থাৎ একজন মেম্বার কে দুজন মেম্বার বানাতে হবে, এভাবে দুজন থেকে চারজন, চারজন থেকে আটজন, আটজন থেকে ষোলজন………………. । যারা প্রথম দিকের মেম্বার তারা বেশী লাভবান হবে। শুধু বাংলাদেশীদের জন্য মেম্বারশীপ কেনার সুযোগ রয়েছে ১০,০০০ টাকায়। আমাদের পরিচিত আত্মিয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব দের মেম্বারশীপ কেনার জন্য কনভেন্স করতে হবে। এভাবে যখন তারা ১০০০ জন মেম্বার পেয়ে যাবে, তখন তাদের একাউন্টে থাকবে এক কোটি টাকা।
যা ইনভেস্ট করে পোষাক তৈরী করবে এবং তিন থেকে চার মাস পর তা ক্রেতাদের ডেলিভারী দেবে। যে পোষাক দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে তার বাজার দর ৪৫০-৫০০ টাকা। অর্থাৎ ৫০০ টাকার পোষাক কিনতে হবে ১০,০০০ টাকায়, আদৌ পোষাক পাওয়া যাবে কিনা নিশ্চিত নয়। আবার বিদেশীরা পোষাক অর্ডার করলে কীভাবে ডেলিভারি দেওয়া হবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। এর মানে দাঁড়ায় অনলাইনে পোষাক কেনাকে কেন্দ্র করে তারা ২য় একটী ডেসটিনি প্রতিস্ঠা করার চেস্টা চালাচ্ছে।
ট্রেনিং এর এক পর্যায়ে আমাদের বলা হয়, তিনটি পোস্ট আছে ১। ম্যানেজার ২। এসিস্টেন্ট ম্যানেজার ৩। মার্কেটিং অফিসার। কে কোন পোস্ট নিতে চান? আমরা পোস্ট সিলেক্ট করি, তারপর বলা হয় আপনাদের একটি পরীক্ষা দিতে হবে পছন্দসই পোস্ট পাবার জন্য।
পরীক্ষা হচ্ছে- লাঞ্চ ব্রেক থাকবে ২.৩০-৪.০০ (যেহেতু ব্যঙ্ক সময় ৪.০০)। এই সময়ের মধ্যে ১নং এর জন্য ৫টি, ২নং এর জন্য ২টি এবং ৩নং এর জন্য একটি মেম্বারশীপ আনতে হবে। অর্থাৎ যথাক্রমে ৫০,০০০ ২০,০০০ ১০,০০০ টাকা করে তাদের দেওয়া ব্যঙ্ক একাউন্টে জমা করতে হবে। বলা হয়, মিথ্যা প্রলোভন (যেমন বিপদে পড়া, এক্সিডেন্ট) দেখিয়ে বন্ধু বান্ধব দের বলতে হবে যে, তারা যেন ১০,০০০ টাকা করে উক্তো ব্যঙ্ক একাউন্টে জমা করে। রাতে বন্ধুদের বোঝাতে হবে rawsun এর বিজেনেস সিস্টেম, তারা যদি মেম্বারশীপ কিনতে রাজি হয় তাহলে তাদের পোষাক দেওয়া হবে, আর যদি রাজি না হয়, তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
****এদের বিরুদ্ধে কী একশন নেওয়া যায়? পরামর্ষ দিন প্লিজ।
মন্তব্যঃ আমাদের সাথে যারা ইন্টারভিউ দিয়েছিল তাদের মধ্যে ২জন ঢাবি মাস্টার্স, ২জন MBA (AIUB), ২জন cse (Daffodil)। বাকীদের কথা জানতে পারিনি। শোভা রায়ের মত একজন লোয়ার এডুকেশনাল কোয়ালিফিকাশনের একটি মেয়ে আমাদের ইন্টারভিউ নেয়, শুধুমাত্র bdjobs এ add দেওয়ার কারনে, হাস্যকর!!! যদিও প্রথম দিকের ওফার বাংলাদেশের জন্য ভাল উদ্যোগ, কিত্তু শোভা রায় এর মত আনস্কিল্ড মেয়ে দ্বারা এটি অর্জন সম্ভব নয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।