পথের প্রান্তে আমার তীর্থ নয় ,,,,,পথের পাশেই আছে মোর দেবালয়
চীনের রেড আর্মিরা পতাকা নামাচ্ছে সুর্যাস্তের সময় তিয়েনআনমেন স্কয়ারে। আবার পরদিন সুর্যোদয়ের সময় ফরবিডেন সিটি থেকে রাস্তা পেরিয়ে এসে পতাকা উড়িয়ে যাবে। প্রতিদিনের এই আনুস্ঠানিকতা দেখার জন্য প্রচুর ট্যুরিস্ট এবং চাইনীজরা বিকাল থেকেই অপেক্ষা করে সূর্যাস্তের।
মিং সম্রাটের সমাধি। বিশাল প্রাঙ্গনে কারূকার্য খচিত তোরণ পেরিয়ে একাধিক ঐতিহ্যবাহী চীনা স্হাপনা (যা বর্তমানে যাদুঘরে রুপান্তরিত) পার হয়ে অবশেষে ধরা দিল সম্রাটের শেষ গন্তব্যের ঠিকানা।
মহা পরাক্রমশালীমিং সম্রাট ওয়াং লি র ব্রোন্জের মুর্তি (মিং টুম্ব মিউজিয়াম)
ফরবিডেন সিটি। বেইজিং নগরীর ঠিক মাঝখানে এই নিষিদ্ধ নগরী। মিং এবং জিং সম্রাটদের প্রাসাদ। সাধারন জনগনের প্রবেশ নিষেধ ছিল কঠোর ভাবে। ১৪০৬ সালে নির্মান শুরু হয়।
ভেবেছিল এই কঠিন দেয়াল কেউ ভাঙ্গতে পারবেনা। রাজারা সারাক্ষন মৃত্যু ভয়ে ভীত !এখানে কোনো গাছ নেই । নগরীর পুরো প্রাংগনটি ১৫ ফুট গভীর করে পাথর দিয়ে হেডার ও স্ট্রেচার সিস্টেমে বাধানো যেন মাটি ফুড়েও কোনো ঘাতক আসতে না পারে !!প্রাসাদ সংখ্যা ৮০০, ঘরের সংখ্যা প্রায় আট হাজার। বিলাসী জীবন যাপনে অভ্যস্ত রাজা, রানী, সৈন্য, অমত্য রা ছাড়াও ছিল তিন হাজার রক্ষিতা, পায়রার খুপরির মত ঘরে ছিল তাদের বসবাস ! ১৮৬০ সালে বৃটিশরা দখল করে নেয় নিষিদ্ধ নগরী ।
ফরবিডেন সিটির ভেতরে ব্রোন্জের সারস পাখী।
বিখ্যাত গ্রেট ওয়াল যা আমাকে বিশাল ভাললাগায় আবিষ্ট করেছে। বর্তমানে পনেরশ মাইল দীর্ঘ, গ্রেট ওয়াল ছিল তিন হাজার নয়শ চুরাশি মাইল। মংগোলদের হাত থেকে সাম্রাজ্য রক্ষা করতে এ দেয়ালের সৃস্টি। শিন (Qing) ডাইনেস্টির আমলে শুরু হয়ে পাচ বারে শেষ হয় মিং ডাইনেস্টিতে। তিন লক্ষ শ্রমিক তিনশ বছর ধরে নির্মান করে এই দেয়াল।
গড় উচ্চতা ২৫ ফিট। বাদালিং পয়েন্ট থেকে তোলা।
বার্ড নেস্ট অলিম্পিক স্টেডিয়াম।
সামার প্যালেস মার্বেল বোট, কুনমিং লেকে স্হির হয়ে আছে বাতাসে ঢেউ তোলা পানির বুকে। ১৭৫৫সালে নির্মিত।
প্রবাদ আছে পানি নৌকাকে ভাসাতেও পারে আবার ডুবাতেও পারে। কিন্ত শিং (Qing) ডাইনেস্টি হলো এই মার্বেল নৌকার মতনই কঠিন একে কেউ ডুবাতে পারবেনা উপরে উল্লেখিত প্রবাদের প্রতিবাদেই তৈরী এই মার্বেল বোট।
সামার প্যালেসে বৌদ্ধ মন্দির। দুই ধাপ উপর থেকে তোলা। অপূর্ব কারুকাজ করা এই মন্দির ৪১মিটার উচু।
তিন লেভেলে ভাগ করা একটা প্রধান স্হাপত্য সামার প্যালেসে। আমি এর চেয়ে বেশী উঠতে পারিনি। আমার সাহেব আর ছেলে উঠেছিল।
বাঁশের শেকড়ের উপর অপরূপ কারুকাজ সামার প্যালেস মিউজিয়াম।
সামার প্যালেস যার হাওয়া খাওয়ার জন্য তৈরী সেই রানী ডাওজার সিক্সির ছবি আছে কুনমিং লেকের মধ্যে ওই ছোট্ট দ্বীপটিতে।
ছবিটি বৃটিশ চিত্রকর দিয়ে অংকিত ১৯০৫ সালে। তখন রানীর বয়স ৭০,কিন্ত চিত্রকর তাকে খুশি করার জন্য তরুনী রূপে একেছিল।
পৃথিবীর দীর্ঘতম চিত্রাংকিত করিডোর সামার প্যালেস। লেকের পাড় ঘেষে তৈরী এই করিডোর ৭৮৮মিটার লম্বা, ১৪০০০ হাজার ছবি আকা আছে।
ওয়াং ফুজিং স্ট্রীট আমরা ছিলাম।
এটা তিয়েনআনমেন স্কয়ারের দুই ব্লক পরে। ট্যুরিস্ট এলাকা। এ রাস্তা টুকুতে গাড়ী চলা নিষেধ। এখানে পার ডে ৪০/৫০ডলারের মধ্যেই পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হোটেল পাবেন।
বেজিং থেকে ১২০০ কিলোমিটার দুরে শিয়ান প্রদেশে হাজার বছরের পুরানো টেরাকোটা মুর্তি।
মৃত্যুর পর রাজা তার মৃতদেহকে পাহারা দেয়ার জন্য তৈরী করেছিলেন এইসব মাটি দিয়ে তৈরী টেরাকোটা সৈন্যদের।
সংযুক্ত মিউজিয়াম থেকে টেরাকোটা সৈন্যদের মুখ। শিয়ান।
ফরবিডেন সিটিতে যাবার পথেই, রাস্তার পাশে ফুটপাথে বিকাল থেকে সারারাত লাইন ধরে চালু চাইনীজ জনপ্রিয় খাবার। এখানে তিন চারটা মুসলমান পরিচালিত হালাল খাবারের দোকানও আছে যেখান থেকে আমরা ল্যাম্ব আর চিকেন স্টিক কিনে খেয়েছি কয়েকদিন, সেই সাথে কাঠিতে গাথা বিভিন্ন রসাল ফলের টুকরো, যা আবার গরম চিনির সিরায় ডুবিয়ে একটু শক্ত করে রাখা ।
ভীষন মজার।
লিখেছেনঃ মাহজাবীন জুন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।