বড়ই আছানক....
আলোচ্য সমস্যাটি নতুন কিছু নয়, তবে বর্তমানে এর প্রকোপ চরম মাত্রায় বৃদ্ধি ও চলমান আইন শৃঙ্খলার অবনতি, ইভটিজিং, ছিনতাই ইত্যাদির সাথে গভীর সম্পর্ক থাকায় আমার এই পোষ্টের অবতারণা।
এলাকায় এলাকায় স্থানীয় কিশোরদের গ্রুপ থাকবে এটা খুব স্বাবাভিক। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এর বাইরেও বেশ কিছু বিষয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন কিশোররা নিজেদের মধ্যে বিশেষ গ্যাং তৈরি করছে এবং বিভিন্ন অপকর্মের সাথে হরহামেশাই যুক্ত হচ্ছে। এসব গ্রুপে দু'একজন লিডারও বিদ্যমান।
অনান্য গ্রুপের সাথে ঝামেলা তৈরি বা মারামারি করতে এরা যে কোনো বিষয় বেছে নেয় এবং বিষয় গুলো খুবই নগন্য। মারামারিতে এরা লাঠি, হকিস্টিক, ছুরি, চাপাতি ইত্যাদি ব্যবহার করে। বড় ধরণের হানাহানি না করলেও তারা প্রতিপক্ষের সাথে দু'একটা ছুরি চাপাতির পোচ বিনিময় করে। পরবর্তীতে অপরপক্ষ এই পক্ষের কাউকে একা পেলে তাকে ১০-১২ টা সেলাইয়ের জন্য হাসপাতালে যেতে হয়। তবে যে যত কোপ খাবে সে তত পপুলার আর বড়ভাই হওয়ার জন্য উপযুক্ত হবে।
বড়ভাই নামক বস্তুটি এখানে আরেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রত্যেক গ্রুপ নিদিষ্ট বড়ভাইয়ের নিয়ন্ত্রনে থাকে। যে কোন ক্যাচাল বা মারামারির চূড়ান্ত সমাধান বড় ভাইদের মাধ্যমে হয়ে থাকে। এ বিচার গুলো থানা পর্যন্ত পৌছায় না। আর কিশোর গ্রুপের এইসব বড়ভাইয়েরা স্থানীয় পাতি নেতাদের চামচা।
তারা কিশোরদের চা-বিস্কুট আর ছুরি চাপাতির যোগানদাতা।
ঝগড়া বা ক্যাচাল বাজানোর জন্য তারা নগন্য বিষয় ব্যবহার করে কিংবা ন গন্য বিষয়ে তারা ক্যচাল তৈরী করে। ক্লাসে সিট নিয়ে ঝগড়ায় আমি ২৫ কিমি দুর থেকে ৫০-৬০ জনকে নিয়ে আসতে দেখেছি (সবার কাছেই কোননা কোন জিনিস ছিল)। খেলা দেখার সময় জোরে চিৎকার দেওয়া নিয়ে ৫-৬ জনকে হাসপাতালে যেতে দেখেছি। আর স্কুল নিয়ে তর্ক করতে গিয়ে চট্টগ্রামে ৯ম শ্রেণীর ছাত্র খুন হওয়ার কথা পত্রিকায় পড়েছি।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে কেন কিশোররা এরকম করছে। উত্তর কঠিন কিছু নয়- ত্রুটিপূর্ণ মানসিক বিকাশ, নিজেকে বড় ভাবার প্রবল ইচ্ছা, পারিবারিক শিক্ষার অভাব ইত্যাদি। অনেকে আবার বিষয়টিকে বিনোদনের দৃষ্টিতেও দেখে! এই কিশোর গ্রুপ গুলোতে যেমনি রয়েছে ভাল পরিবারের সন্তান তেমনি রয়েছে বস্তির ভবঘূরে। অনেক ভাল পরিবার ধ্বংশ হয়ে যাচ্ছে এই কিশোর অপরাধের কারণে। ভাল এক ছাত্র বখে যাওয়ার পর আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম সে ভবিষ্যৎ এ কী করবে..... নিলিপ্ত জবাব মাদক ব্যবসা!!!!
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল তারা এখন নিজেদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র রাখছে।
প্রশাসন বিষয়টি জানলেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারছেনা কারণ রাজনৈতিক সহিংসতায় কিশোরদের ব্যাপক মাত্রায় ব্যবহার করা হয়।
কিশোরদেরকে পরিপূর্ণ ধর্মীয় ও সামাজিক শিক্ষা, নিজেকে ব্যস্ত রাখার জন্য সৃজনশীল কাজ ইত্যাদির ব্যবস্থা করতে পারলে এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
দেশের ভবিষ্যৎ যুবশক্তি তথা জাতীয় শক্তিকে রক্ষা করতে এখনই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে নতুবা আমাদের সামনে কঠিন বাস্তবতা অপেক্ষা করছে......
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।