পরশু রাতটা ভালো কাটেনি বাংলাদেশ দলের মেয়েদের। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে কম গোল খাওয়ার লক্ষ্য ছিল। কিন্তু গোল হজম করতে হয়েছে নয়টি! বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ম্যাচ শেষ হতেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন খেলোয়াড়েরা। কারও মুখের দিকেই তাকানো যাচ্ছিল না। গোলরক্ষক সাবিনা আক্তার তো কেঁদেই ফেলেন।
কান্না ধরে রাখতে পারেননি আরও অনেকেই।
তাই বলে কাতর হয়ে বসে থাকার সময় নেই। আজই আবার নেমে পড়তে হচ্ছে মাঠে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৭টায় শুরু এই ম্যাচের প্রতিপক্ষ ইরান বলে হয়তো একটু মানসিক চাপ কম। ইরান প্রথম ম্যাচে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে ফিলিপাইনের কাছে।
মানে প্রথম ম্যাচে বড় ব্যবধানে হেরে এশিয়ান কাপের বাছাইপর্ব শুরু করা দুই দলের লড়াই আজ।
বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মতোই ইরানের মেয়েদের মনটাও বিষণ্ন। তাঁরাও ভাবেননি ফিলিপাইনের কাছে ওভাবে উড়ে যাবেন। এটা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ জয় পেলে তো খুব ভালো, নইলে অন্তত ড্র করতে পারাও বাংলাদেশের জন্য হবে অনেকটা জয়ের সমান। বাংলাদেশ-ইরান ম্যাচের আগে ফিলিপাইন লড়বে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে।
শীর্ষ পর্যায়ে ইরানের মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ এই প্রথম এল বাংলাদেশের সামনে। তবে ২০১০ সালে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবলে ঢাকার মাঠেই বাংলাদেশকে ৬-০ গোলে হারিয়েছিল ইরান। র্যাঙ্কিংয়ে ইরান (৫২) বাংলাদেশের (১০৮) চেয়ে ৫৬ থাপ এগিয়ে। কাজেই ইরানকে সমীহ করতেই হচ্ছে। নামটা ইরান শুনে অনেকে হয়তো আশাবাদী হতে পারেন, তবে এই ম্যাচটাও যে মোটেই সহজ হচ্ছে না বাংলাদেশের সবাই তা জানে।
বাংলাদেশের কোচ গোলাম জিলানী সরাসরি বলেননি আজ বাংলাদেশের লক্ষ্য কী। ‘আমরা আশা করি, পজিটিভ কিছু করতে পারব; পয়েন্ট আনতে চাই’—এর বেশি বলতে নারাজ জিলানী। রাত আটটা নাগাদ তিনি বাংলাদেশের মেয়েদের থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের ভিডিও নিয়ে বসেন। চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন কোথায় কোথায় ভুল ছিল। কীভাবে খেললে ৯ গোল এড়ানো সম্ভব হতো।
থাইল্যান্ড ম্যাচে কিছু ভুল তো অবশ্যই করেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। অনভিজ্ঞতাই এর বড় কারণ। থাইল্যান্ড অচেনা প্রতিপক্ষ হওয়ায় তাদের শক্তি নিয়ে সে অর্থে বাংলাদেশের কোনো ধারণাই ছিল না।
অধিনায়ক সুইনু প্রু মারমা বলছিলেন, ‘আমরা তো বুঝতেই পারিনি ওদের খেলাটা। তাই এই রকম হয়ে গেছে।
’ পরক্ষণেই ইরান ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়, ‘যা হওয়ার হয়ে গেছে। এখন আমরা ইরানের কাছ থেকে পয়েন্ট ছিনিয়ে নিতে সর্বাত্মক চেষ্টা করব। আমার বিশ্বাস, আমরা পারব। ’
কাল সারা দিনই বাংলাদেশ দলকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা ছিল দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার। কর্মকর্তা আয়েশা জামান সেই সূত্র ধরে বললেন, ‘থাই মেয়েরা এত ফাস্ট, আমাদের মেয়েরা ভাবতেই পারেনি।
এখন ইরানের বিপক্ষে ওদের মানসিকভাবে চাঙা করে মাঠে নামাতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। ’
একই অবস্থা বিপন্ন ইরানেরও। দলটির পর্তুগিজ কোচ হেলেনা কস্তা হতাশার মধ্যেও আলো খুঁজতে চাইলেন, ‘বাকি দুটি ম্যাচ ভালো খেলতে চাই আমরা। বাংলাদেশকে হালকাভাবে নিচ্ছি না। জয়ের জন্যই খেলব।
’
কিন্তু ইরানের হতাশা আরও বাড়িয়ে দিতে পারবে বাংলাদেশ? থাই-বিপর্যয়ের পর সেই আশা করতেও সাহস লাগে। তার পরও দেখা যাক...। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।