২০০১ সালে প্রথমবারের মত বাংলাদেশের সবক'টি বোর্ডে জিপিএ পদ্ধতিতে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সেবার সারাদেশে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৭৬ জন। গত ১৫ই মে সারাদেশে ২০১০-র এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশ করা হয়। এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৮২,৯০০ জন। আর গড় পাশের হার ছিল ৭৯.৯৮ ভাগ।
এগুলো তো গেল সব তত্ত্বীয় কথাবার্তা। এবার একটু সহজ সমীকরণ মেলানোর বৃথা চেষ্টা করি, আশা করি পাঠকবৃন্দ পারলে আমায় সাহায্য করবেন।
ভালোটা তো সবাই চায় তো, সে জন্য সবাই চায় নিজের পছন্দ মত কলেজে ভর্তি হতে। ব্যানবেইস জানাচ্ছে, দেশে ভালো মানসম্পন্ন কলেজগুলোতে একাদশ শ্রেণীতে মোট আসন রয়েছে ২০ হাজার। অথচ চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় শুধু জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাই ৮২ হাজার ৯০০।
শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে, ২৫টি কলেজে ডাবল শিফট খুলে ও আসন বাড়িয়ে যদি দ্বিগুণসংখ্যক (৫০ হাজার) জিপিএ-৫ পাওয়া ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হয় তারপরও আরও প্রায় ৩৩ হাজার জিপিএ-৫ পাওয়া ছাত্রছাত্রী ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। তাছাড়া জিপিএ-৫ না পাওয়া অন্যান্য শিক্ষার্থীরা তাহলে কী করবে সে ব্যাপারে সরকার আদৌও কিছু ভেবেছে কী না তাও ভেবে দেখবার বিষয়।
পাশাপাশি এ বছর জিপিএ-৫ পাওয়া প্রায় ৮৩ হাজার ছেলেমেয়েকে তাদের পছন্দের প্রতিষ্ঠানে বেশি করে ভর্তি হওয়ার সুযোগ করে দিতে রাজধানীর নামিদামি ২৫টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে ডাবল শিফট চালু করতে যাচ্ছে সরকার। অধ্যক্ষদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পরই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গত বছরও ২০টি কলেজে ডাবল শিফট চালু করা হয়েছিল।
ভালো কলেজগুলোতে আসন বৃদ্ধি ও প্রয়োজনে ডাবল শিফট চালু করা সমস্যার যে সাময়িক সমাধান তো বোধ করি সরকার কখনও ভেবে দেখে নি। তাই যারা তাদের পছন্দমত কলেজে ভর্তি হতে পারবে না তারা হয়ত বাধ্য হয়েই বিভিন্ন মানহীন কলেজে ভর্তি হতে বাধ্য হবে। তাছাড়া ভর্তি ফি এবং পড়াশোনা আনুষাঙ্গিক খরচও যথাসম্ভব না কমালে এই দূর্মূল্যের বাজারে সবার না হলেও কিছু লোকের যে নাভিশ্বাস উঠবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। তাই আগামীতে তারা এ ভালো ফল ধরে রাখতে অসমর্থ হলেও বিস্মিত হবার কোন কারণ দেখি না।
তাই সরকারকে এই কয়েক লাখ শিক্ষার্থীর কলেজে ভর্তির সমস্যা আশু সমাধান করতে হবে।
পাশাপাশি ভবিষ্যতে কিভাবে এই সমস্যার সমাধান কিংবা কতটা কম করা যায়, তার জন্য সরকারকে এখন থেকেই ভাবতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।