আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চিলেকোঠার বারান্দায় যখন বৃষ্টি নামে

বাস্তবতা ফেরী করে বেড়াচ্ছে আমার সহজ শর্তের সময়গুলোকে

এ মাসের শুরু থেকেই ভাবছি ব্লগের জন্য একটা লেখা লেখবো। অনেক যত্ন করে একটা লেখা। আলসেমি করে ব্লগে লেখালেখি প্রায় ছেড়েই দিয়েছি। অথচ নিয়ম করে প্রায় প্রতিদিনই লগইন হই। র্দীঘদিনের প্রাত্যহিক অভ্যাসটা ভুলতে না পারার নিরন্তর প্রমাণপত্র যেন! রাত্রিতে যখন হেটে হেটে বাসায় ফিরি তখন মাথার ভেতর অনেক অনেক গল্প ঘুরে বেড়ায়।

সিড়ি ভেঙ্গে বাসায় উঠতে উঠতেই গল্পগুলো কোথায় যেন ছুটি নিয়ে বেড়াতে যায়। ফলাফল ব্লগে এই মাসে পোস্ট সংখ্যা শুন্য। অনেকদিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পের চরিত্রটি অপেক্ষায় থাকে। সবকিছু আগের মতো ঠিকঠাক হয়ে যাবে।

পুরনো বন্ধুদের সাথে জমিয়ে আড্ডা হবে। অপেক্ষা আর অপেক্ষা। আমার অবস্থা হয়েছে গল্পের সেই চরিত্রটির মতো। হয়তো লগইন করে অপেক্ষা করি সবকিছু আগের মতো আগের মতো হয়ে যাবে। পুরনো বন্ধুদের সাথে জমিয়ে ব্লগে রাত বিরাতের আড্ডা হবে।

কিন্তু অবধারিতভাবে গল্পের মতোই অপেক্ষা আর অপেক্ষা। মন খারাপ করা কথা রেখে পুরনো একটা লেখা শেয়ার করি। অনেকটা হঠাৎ করে লেখা, কিন্তু আমার কাছে লেখাটি খুবই প্রিয়। নিজের লেখা প্রিয় হয়ে গেলে কি আর করবো! স্বপ্নগুলো তোমার মতো চিলেকোঠার ছোট্ট বারান্দায় পা মুড়ে বসে খোলা আকাশের দিকে তাকাই। এক চিলতে নীল মুহুর্তেই আমায় ছুঁয়ে দিয়ে যায় ।

নীল হওয়া হৃদয়ে নীলপরী হয়ে ভর করে একটি স্বত্তা। অস্তিত্বে ধরা দেয়, স্পর্শ দেয়। ক্রমশ একটি চরিত্র হয়ে উঠে। সেই চরিত্র মায়ার মাদকতা ভুলিয়ে দেয় অনেক জাগতিক আয়োজনকে। বেঁচে থাকার অভিনয় নিয়ে যে জীবন তা মুহুর্তেই আনন্দময় হয়ে উঠে ।

তখনই উপলব্ধি হয় যদি মৃত্যু আলিঙ্গন করে তবে পাওয়া হবে না তোমাকে, তোমার সঙ্গে জাগা হবে না খোলা আকাশের নিচে জ্যোসনাস্নাত রাত। পাশের গজিয়ে উঠা উচু ভবনের এক চিলতে বারান্দা থেকে চোখ চলে যায় আকাশের দিকে। অভিমানে তোমার চলে যাওয়া তোমার জন্য সব ভুলে থাকা জীবন মানে বাঁচার অভিনয় মৃত্যু মানে তোমায় না পাওয়ার ভয় তুমি চরিত্র রং, রূপ বদলে দেয় মনে মনে। মন থেকে মনে, নিউরনে শিহরন জাগিয়ে প্রহর ভাঙে। অপেক্ষা কিংবা প্রতীক্ষার।

কতোকিছুইতো দেখি, কতো রূপ, বর্ণ, গন্ধ। সব কিছুতেই তোমার প্রচ্ছন্ন ছায়া আমায় তাড়িত করে। তোমার মতো আর কোন কিছুকেই ভালো লাগে না। কাচের দেয়ার ভাঙার মতো তোমায় ভাঙি ইচ্ছেমতো আমার কেন ভালো লাগে না কোন কিছু তোমার মতো না দেখা সৌন্দর্য্য যা উপলব্ধির শিয়রে মাথা পেতে দেয়, তা অস্তিত্বের কাছে অপ্রকাশিত। এইসব অপ্রকাশিত বোধগুলো আলোকিত হয়ে তোমাকে চিনিয়ে দেয়, বাতাসের মিহি গন্ধের মতো তোমার গন্ধকে মিশিয়ে দেয়।

তুমিতে-তোমাতে আমার আটপৌরে স্বপ্নগুলোও তোমার মতো হয়ে গেছে। যখন তুমি একা থাকো আগুন জ্বলে আলোর মতো নিজের কাছে লুকিয়ে রাখি স্বপ্নগুলো তোমার মতো অবচেতন সত্ত্বার সাথে কথা হয়, হাসি ঠাট্টা হয়, কথা হয় কাটাকাটি। চেতন সত্ত্বা তখন ঠোট বাকিয়ে বিদ্রুপ করতে চায়। শরতের মেঘের মতো গাঢ় হয়ে উঠা অভিমানগুলোকে তখন ঘুরে বেড়াতে থাকে। ঘুরতে ঘুরতে নীড় খুঁজতে থাকে।

নদীটি তবে ঠাই দেয় শেষে! শুকিয়ে যাওয়া নদীপথ এগিয়ে চলে। চলতে চলতে নাগরিক রাস্তায় ইটপাথরে ঠুকোঠুকি লাগে। পথ বাড়তে বাড়তে বারান্দায় গিয়ে থামে। সেই চিলেকোঠার বারান্দা। বৃষ্টিটা তখনই নামে।

আমার শরীরজুড়ে বৃষ্টি নামে অভিমানের নদীর তীরে শুধু তোমায় বলতে ভালোবাসি আমি বারেবার আসবো ফিরে পুনশ্চ : আনিলার একটি গান আছে ‘স্বপ্নগুলো তোমার মতো’ নামে। গানটি শুনে যে অনুভুতি হলো তা ধরে রাখার প্রয়াস চালালাম। সবারই মনে হয় একটি করে কল্পিত তুমি চরিত্র থাকে। জাগতিক স্বপ্নের অনেকটা অংশজুড়ে সেই তুমি চরিত্রের বসবাস।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।