আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক বখাটের কারণে তিন বোনের পড়া বন্ধ!



কিশোরগঞ্জের ভৈরব রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজের বিবিএস (ব্যাচেলর অব বিজনেস স্ট্যাডিস) প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীর কলেজে যাওয়া হচ্ছে না। তাঁর ছোট দুই বোনেরও বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ। চাঁদাবাজির মামলায় তাঁদের বাবা কারাগারে। এক বখাটের রোষানলে পড়ে নরসিংদীর পলাশ উপজেলা সদরের বাজার এলাকার এই পরিবারে বিপর্যয় নেমে এসেছে। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানায়, তাদের এলাকার বখাটে সাদেকুল ইসলাম (২৫) প্রায়ই ওই কলেজছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করত, মুঠোফোনে অশ্লীল কথা বলত এবং বিয়ের প্রস্তাব দিত।

অভিভাবকেরা বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানান। এতে ক্ষুব্ধ হন সাদেকুল। গত ২৯ মার্চ ওই ছাত্রী কলেজে যাওয়ার সময় সাদেকুলের নেতৃত্বে ৮-১০ জন যুবক তাঁকে অপহরণের চেষ্টা চালায়। এ সময় এলাকাবাসী সাদেকুলকে ধরে ফেলে। সাদেকুল এ সময় ওই ছাত্রীকে তাঁর স্ত্রী বলে দাবি করেন।

কিন্তু এর প্রতিবাদ জানান ওই ছাত্রী। এলাকাবাসী সাদেকুলকে পুলিশের কাছে তুলে দেয়। চার দিন পর পুলিশের কাছে বিয়ের একটি হলফনামা উপস্থাপন করেন সাদেকুল। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হয় হলফনামায় ওই ছাত্রীর জাল স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে। পরে পুলিশ প্রতারণা ও হুমকির মামলায় সাদেকুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে সাদেকুল আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আসেন। এরপর বখাটে সাদেকুল ওই ছাত্রীর পরিবারকে মামলা এবং তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিতে থাকে। এ অবস্থায় ওই ছাত্রীর বাবা ৮ এপ্রিল নরসিংদীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে একটি অপহরণ চেষ্টার মামলা করেন। ২০ এপ্রিল সাদেকুলের বাবা নুরুল ইসলাম নরসিংদীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে ওই ছাত্রীর বাবাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করেন। মামলায় ২৬ এপ্রিল থেকে ওই ছাত্রীর বাবা কারাগারে।

গত সোমবার সকালে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গেলে তাঁর মা বলেন, বখাটে সাদেকুল আমার পরিবারের সুখ কেড়ে নিয়েছে। প্রতারণার মাধ্যমে মেয়ের জীবন নষ্ট করতে চাইছে। ব্যর্থ হওয়ায় মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দিয়ে আমার স্বামীকে জেলে পাঠিয়েছে। আমাদের নানা হুমকি দিচ্ছে। এ অবস্থায় মেয়ের কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিতে হয়েছে।

একই কারণে আমার অন্য দুই মেয়েকে স্কুলে পাঠানোর সাহস পাচ্ছি না। কলেজছাত্রীটি বলেন, ‘বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ঘোষণা দিয়ে সে (সাদেকুল) আমার জীবন নষ্ট করতে চাইছে। ’ কথা বলার জন্য এলাকায় গিয়ে সাদেকুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে এক ব্যক্তি নিজেকে সাদেকুলের বন্ধু সুমন পরিচয় দিয়ে বলেন, ওই ছাত্রী ও সাদেকুল একে অপরকে ভালোবাসতেন। তাঁরা গোপনে বিয়ে করেছে।

পরিবারের চাপের মুখে এখন ওই ছাত্রী বিয়ের কথা অস্বীকার করছেন। পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান খান বলেন, সাদেকুলের দেওয়া বিয়ের কাগজপত্র পরীক্ষার জন্য পুলিশের অপরাধ দমন শাখায় (সিআইডি) পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদ হাসান বলেন, মেয়েটির কাছ থেকে পুরো ঘটনা শুনেছি। তাঁর জাল স্বাক্ষর ব্যবহার করে বখাটে সাদেকুল প্রতারণা করতে চেয়েছিল।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।