সান্ধ্যকালীন কোর্স বাতিল মানে কারো শিক্ষার সুযোগ কেড়ে নেয়া
উদ্বোধনী পর্ব ঃ Click This Link
ছিলে মাটি
নিষিক্ত হওয়ার পর ক্রমাগত জল, হাওয়া, সজিব সবুজ, মিঠে কড়া রোদ আর আকাশের তারা সংখ্যক প্রাণের রসায়নে পুষ্ঠ হলে একদিন বিধাতার ইচ্ছানুসারে ১ম প্রপ্রজ্ঞা প্রশান্ত চিত্তে নেমে এলেন গঙ্গা-যমুনার অববাহিকায়। প্রবাহিত যমুনার(তখন তার নাম যমুনা ছিল কি না আমি জানি না) তল দেশের শক্ত, কালো একটা অংশ চাইলেন ভুমার কাছে। সাথে সাথে তীব্র বাক্যবাণে তাকে বিদ্ধ করে দিল ভূমা, না।
-কেন ?
-তোমার বুকের এক খন্ড মাংস কি তুমি দেবে আমায় ?
-জগদ্বিশ্বরের আদেশ।
-তুমি বলছো।
-আমি মিথ্যেকে ধারণ করি না।
-আমি সত্য যাচাইয়ের দায়িত্ব নেই নি।
সে ফিরে গেল ব্যর্থ চিত্তে।
এল দ্বিতীয় প্রপ্রজ্ঞা, পরমেশ্বরের মহান ইচছাকে স্বাগত জানাও।
-আমার জানামতে, তিনি কারও মুখাপেক্ষী নন।
বরং তুমি কিছু সুর শুনাও।
সে ফিরে গেল বিষন্ন চিত্তে। এল তৃতীয়, নিত্যই তো তোমাকে ভেঙে গড়ি।
-মতামতের তোয়াক্কা না করে।
-না কেন ?
-মত চাইছ বলে।
-মহান সমস্ত’র তুমি একটা অংশ মাত্র।
-ক্ষুদ্রের বৃহৎ চিন্তা অবান্তর।
শেষের জন কাজ শেষে নিঃশব্দে ফিরে যাবার মুখে আর্তের আহ্বানে ফিরে তাকাল, হ্যাঁ, বলো।
-ব্যথা দিলে।
-উদ্দেশ্য ছিল না।
উপায়ও নয়।
-অনুমতি নিলেনা যে ?
-তোমার ও আমার মালিকের অনুমতি ছিল তাই।
-তাই বলে আমাকে ব্যথা দিয়ে তোমার উদ্দেশ্য সাধন অনুচিৎ।
-অপ্রয়োজনে ব্যক্তিক ভালমন্দ বোধ যোগ করে ব্যর্থও হয়েছে।
-এ কি অন্যায় নয় ?
-ন্যায়, অন্যায়ের যিনি মালিক, তার আজ্ঞা পালন অন্যায় নয়।
-আমার যখম ?
-তোমার।
-ক্ষুদ্রের ব্যথাও ব্যথা। কারও জন্য কষ্টদায়ক কাজ অসঙ্গত ও অন্যায়।
-ক্ষুদ্রের ব্যথা ক্ষুদ্রের কাছে বৃহৎ হলেও অসীমের অংশরুপে উপেক্ষার যোগ্য আর তোমার কষ্ট উৎপাদন উদ্দিষ্ট নয়। এমনকি তুমিও না।
-তবে তুমিও না। কেননা তুমি আমি একই বস্তুর উপজাত।
-হ্যাঁ, জাত নই।
--------------০০০০০০০০০--------------------
হলুদ বাত্তি
আকন্ঠ ভিতুদের দৃষ্টিকে আচ্ছন্নকারী রহস্যময় মায়ার পর্দায় একদিন কিছু আলোর খেলা চলে। স্রষ্টার ইচ্ছামাফিক অথবা সকালবেলার সুর্যালোক আর বৃষ্টির কণার কারিকুরি অথবা বিভ্রম পঙ্গপালের মত ছুটে আসে ব্যাধ তারিত হরিণ শাবকেরা।
যেন সত্যি ভয় আর ভক্তি শুধু উপলক্ষেরই অপেক্ষা করে। আর দর্পই ক্ষমতার প্রমাণ না কি ক্ষমতাবান কখনও কখনও হীনমন্যতায় ভোগে ?
তারা ছুটে আসে, গুরু।
ভেঙে পড়ে, উস্তাদ।
তারা হাতজোড় করে, হুজুর।
সে শুধু অবাক হয়।
তারা আকুল হয়, ব্যাকুল, ব্যস্ত, হতাশ, ভীত হয়। সে বিস্মিত হয় কেবল।
আর্তরা রুদ্ধশ্বাসে কেবল হায় হায় করে। সে নির্বাক নিস্তব্ধ।
ভয়ের আতিসহ্যে তারা সকল ক্ষমার মালিকের কাছে, দয়াময়দের দয়াময়ের নিকট মাফ চাইতে ভয় পায়।
সে বিমূঢ়। নিস্পাপ, একনিষ্ঠ তারা। ক্ষমাপ্রার্থীকে ক্ষমাদানে ব্যগ্র, ভক্তের বেদনে ব্যাকুলের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা যখন তাকেই শিখন্ডি মানে। সে বিব্রত। আকাশ বাতাস তারা অনুনয়ে ভরে দেয়, সে অনড়।
তারা অনাবশ্যক তার পাদে পদ্ম। সে বিচলিত। সহসাই সে ফুঁপিয়ে ওঠে। কান্নায় লজ্জা, শঙ্কা, কষ্ট, দ্বিধা ? কি জানি। সে কাঁদে, দয়াময়, ক্ষমা করো।
ক্ষমা কর নাথ হে, দিবস ও রাত্রীভাগের। আকুল তার কান্নায় নিরব দর্শক-সমবেত ভীত প্রাণ, আকাশ তারকারাজি এবং তিনি। তিনিও কি ?
ক্ষমা কর নাথ-যদি ব্যর্থ হই। ক্ষমা কর যদি হই তোমার একক অধিকারের নৈবেদ্য, অর্ঘ্য, আশ্রয়ের, প্রার্থনার ব্রোকার। ক্ষমা কর যদি ভুল করে তোমার মাশুক আর তোমার মাঝে দেয়াল হয়ে যাই।
তোমার ও তোমার প্রিয়জনদের মধ্যকার এমন কোন মাধ্যম যদি হয়ে যাই যা তোমাদের প্রকাশিত অনুভুতির পরমানুর কণা পরিমাণ বিচ্যুতির নির্দেশ করে কিংবা ততোধিক যা কিছু তোমার অপছন্দ, বিরুপ মনে হয়। তবে ক্ষমা কর আমায়। ক্ষমা কর যদি আমার ভিতরে বয়ে যাওয়া অসংস্কৃত কোন আচরণ তোমার, তোমার প্রিয়জনদের মনোকষ্টের কারণ হয়। তোমার ও তোমার দয়াপ্রাপ্তদের মাঝে কোন মাধ্যম, প্রতিবন্ধক বা মডিফায়ার করোনা আমায়।
দুই হাত তুলেছি মালিক আমার, যদি নাও তুলি; নিদ্রায়, জাগরণে, চিন্তায়, কর্মে তোমারে ভজন করি।
যদি নাও ভজি; তোমারই আনুগত্য করি, যদি নাও করি। শুধু তোমার কাছেই প্রত্যাশা করি-ক্ষমার, দয়ার, আশ্রয়ের। যদি অভিমানে থাকি অধোমুখ, এখন যখন ইতস্তত তোমার অগণিত ইচ্ছেপূরণ প্রতিরুপ এবং তুমি ব্যতিত আর সকলের উৎস তোমার প্রতিবিম্ব বন্ধু জন-সাধারণ ভজিছে তোমায় আর তখন-যখন তুমি ছিলে একা, অন্ধকার। তুমি নিত্য, তুমি প্রভু। তুমি যা দিয়েছ আপন ইচ্ছানুসারে, তাইই পেয়েছি।
। চুড়ান্ত তাই, যা তুমি ইচ্ছা কর। তবু আমার মালিক, তোমারও আছে কিছু চাহিবার, আমারও, আমাদেরও। তুমি যা বলেছ সখা, তাতে আমি ভয় পাই, সঙ্গীরাও। কিন্তু কেন, আমার মালিক ? এ প্রদর্শন ভয়ের ? তবে কি তোমারও দ্বিধা আছে কোন ? অজ্ঞের যজ্ঞে যদি বা কোন ভুল হয়ে যায়, দেবে কী শাস্তি মালিক আমার ? যখন তুমি দয়া, মায়া,ক্ষমার, আশ্রয়ের আধার।
আমরা তো কেবল তোমার আদেশের অপেক্ষা করি। তোমার হুকুমত পালনই আমাদের অস্তিত্বের প্রমাণক। তবু ভয় কেন প্রাসঙ্গিক ?
তোমার রাজ্যের সকল প্রতিবিন্দু, স্পেস আমার, আমাদের নিকট একই। যখন তোমার নিকষ অন্ধকার হতে উৎপন্ন আলোক উজ্জ্বল, আগুন আগ্নেয়, জল জলীয়, বাতাস বাস্পীয়, মৃত্তিকা নরম, পাথর কঠিন, বহুবর্ণ বহুরুপের একরুপ আছি তোমার অংশ তখন আমার বাগানের ফুল কিংবা পথের পাথর হওয়ায় কিইবা আসে যায় ? নিকটই বা কোথায়, দূরই বা কিভাবে ?
তোমার বার্তা আমি পেয়েছি আমার প্রভু। তাই হয়তো এই-ই শেষ।
তাই কায়মনোবাক্যে নৈবেদ্য আমি প্রভু চরণে তোমার। যদি এমনি ইচ্ছে কর যার পূর্বাভাস তুমি দিয়েছো। তো আমাকে ধৈর্য দিও। আর শক্তিও। যেন ভালবাসার আঘাত সইতে পারি অম্লান বদনে।
জানি মা সকলের নয় তাই এত নরকের বিস্তার। স্বর্গের সুখ কিংবা নরকের দূঃখে ভীত আমি নই শুধু তোমার সন্তুষ্টিই একমাত্র প্রার্থনা আমার। অনন্ত নরক রাত কাঁধে নিব প্রশান্ত হৃদয়, যদি জানি তুমি রাজি আছো। দুই হাত তুলেছি মালিক। আমি।
আমরা। যার হাত তুমি পছন্দ করো যেরুপে।
...............চলবে..............
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।