আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এই পতাকাগুলো কি তাঁদের চোখে পড়ে না !!



এখন ঢাকাসহ সারাদেশের শহর গ্রামে আর অনেক গাড়ীতে বাংলাদেশের বাতাসে উড়ছে আর্জেন্টিনা বা ব্রাজিলের পতাকা। কালেভদ্রে ইতালী বা জার্মানীর পতাকাও চোখে পড়ে। বিষয়টা নতুন নয়। গত কয়েকটি বিশ্বকাপ থেকে এটা দেখা যাচ্ছে। তবে দিনদিন মাত্রা বাড়ছে।

পত্রিকার পাতা, টিভি পর্দায় বিশ্বকাপ উত্তেজনা ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। খুব শীঘ্রই সেটা সূর্যের উত্তাপের সাথে পাল্লা দিতে পারবে। ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। সারা পৃথিবীর মানুষ যদি একটি খেলা ভালোবাসে সেটা প্রশ্নাতীতভাবে ফুটবল। যে আমেরিকার ফুটবল নিয়ে মাথা ব্যথা ছিলো না সে আমেরিকার ফুটবল দল খুবই শক্তিশালী হয়ে উঠছে।

বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা এখনো ফুটবল। এক সময় এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মানুষ ছিলেন সিনেমার রাজ্জাক, কবরী, ববিতা, শাবানারা আর ফুটবলের সালাউদ্দিন, চুন্নু, নান্নু, এনায়েত, সালাম মুর্শিদী, কায়সার হামিদরা। সে তুলনায় ক্রিকেটের রকিবুল, মিশা, নান্নু, আতাহার, আকরামরা ছিলেন তারকাজগতের ব্রাত্যজন। অথচ এখন সিনেমার সাথে ফুটবলের অবস্থা করুন। এখন আমাদের সবচেয়ে বড় তারকা মাশরাফি, আশরাফুল, সাকিব, রফিক, তামিমরা।

নতুন জুটেছেন টিভি নাটক, গানের তারকারা। এই ফুটবলের জন্য, আবাহনী-মোহামেডান নিয়ে মারামারিতে আশির দশক পর্যন্ত অনেক মানুষও মারা গেছে। সেই মানুষরা আর ফুটবল মাঠে গ্যালারী ভরে হাজির হননা। কারণ এদেশের মানুষ তাদের সব ভালোবাসা নিয়ে ফুটবলের পাশে ছিলেন বছরের পর বছর। সমস্ত সামর্থ্য নিয়ে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন ফুটবলের।

বিনিময়ে ফুটবলাররা দেশকে উপহার দিয়েছেন লজ্জাজনক সব পরাজয়। সাফ ফুটবলে পর্যন্ত আমাদের বলার মতো কোন অর্জন নেই। সবশেষ সাফ গেমসে ভারত তাদের মূল জাতীয় দলও পাঠায়নি। তারপরও ভারতই চ্যাম্পিয়ন। এখনো বাফুফে সবচেয়ে শক্তিশালী সংস্থা।

ক্রিকেটে বিশ্বকাপ খেলার পরও ফুটবলের দাপটে বঙ্গবন্ধু বা এম,এ, আজিজ স্টিডিয়াম থেকে উচ্ছেদ হয়ে গেছে ক্রিকেট। ঢাকার এক প্রান্তে মিরপুর, আরেক প্রান্তে ফতুল্লা আর চট্টগ্রাম থেকে জেলার সমান দূরত্বে সাগরপারের স্টেডিয়ামে সরে যেতে হয়েছে ক্রিকেটকে। ক্রিকেট দর্শককে বাড়তি সময় এবং অর্থব্যয় করতে হয়, আর যাতায়াতের সীমাহীন কষ্ট সইতে হয় ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা দেখাবার জন্য। ফুটবল বসে আছে সব সুবিধা নিয়ে শহরের কেন্দ্রস্থলে। আমাদের যারা ফুটবল খেলেন, ফুটবল চালান তাঁরা কি বাংলাদেশের আকাশে বাতাড়ে পৎপৎ করে ওড়া এইসব পতাকা দেকেন না।

দেখে তাদের লজ্জা হয় না ? আমাদের রক্তে কেনা লালসবুজ পতাকার ঠাঁই নেই সবচেযে জনপ্রিয় খেলার আন্তর্জাতিক কোন আসরে। ক্ষুধা. দারিদ্র আর যুগযুগ ধরে চলা রক্তাক্ত যুদ্ধে পুড়তে থাকা আইভরী কোস্ট জন্ম দিতে পারে একজন বিশ্বখ্যাত দিদিয়ের দ্রগবা বা সোলেমান কালু। দারিদ্রে মলিন ক্যামেরুন বা ঘানা খেলে বিশ্বকাপে। অথচ আমরা নেই। আমরা আর কতো কাল ফুটবলের প্রতি ভালোবাসার জন্য আর্জেন্টিনা, ব্রাজিলের পতাকা ওড়াবো ?


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।