আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হায় রে মেডিক্যাল বানিজ্য!!

দেশের সম্পদ দেশেই রাখুন

রোগীকে ভুল চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগ এনে স্বজনেরা গণমাধ্যমের কর্মীদের খবর দেওয়ায় তাঁদের মারধর করে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা আটকে রাখেন নিরাপত্তাকর্মীরা। গতকাল রোববার রাজধানীর ধানমন্ডিতে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ ও গণমাধ্যমের কর্মীরা রোগীর তিন স্বজনকে হাসপাতালটির গ্যারেজ থেকে উদ্ধার করেন। জানা যায়, ২৪ এপ্রিল পেটে ব্যথা নিয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন ডেমরার আক্কাস আলী ভূঁইয়া (৬৫)। ২৫ এপ্রিল তাঁর পেটে অস্ত্রোপচার করেন হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।

রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, চিকিৎসকেরা তাঁদের অনুমতি না নিয়েই হঠাৎ করে অস্ত্রোপচার করেছেন। অস্ত্রোপচারকালে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের অস্ত্রোপচার হাতে-কলমে শেখাতে গিয়ে চিকিৎসকেরা ভুল করে তাঁর নাড়ি-ভুঁড়ি কেটে ফেলেন। এই অভিযোগে ২৯ এপ্রিল ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেন রোগীর স্বজনেরা। হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ২৫ এপ্রিল থেকে অজ্ঞান অবস্থায় রয়েছেন আক্কাস আলী। রোগীর ছেলে আনিছুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, এ ঘটনা তুলে ধরার জন্য তাঁরা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে খবর দেন।

এদিকে এ ঘটনা সংবাদমাধ্যমে না জানানোর জন্য স্বজনদের হুঁশিয়ার করে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গতকাল সকাল থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা হাসপাতালে সংবাদটি সংগ্রহ করতে আসা শুরু করেন। সন্ধ্যায় কয়েকটি টিভি চ্যানেলের কর্মীরা সংবাদ সংগ্রহ করে চলে যাওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর স্বজনদের ওপর চড়াও হয়। আনিছুর জানান, হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে, রোগীর ভাগ্নে আবুল হাসান (২৬) ও শ্যালক শামীম আহমেদকে (৩৫) মারতে মারতে পাঁচতলা থেকে নামিয়ে ভূগর্ভস্থ গ্যারেজে বেঁধে রাখেন। সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তাঁদের বেঁধে রাখা হয়।

রাতে ধানমন্ডি থানার পুলিশ ও কয়েকজন সংবাদকর্মী গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের নিচতলার গ্যারেজে অন্য রোগীদের কয়েকজন স্বজন এ ঘটনার প্রতিবাদে বাগিবতণ্ডা করছেন হাসপাতালের কর্মকর্তা ও নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে। মাঝে ঘটনার শিকার ওই রোগীর তিন স্বজনও রয়েছেন। সংবাদকর্মীরা যাওয়ার আগেই তাঁদের শরীরের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে হাসপাতালের স্টোর ব্যবস্থাপক আবু সাঈদ মিয়া ওই তিনজনকে বেঁধে রাখা হয়েছিল স্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, রোগীর স্বজনেরা সন্ধ্যা থেকে হাসপাতালে প্রচণ্ড হইচই করছিলেন।

এ কারণে তাঁদের বেঁধে রাখা হতে পারে। তবে তাঁদের কে বেঁধেছে তা তিনি জানেন না বলে জানান। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও একটি পাল্টা সাধারণ ডায়েরি করেছে। ওই অস্ত্রোপচার দলের প্রধান ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক রেজাউর রহমান তালুকদার (আর আর তালুকদার)। হাসপাতালের ‘ট্রিটমেন্ট কন্টিনিউশন শিট’ থেকে জানা যায়, ওই অস্ত্রোপচারে অন্যান্য শল্যচিকিৎসক (সার্জন) ছিলেন সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, জিয়া, সাইফ, দীপু ও প্রণব।

এ বিষয়ে আর আর তালুকদারের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তিনি জানান, এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক কথা বলবেন, অথবা পরিচালক বললে কেবল তখনই তিনি কথা বলতে পারেন। পরিচালক আখতার মোর্শেদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে গতকাল বিকেলে ও রাতে তাঁকে হাসপাতালের কার্যালয়ে পাওয়া যায়নি। একাধিকবার তাঁর মুঠোফোনে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।