বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ধরে রাখা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এ জন্য শুধু ক্ষমতাসীন দল নয়, বিরোধী দলও দায়ী। দুই দলের মধ্যকার স্বৈরাচারী মনোভাব পরিস্থিতি জটিল করে তুলছে। এ মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এম আতাউর রহমান। শুক্রবার চ্যানেল আইয়ে তৃতীয় মাত্রা টকশোয় অংশ নিয়ে দেশের রাজনীতির বিভিন্ন বিষয়ে মন্তব্য করেন তিনি।
জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় টকশোয় আরও অংশ নেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্ট্রাটেজিকের প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) এম মুনিরুজ্জামান। সঞ্চালকের প্রশ্নের জবাবে এম আতাউর রহমান বলেন, আমার ধারণা ছিল রমজানের মধ্যে দুই দলের একটি বোঝাপড়া হবে। কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতা অত্যন্ত কঠিন। তাই তা হয়নি। বাংলাদেশ এখন একটি সংকট অতিক্রম করছে।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে কয়েকটি সংকট-সংকুল পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। প্রতিটি মোকাবিলায় আমাদের অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানের সংকট মোকাবিলা আরও বেশি কঠিনতর হয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র এবং সরকার আলাদা নয়। রাষ্ট্রের মধ্যে অনেক সংগঠন থাকে।
ধর্মীয়, সামাজিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভূমিকার রয়েছে। সেসব প্রতিষ্ঠানকে আলাদাভাবে দেখা যাবে না। সবকিছুর ওপর রাষ্ট্রই সর্বেসর্বা। আর সংকটকালীন সরকার সব করবে। মানে একটি ভঙ্গুর রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার দিকে এগোচ্ছে বাংলাদেশ।
আতাউর রহমান বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় আবেশ কম। এখানে ধর্মনিরপেক্ষ পরিবেশ আবহমান ধরেই আছে। একে ধরেই রাজনীতি করতে হবে। এখানে ধর্ম আলাদা, অর্থনীতি আলাদা বিষয়টি তা নয়। এখানে সবকিছুর সঙ্গে একটি সামঞ্জস্য থাকতে হবে।
ক্রমান্বয়ে সেই অবস্থা থেকে আমরা সরে যাচ্ছি। নির্বাচনে অংশ নেবে বিরোধী দল- সরকারের এমন প্রচারণা বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমিতির সভাপতি বলেন, এই সম্ভাবনা কম। বাংলাদেশে ক্ষমতা হস্তান্তরই এখন একমাত্র সমাধান নয়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রাখতে হলে আরও কিছু কাজ রয়েছে। বিগত কয়েক সরকারের আমলেই আমরা দেখেছি পার্লামেন্ট পরিচালিত হয়েছে ক্ষমতাসীন দলের ইচ্ছামতো।
একটি নির্বাচন হলেই হবে না। পার্লামেন্ট রাজনীতি ফিরিয়ে আনবে। সরকারের কাছে পার্লামেন্ট নিজেদের। এখানে কোনো রাজনীতি নেই। সরকারের এই প্রচারণার খুব গুরুত্ব নেই।
তিনি বলেন, আমাদের নেতা-নেতৃত্ব জনগণের কাছে কি রোল মডেল। তারা কি রাজনৈতিক মেসেজ দিচ্ছেন। একটি হচ্ছে আমি ক্ষমতা ছাড়ব না। একটি সংবিধান কয়েকটি শব্দ যোগ করে বা বাদ দিয়ে নিজেদের সুবিধা করে নিচ্ছে, এটা কোনো রাজনৈতিক মেসেজ নয়। আবার বিরোধী দল বলেছে নতুন ধারার রাজনীতি আনবে।
জনগণের কাছে তা পরিষ্কার নয়। মানুষকে রাস্তায় নামানো যাচ্ছে না। আতাউর রহমান বলেন, আমাদের জনগণের শক্তি, সৃজনশীলতা আছে। দীর্ঘমেয়াদি অস্বাভাবিকতা মোকাবিলা করার অভিজ্ঞতা আছে। এই পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য মূল নেতৃত্বকে দায়িত্ব নিতে হবে।
কিন্তু মূল নেতৃত্ব জনগণকে ডুবিয়ে দিয়ে যাবে এটাই ভীতির কথা। আমাদের নিজেদের চরিত্র বদলাবে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকবে, এটাই আশা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।