আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৪২ বছর ধরে আগলে রেখেছেন ৮ ফুট লম্বা চুল আর ৯ ফুট লম্বা দাড়ি

নিজ চরিত্র বদলান দেশ বদলে যাবে।

প্রদীপ মোহন্ত, বগুড়া থেকে: বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্দিড়া গ্রামের বৃদ্ধ আব্দুল মালেক সযত্নে আগলে রেখেছে তার ৮ ফুট চুল আর ৯ ফুট লম্বা দাঁড়ি। গত ৪২ বছর ধরে তিনি তা বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন। ৫ ফুটেরও কম উচ্চতার মানুষটির দাড়ি তার উচ্চতার প্রায় দ্বিগুণ, আর চুলও প্রায় দাড়ির সমান লম্বা। তার গর্বের সেই লম্বা চুল-দাড়ি দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ভিড় জমান তার বাড়িতে।

তবে তিনি না দেখালে কেউ তা দেখতে পারেন না। কারণ, জামার ভেতরে গোপন পকেট বানিয়ে সেখানেই রাখেন সেই দীঘল দাড়ি। আর চুলও রাখেন মাথার কালো কাপড়ের পাগড়ির মধ্যে ঢেকে। জানা যায়, জন্মের পরপরই তার মা মারা যান। মা মারা যাওয়ায় তার বাবা আলেজ উদ্দিন আবারো বিয়ে করেন।

সৎ মায়ের সংসারে তার ঠাঁই না হওয়ায় চলে যান ফুফুর বাড়ি। কিন্তু কেন জন্মের পরপরই মা মারা গেলেন, এ নিয়ে অভিমানী হয়ে ওঠে মন। সেই কারণে ছোট থেকেই চুল-দাড়ি কাটার প্রতি আগ্রহ ছিল না। পরে অল্প বয়সে যখন বিয়ে করেন, তখন জোর করে কেটে দেয়া হয় তার চুল-দাড়ি। বিয়ের পর আবারো একই অবস্থা।

এরইমধ্যে বাবা মারা যান। পরে ১৯৬৮ সালে রেলওয়ের ট্রাফিক বিভাগে পোর্টার হিসেবে যোগ দেন। বাবার মৃত্যুর পর চাকরি আর জমিজমা নিয়ে সংসার পরিচালনা করলেও চুল-দাড়ি আর কাটেননি। দীর্ঘ হতে হতে একসময় জট পেকে যায়। যতই তা বাড়ে, ততই তিনি এর প্রতি মায়ায় পড়ে যান।

এরপর তার যত্ন নেয়া শুরু করেন। ধুলা ময়লা থেকে বাঁচাতে জামার ভেতরের পকেটে গুটি পাকিয়ে রাখতে শুরু করেন দাড়ি, আর মাথার চুল রক্ষা করতে পাগড়ি পরা। ২০০৫ সালের ৩১ মার্চ চাকরি থেকে অবসর নেন। ৮ সন্তানের জনক আব্দুল মালেক বলেন, সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন তিনি। তবে ছেলেমেয়েদের এইচএসসি থেকে ডিগ্রি পর্যন্ত পড়িয়েছেন।

২ ছেলে ও ৩ মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন। লম্বা চুলের কারণে কোনো সমস্যা হয় কি-না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, চুলগুলোকে খুবই ভালবেসেছি। মরার পরও যেন সেসব আমার সঙ্গে যায়, তা আমার ছেলেদের আগে থেকেই বলে রেখেছি। মোটা রশি সদৃশ এই চুলের জন্য কোনোদিন তার পরিবার থেকে কোনো আপত্তি করা হয়নি বলেও জানান তিনি। সম্পাদনা: শাম্মী আক্তার উৎস


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।