ভাতের মজা কিছুতেই পাই না।
আম্মাকে ডাক্তার দেখাতে হবে তাই ফার্মগেট একটা আবাসিক হোটেলে উঠলাম। প্রায়ই সেখানে উঠা হয়। বয় বেয়ারারা ভালই চেনে। কারন কাজ করিয়ে টিপস দিতে আমাদের কার্পন্য নেই।
একবার ডাক্তার টেস্ট দিয়ে তার রিপোর্ট দেখিয়ে তারপর বাড়ি যেতে বললেন। তাই আম্মাকে তিন চারদিন থাকতে হল। একদিন আম্মা একা একা হোটেলে, আমি ক্লাস করতে ভার্সিটি গেছি আর ভাইয়া গেছে তার কাজে। আম্মার একা একা ভাল লাগছে না তাই আমাকে ফোন দিলেন তাড়াতাড়ি চলে যেতে। দুপুরে একসাথে খাবার খাবেন।
আমি স্যারকে বলে হাজিরা দিয়ে ক্লাস থেকে বেরিয়ে পড়লাম। বারোটার সময় গিয়ে হোটেলে পৌছলাম। প্রচন্ড গরম লাগছিল তাই নিচ থেকে দুইটা মোগলাই আর একটা সেভেন আপ নিয়ে লিফটে করে রূমে গিয়ে হাজির হলাম। মোগলাই দেখে আম্মা দূর, এসব কি আনসছ? আর কিছু পাসনি? আমি বললাম আচ্ছা তাহলে আপনাকে আজ নতুন একটা আইটেম খাওয়াব।
আমার রূমমেটের কাছে প্রায়ই গল্প শুনি ওর বান্ধবীকে নিয়ে মিরপুরের প্রিন্সে নাকি ফালুদা খেতে যায়।
ফালুদা মনে হয় ওদের কমন খাদ্য আইটেম। যেদিনই শুনি প্রিন্সে খেতে গেছিল সেদিন জিজ্ঞেস করলেই খাদ্য আইটেমে ফালুদা থাকবেই থাকবে!! ২০০৪ সালে একবার মতিঝিলের বাংলালিঙ্ক কাস্টমার কেয়ারে এক বড় ভাইয়ের কাছে বেড়াতে গিয়েছিলাম তখন উনার বদৌলতে হীরাঝিলে ফালুদা খেয়েছিলাম। তখন নামটা জানতে পারিনি। রূমমেটের ফালুদা খাওয়ার গল্প শুনে শুনে মনে প্রতিজ্ঞা করে বসলাম সুযোগ পেলে ফালুদাকে খেয়েই ছাড়ব। সত্যজিত রায় দুঃখ পেলে আমার কিছুই করার নেই।
হোটেলের নিচতলায় খাবারের ব্যবস্থা। দুপুরের খাবারের অর্ডার দিয়ে আমি একবাটি ঠান্ডা দই খেলাম। পার্সেল রেডি করে আমাকে বলল স্যার পার্সেল রেডি। আমি গিয়ে বিল মিটালাম। চলে আসার আগ মুহুর্তে জিজ্ঞেস করলাম ভাই, আপনাদের এইখানে কি ফালুদা আছে? উত্তর দিল হ্যাঁ আছে।
আমি বললাম আমাকে এক বোতল ফালুদা দেন!! কাউন্টারের লোকটা ভাল করে আমার উপর নিচ দেখল। দেখে চুপ করে থাকল। অন্যদিকে মনযোগ দিয়ে দিল। আমি আবার বললাম আপনাদের এখানে কি বোতল নেই। না থাকলে আমাদের রূমে বয়কে পাঠিয়ে কয়েকটা বোতল আনিয়ে নেন।
বয়রাও সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল। কিন্তু কাউন্টারওয়ালার কোন সাড়া শব্দ নেই। রাগ করে উপরে চলে আসলাম। কিছু দূর আসতেই পেছনে হাসির রোল শুনলাম। হা হা হা হা হা হা হা হা হা
আম্মাকে ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দিয়ে মেসে ফিরে এসে রূমমেটের কাছে ‘এক বোতল ফালুদা’ র গল্প বলতেই ও হাসতে হাসতে মাটিতে গড়াগড়ি খেতে লাগল।
হাসি শেষে আমাকে বুঝিয়ে বলল ফালুদা জিনিসটা আসলে কি। আমি তখন ভাবলাম কাউন্টারের লোকটা আমার কাপড় চোপড়ের দিকে তাকিয়ে তাহলে কি এটাই ভাবছিল-“কাপড় চোপড় গুলো ভাড়া নিয়ে আসেনি তো!!!!!!!!!”
হাহাহাহাহাহাহাহাহাহ......
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।