গুণীজন
দাদা সাহিত্যিক সৈয়দ এমদাদ আলী আর নানা যদি কবি গোলাম মোস্তফা হন তাহলে তাঁদের নাতিটির কবি-সাহিত্যিক হওয়া অস্বাভাবিক নয়৷ ছেলেটির মধ্যে সেরকম সম্ভাবনাও দেখছিলেন তাঁর চারপাশের মানুষজন৷ ভগ্নস্বাস্থ্যের ছেলেটি ছয়- সাত বছর বয়সেই যেন নিজস্ব একটা জগত্ গড়ে তুলেছিল৷ যে বয়সে স্কুলের বন্ধুদের সাথে দুরনত্মপনায় মেতে থাকার কথা সে বয়সেই ছেলেটি প্রয়োজন ছাড়া কথা বলে না পরিবারে অথবা বাইরে৷ মা ধরে নেন ছেলেটি নানার মতোই বিখ্যাত কবি হবে৷ আর ইতিহাসের শিক্ষক বাবা মনে মনে স্বপ্ন দেখেন ছেলেটি একদিন স্থপতি হবে৷ বাবা তাঁর সেই স্বপ্ন ছেলেটির মধ্যে সংক্রমিত করতে শুরু করেন নানা ভাবে৷ আর সেই ছেলেটিও বাবার সেই স্বপ্ন পূরণ করেছিল৷ বাবার স্বপ্ন পূরণ করা সেদিনের সেই স্বল্পভাষী ছেলেটি দেশের বিখ্যাত স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেন৷ বাংলাদেশের মানুষের কাছে যাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয় জাতীয় স্মৃতিসৌধের স্থপতি হিসাবে৷
১৯৬৫ সাল৷ ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ চলছে৷ সদ্য কৈশোরে পা রাখা (বারো-তোরো বছর) ছিপছিপে গড়নের ছেলেটি ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়৷ হাঁটতে তাঁর ভাল লাগে৷ ফরিদপুর জেলা স্কুল ছুটি হয়ে গেলে সহজ ও প্রচলিত পথে বাসায় না ফিরে পড়ন্ত বিকেলের রোদ অথবা ছায়া পড়া রাস্তায় ঘুরে ঘুরে বাসায় ফেরে৷ রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে শোনে যুদ্ধের কথা৷ ছেলেটি সম্প্রতি জানতে শুরু করেছে যুদ্ধের ভয়াবহতা৷ দেশে দেশে দ্বন্দ্ব-বিবাদ হয়৷ এই দ্বন্দ্ব পরে সংঘর্ষে রূপ নেয় ৷ গুলি হয় , বোমা ফাটে, মানুষ মরে৷ বাচ্চা- বুড়ো, নারী-পুরুষ কেউ রেহায় পায় না ৷ যুদ্ধের ভাবনা ছেলেটিকে ছাড়ে না৷ বাসায় যতক্ষণ থাকে চুপ করে থাকে৷ কারো সাথে প্রয়োজন ছাড়া কথা বলে না৷ রাতে পড়ার টেবিলে বসে লুকিয়ে লুকিয়ে যুদ্ধের ছবি আঁকে৷ কিশোরের কল্পনায় যুদ্ধের ভয়াবহতা যতটুকু ধরা পরে ততটুকুই ফুটে ওঠে তাঁর আঁকা ছবিগুলোতে৷ কাউকে না দেখিয়ে বইয়ের পৃষ্ঠার ভাঁজে লুকিয়ে রাখে সেই ছবিগুলো ৷ বাবা-মায়ের কিছুটা দুঃচিন্তা হতো দুই ভাই এক বোনের সংসারে বড় ছেলেটি কেন এত চাপা স্বভাবের৷ বাবা, মা কি সেদিন জানতেন, সাভার স্মৃতিসৌধের দিকে তাকিয়ে তাঁদের এই চাপা স্বভাবের ছেলেটিকেই বাংলাদেশের মানুষ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে একদিন?
বাকী অংশ দেখুন-- http://www.gunijan.org.bd
বিপ্লবীদের জীবনী জানতে দেখুন http://www.biplobiderkotha.com
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।