তবে পয়নিষ্কাশনের দায়িত্বে থাকা ঢাকা ওয়াসা এই পরিস্থিতিকে জলাবদ্ধতা বলতে রাজি নয়। কর্মকর্তারা বলছেন, স্যুয়ারেজের পানি দ্রুত সরতে না পারায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, যাকে ‘জলজট’ বলা যেতে পারে।
ভারতের বিহার ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপের প্রভাবে বুধবার রাত থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মুষলধারে বৃষ্টি চলে। সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ঢাকায় ৭০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃষ্টির কারণে সকালেই নগরীর তেজগাঁও, রাজাবাজার, মৌচাক, মালিবাগ, তেজকুনি পাড়া, বাড্ডা, শাঁখারিবাজার, মিরপুর, শ্যামলী, ধানমণ্ডি, মোহাম্মদপুর, পল্টন, মানিকমিয়া এভিনিউসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কে পানি জমে যায়।
রামপুরার বাসিন্দা শাওন জানান, মৌচাক থেকে রামপুরা পর্যন্ত সড়কের একটি বড় অংশ বৃষ্টিতে জনমগ্ন হয়ে পড়ে। আশপাশের সংযোগ সড়ক, ডাক্তারগলি, আবুল হোটেল এলাকার সড়কেও দীর্ঘসময় পানি জমে থাকে।
প্রবল বর্ষণে পানি ঢুকে পড়ে ধানমন্ডির হকার্স মার্কেটেও। ব্যবসায়ীদের দুপুর পর্যন্ত দোকানের মালামাল সরাতে ব্যস্ত দেখা যায়।
ভারি বর্ষণে ছুটির দিনের সকাল থেকেই দুর্ভোগে পড়ে নগরবাসী।
রিকশা ও অটোরিকশার সংখ্যা কম থাকায় যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া গুণতে হয়।
সিএনজিচালিত বেশ কিছু যানবাহনের ইঞ্জিনে পানি ঢুকে আটকে থাকতে দেখা যায় বিভিন্ন রাস্তায়। ফলে কোনো কোনো এলাকায় যানজটও সৃষ্টি হয়। গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও সৃষ্টি হয় যানজট।
টানা বৃষ্টির মধ্যে রাজধানীর বংশাল এলাকায় ছেঁড়া তার থেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই পথচারীর মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মিরপুরের বাসিন্দা মঈনুল হক বলেন, শুকনো মৌসুমে রাস্তা সংস্কার না করে খোঁড়াখুড়ি শুরু হয় বর্ষার আগে। এ কারণেই সাধারণ মানুষকে বেশি ভুগতে হয়।
তাছাড়া ঢাকা সিটি করপোরেশনে দীর্ঘদিন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় প্রশাসকরা এলাকার উন্নয়নে প্রয়োজন অনুযায়ী উদ্যোগী হন না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
নগরীর জলবদ্ধতা নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেন, “বৃহস্পতিবারের বৃষ্টি কোনোভাবেই স্বাভাবিক ছিল। প্রথম তিন ঘণ্টায় ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়।
এটা আনইউজুয়াল। একদিনেই এতো বৃষ্টি অস্বাভাবিক। ”
সাময়িক যে জলাবদ্ধতা হয়েছে তা নিরসনে ওয়াসার উদ্যোগ নিয়ে পরে সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলে জানান তিনি।
ওয়াসার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভারি বর্ষণে নগরবাসীকে সাময়িক যে পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয় তাকে ‘জলজট’ বলতে হয়, জলাবদ্ধতা নয়। বর্তমান স্যুয়ারেজ ব্যবস্থায় প্রতি ঘণ্টায় যে পানি সরতে পারে, তার বেশি বৃষ্টি হলেই নিচু এলাকায় জলজটের সৃষ্টি হয়।
”
তিনি জানান, রামপুর, জনপথের মোড়সহ চারটি এলাকায় ওয়াসার পানি সরানোর অস্থায়ী পাম্প রয়েছে। বর্ষা মৌসুম সামনে রেখে এর মধ্যে দুটিকে স্থায়ী করার পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শাহ আলম জানান, কালবৈশাখীর প্রভাবে ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। শুক্রবার থেকে তা কমতে পারে। তবে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই বর্ষা মৌসুম শুরু হচ্ছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।