মঙ্গলবার সকাল থেকে চা শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখেছেন বলে ইউনিয়নের নেতারা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাম ভজন কৈরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কার্যালয় লেবার হাউজ থেকে তাদের তাড়িয়ে দেয়া হয়।
এরপর ২০১১ সালের ১ সেপ্টেম্বর সাধারণ চা শ্রমিকরা মালিকপক্ষের কাছে ২০ দফা দাবি পেশ করে। দীর্ঘদিনেও তা পূরণ হয়নি। মালিকপক্ষ কোনো আলোচনাও করেনি।
“তাই বাধ্য হয়ে দলমত নির্বিশেষে সব চা শ্রমিক এক হয়ে এ কর্মসূচি দিয়েছে। ”
তিনি জানান, ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর সাধারণ চা শ্রমিকরা প্রথমবারের মতো সরাসরি ভোটে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা শ্রীমঙ্গল চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কার্যালয় লেবার হাউজের দায়িত্ব নিয়ে এক বছরের মধ্যে চা শ্রমিকদের মজুরি ৩২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বৃদ্ধি করে ৪৮ টাকা করে। বছরে দুটি উৎসব বোনাস ৫০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১২০০ টাকা করে।
“এরপর নির্বাচনে পরাজিত শক্তি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর চা শ্রমিক ইউনিয়ন জবরদখল করে নেয়।
সেই থেকে চা শ্রমিকদের নিপীড়ন শুরু হয়। ”
রাম ভজন কৈরী দাবি করেন, চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচিত সব প্রতিনিধি এ আন্দোলন কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।
কমলগঞ্জের বাঘাছড়া চা বাগানের সাধারণ সম্পাদক রাখাল গোয়ালা, পাত্রকলা চা বাগানের শ্রমিক মোবারক হোসেন ও আলীনগর চা বাগানের শ্রমিক গণেশ পাত্রও সমর্থন দেয়ার বিষয়টি জানান।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- চা শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয় দখলমুক্ত করা, দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা করা, বাগানে ভিটা উচ্ছেদ আইন বাতিল করে ভূমি অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, চা শ্রমিক সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি পুনরায় চালু করা, চাকরি ক্ষেত্রে ও শিক্ষাগ্রহণ ক্ষেত্রে চা শ্রমিকদের কোটা রাখা।
চা বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশি চা সংসদের মনু-ধলই ভ্যালির সভাপতি পাত্রকলা চা বাগানের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শামছুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আন্দোলনরত চা শ্রমিকরা আগে থেকেই এ কর্মসূচির কথা জানিয়েছে।
কর্মবিরতির ফলে চা শিল্পে বড় ধরনের ক্ষতি হবে বলে আশংকা করছে মালিকপক্ষ।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ১ লাখ ১৫ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে মোট ১৬৩টি চা বাগান রয়েছে যার মধ্যে ৯০টিই মৌলভীবাজারে।
গত বছর দেশে ৬ কোটি ৩৮ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।