আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নস্টালজিয়া.....পরী!

মুন রিভার ...
বোহেমিয়ান দিনগুলি,বোহেমিয়ান রাতগুলি.... কুঁ ঝিক ঝিক...কুঁ ঝিক ঝিক... তখন বি আই টি তে পড়ি। ২০০০-০১ এর কোনো এক আবেশ রোদ দুপুর। হোস্টেল থেকে বের হয়েছি,আমি আর রুপম। রুপম আমার সাথে ব্যাকপ্যাক দেখেই বুঝে গ্যাছে,যথারীতি আমার যাত্রা উদ্দেশ্যবিহীন। রিক্সা নিয়ে ঘুরছি পদ্মা পাড়ের শহরে।

ঘুরতে ঘুরতে ট্রেন স্টেশন এর কাছাকাছি চলে আসি। 'রানা ভাই,ট্রেন যায়-'রুপমের কথা শেষ হতেই দেখি দুলকি চালে ট্রেন যাচ্ছে। রিক্সা থেকে নেমে ভোঁ দৌড় দুজনের। একদম শেষ মুহুর্তে উঠে যাই ট্রেনে। রুপম ছুড়ে দেয় আমার ব্যাকপ্যাক আর 'স্বর্নপাতা' নিকোটিন।

তখনও জানিনা ট্রেন এর গন্তব্য। । সময়টা ছিলো নির্ভার,সময়টা ছিলো বোহেমিয়ান,সময়টা ছিলো অনিশ্চয়তাকে নিশ্চিন্তে বন্ধু ভেবে ঝাঁপ দেয়ার। লিটিল এঞ্জেল..... 'আশ্চর্য,ভাত সবটুকু খেতে হবে'। 'আরে,সারাদিন ঘুম!দিলাম,পানি ঢেলে'।

'এত সিগারেট খেলে সিগারেটের প্যাকেট ফেলে দেবো। ' লিটিল এঞ্জেল। । আমি এ নামেই ডাকতাম। আমাকে বড় মানুষের মত শাষন করতো।

আমি কপট বিরক্ত হবার ভান করলেও উপভোগ করতাম লিটিল এঞ্জেল এর শাষন। সুইট লিটিল এঞ্জেল..... নাটোরের লালপুর এ তখন আমি। এক রাতে বসে জয় গোস্বামী-র বই পড়ছিলাম। দলছুট এর হৃদয়পুর এলবাম এর গাছ,সবুজ যখন,বৃষ্টি গানের সুবাদে সঞ্জীব'দার সাথে মাত্রই পরিচয়। ততোদিনে বাপ্পা ভাই এর স্নেহের ছায়া পেয়েছি।

দাদা আমাকে জয় গোস্বামী পড়তে বলে। নতুন নতুন শব্দের সাথে পরিচয় ঘটে আমার। । এক রাতে জয় গোস্বামী-র কবিতার বই এর এক সাদা পাতে খুঁজে পেতে লিখে ফিলি, আজ তোমার মন খারাপ মেয়ে, তুমি আনমনে বসে আছো আকাশ পানে দৃষ্টি উদাস আমি তোমার জন্য এনে দেবো মেঘ থেকে বৃষ্টির ঝিরিঝিরি হাওয়া সে হাওয়ায় ভেসে যাবে তুমি। আজ তোমার চোখের কোনে জল বৃষ্টিও অবিরাম কাঁদে তোমার সাথে আমার পথে, আমি তোমার জন্য এনে দেবো রুপালী রোদ্দুরের ক্ষন পাখি কে করে দেবো তোমার আপনজন পরী,তুমি ভাসবে মেঘের ভাঁজে..... শেষ চার লাইন লিখে মন কি যে ভালো হয়।

মন পাখী হয়ে যায়....... লিরিক গানের কাছাকাছি..... 'ধুলো পড়া চিঠি' এলবাম এর কাজ প্রায় শেষ। বাপ্পা ভাই এর সাথে বেইলী রোডে আমি। এলবাম এর কাভার ডিজাইন হচ্ছে। লিরিক দরকার ২ টা। জয় গোস্বামীর বই এর সেই সাদা পাতা আমি সযতনে রেখে দিয়েছিলাম।

এনে দেই দাদা কে। যতটুকু লেখা ছিলো ততটুকুই যায় কাভার এ। । তখনো টিউন হয় নি। ।

সপ্তাহ খানেক পর বাপ্পা ভাই এর ফোন। 'গানটা শোনো,আর এক অন্তরা লাগবে। ' শুনি,অপার্থিব অনুভুতি হয় আমার। খুব কম সময়ে লিখে ফিলি আর এক অন্তরা। লিখে টেক্সট করে দেই বাপ্পা ভাই কে।

। আজ তোমার জোছনা হারায় আলো প্রজাপতির ডানায় বিষাদ করে ভর যখন তখন, আমি তোমার জন্য এনে দেবো অঝোর শ্রাবন, আকাশছোঁয়া জলজোছনা পরী,তুমি ভাসবে মেঘের ভাঁজে..... উৎকন্ঠায় থাকি। ঠিকভাবে লিখতে পারলাম?মাত্রা ঠিক আছে? পরী..... ২-৩ দিন পর বাপ্পা ভাই এর বাসায় যেয়ে পুরো গানটা শুনে কি যে ভালো লাগে। সেরেন ফিলিং ঘিরে ধরে। ।

গানটার গিটার ওয়ার্ক,কম্পোজিশন,টিউন এত সুন্দর আর সর্বোপরি বাপ্পা ভাইয়ের অসাধারন গায়কী লিরিকটাকে অন্য মাত্রা এনে দেয়। 'পরী' সবার ভালো লাগার গান হয়ে যায়! লিটিল এঞ্জেল'
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।