চাই
আরও কিছু কথা চাই
দর্শন আর রাজনীতি ফেলে
রবীন্দ্র আর বজ্রলাল ভুলে
নতুন কথায় রাশভারি হোক
মোদের পাতানো ভাব ।
আরও গান গেয়ে যাই
দেবগিরি আর হিন্দোল রাগে
মন্ত্রমুগ্ধ সুরট ও কাফীতে
মন্দিরা আর তবলার তালে
মালসীর অনুভব ।
আরও কিছু দীপ চাই
রৌদ্র হাসিতে লুকানো অধরে
অমাবস্যার ঘনবন জুড়ে
আঁধারে সাজানো জোনাকীর চুড়ি
প্রদীপের উৎসব ।
কবিতার মালা চাই
ম্যাজম্যাজে কোন শীতের সকালে
মৌতাত ভাঙা কবির আলাপে
তুখর চোখেতে দেখে নিতে চাই
মন্দ্র সে ভৈরব ।
দোটানায়
শতাব্দী পরে শেষ হতে চলেছে
আমার প্রসনের উপাখ্যান
বিষধর ময়ালের ছোবলে
নীলকণ্ঠ দেবী সেজেছি তাই ;
অভুক্ত ক্ষীনকায় অরাতির বুকে
আমি শৈলের মত শক্ত
মুক্তির অপেক্ষায় আরও কিছুক্ষন
বাগবিন্যাসে উন্মত্ত হব তারপর
তবু কিছু রয়ে যায় অজানা
কি জানি কি জানি না
এই খেয়ালের আড়ালেই
লুকিয়ে থাকে রক্তপিপাসু কুশ্রী দানবী
যার কাষ্ঠল হাসিতে শুধুই খুনের নেশা
কারও ভানুমতি আর ছোঁবে না তাকে
মাকালের মত মুখ দেখে
হৃদয় আর হবে না সাতসতের
কোন তালকানার অনাদরেই
দেবে না ধরা বাহাত্তরে
পাইকারী দরে বিক্রি হবে না
তার মৃন্ময় অনুভূতি
তবু কেন চোখদুটো
হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত হয় বারবার
বাতাসের সুরে খুঁজে ফেরে
ভীমপলশ্রীর মূর্ছনা
এ কোন্ দৈতসত্ত্বার আর্তনাদ ?
নাকি মানুষ মাত্রই বহুরূপী ?
তবে কি নিজেই ছলনাময়ী হৃদয়তন্ত্রী
নাকি কপট কোন স্বস্তা অঙ্গনা
নিজের খোঁজে হন্নে হয়েছি আজ
চক্রাবদ্ধ সমুদ্র দোটানায়...
বৃষ্টিতে তুই
আকাশপানে ছুটে এল আইবুড়ো এক মেঘের দল
আমার বনে মনের কোনে পুষ্প ফোটায় তাদের জল
ক্লান্ত বাড়ির আঙিনাটাও রৌদ্রদগ্ধ ম্লান বিরান
শাকপাতা আর লতাগুল্মে ভরবে আমার এই উঠান
লাউয়ের চারা কিনব এবার,বুনব মোদের ঐ মাচানে
কদম শাখাও বারছে বারুক প্রাঙ্গনের ঐ ছোট্ট কোনে
বর্ষা এবার ঝরল মায়ের মেহদী রাঙা হাতের পর
এঁদো ডোবায় কচুরিপানায় টাপুর টুপুর ঝরছে ঝর
ভিজে মাটির ঘ্রান টেনে নেয়, ভিজব বলেই আকুল মন
ডাকছে আমায় শীতল হাওয়ায় পাশের বাড়ির কুন্দবন
ক্লান্তি আমার হৃদয় পাড়ে জমিয়েছিল নোনা জল
বৃষ্টি মাথায় কিংবা ছাতায় সেদিন ভোলার এই তো ছল
আজ যদি পাই তার দুটো চোখ বলব তারে মন খুলে,
''আয় ছুটে আয় সুখের সনে মিতকনেদের রাশ ভুলে
তোর জন্য রেখেছি মোর হৃদয় মাঝে বদ্ধ ঘর
সেথায় তুই বৃষ্টি হয়ে মিয়ান সুরে এবার ঝর
চোখের কোলে অঝর শ্রাবন ঝরিয়েছিলি সেবার তুই
তারই জলে আঁধার রাতে ঝর্ণা হয়ে আজও বই
বৃষ্টি আমায় স্বপ্ন দেখায় নীল সীমানায় দিগন্তের
মেঘের কোলে ঘর বাঁধব আলোক কুটির যুগান্তের
তোর দুর্দম গানের সুরে রাগ রাগিনী হারাই আজ
মেঘের মতন তোর চোখেতেও দেখেছিলাম স্রোতের সাজ
স্কুলবাসে যাই ছুটিয়ে আমি, পথের পানে দাঁড়িয়ে তুই
তোর হাতে কৃষ্ণচূড়া আমার হাতে রঙিন বই
সব জেনেছি সব বুঝেছি, তবুও রুদ্ধ মনের দার
শ্রাবনধারায় বুঝতে পারি কোথায় নিবিড় অর্থ তার
আজ দেখে যা এই আমাতে ঝরছে তোরই সুরের বান
তোর হাসিতে অশ্রু নেভাই শ্রাবন জলে মায়ার টান ।''
পাগলের নেশা
একদা এ নগরীর অচেনা উন্মাদনার অবশেষ
খাপ হতে ছাড়া পেয়ে ছুটে এল অগোছালো মস্তিষ্কে
সেরেব্রালে ভিড় করা আদিম অসভ্যতার উল্লাস
বৃদ্ধাঙ্গুলি ত্যাগেই খুলে যায় মানব মুখোশ
- আমি আর প্রাইমেট নই !
গণে নানা তন্ত্র আরোপ দেখিয়ে চলা
জরাজীর্ণ মুখোশের ছায়া মাড়িয়ে
হাতদুটো মাটির স্পর্শে খুঁজে পায় বুনো স্বাদ
প্রতিটি স্নায়ুতে তখন অরন্য
আদি হতে আরম্ভের আহবান
নিজের অজান্তেই শপে চলে
- রসাতলে যাক সব রাজা প্রজা দাস অনুদাস
তৃষিত হৃদয় ভাঙে বহুদিনের অনাদ্রতায়
সহস্র বছর ধরে জলধারা দেখে যায় নির্লজ্জ সমুদ্রদূষন
তাই দূষিত গোলকটিকে মদ্য তরলে রূপান্তরের নেশায়
ছুটে যায় পৃথিবী্র রাজকোষে সঞ্চিত পেল্লাই বরফের চাকে
দেহের উন্মত্ত উষ্ণতায় গলিয়ে দেয় তাদের নীরবতা
বহু বর্ষের পরে নিষ্কৃতি পেয়ে গড়িয়ে আসে তারা
ক্ষুধিত শকুনের বেগে
ছুটে চলে নোনাজল ধূসর সভ্যতার বুক চিরে
অবশেষে ধরা দেয় নীল কালো ব্রহ্মাণ্ড সুধা
ভিজে ওঠে গোলকপ্রাচীরের আস্তাকুড়
চড়ে যায় পাগলের নেশা ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।