আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তিন বছর অপেক্ষা করন লাগব ।বিদ্যুত তার পর ?

কালের সাক্ষী

'৩ বছরে আরো ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ' Sat, Apr 3rd, 2010 1:30 pm BdST Dial 2324 from your mobile for latest news সিলেট, এপ্রিল ০৩ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- আগামী তিন বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন আরো ৩ হাজার মেগাওয়াট বাড়াতে কাজ করছে সরকার। আর ২০২১ সালের মধ্যে উৎপাদন ২০ হাজারে নেওয়ায় লক্ষ্য বলে শনিবার জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে দেশে দৈনিক প্রায় ৬ হাজার মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুতের উৎপাদন গড়ে ৪ হাজার মেগাওয়াট। এজন্য লোডশেডিং দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ সঙ্কটের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শনিবার সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে ৫১ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বেসরকারি একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন করেন।

এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে ২০১৩ সালের মধ্যে ৭ হাজার মেগাওয়াট ও ২০২১ সালের মধ্যে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনার আওতায় সরকারি ও বেসরকারি খাতে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। "ইতিমধ্যে ১ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদুৎ কেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে আরো প্রায় ১ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যাদেশ দেওয়া হবে। " সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানা মাঠে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি অবতরণ করে। এরপর বারাকাতুল্লাহ ইলেকট্রো ডায়নামিকস লিমিটেড (বিইডিএল) নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্মিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উদ্বোধন করেন তিনি।

বিদ্যুতের বর্তমান সঙ্কটের জন্য চারদলীয় জোট সরকারের উদ্যোগহীনতাকে দায়ী করেন আওয়ামী লীগ প্রধান হাসিনা। তিনি বলেন, "তাদের আমলে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের নামে হয়েছে ব্যাপক দুর্নীতি। গ্যাস সেক্টরে কোনো বিনিয়োগ হয়নি। গ্যাস উত্তোলনের পদক্ষেপ না নেওয়ায় বিদ্যুৎ ও গ্যাস সেক্টরের অবস্থা খুবই নাজুক। " শহরে লোডশেডিংয়ের প্রসঙ্গ ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "ঢাকা শহরে বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে সেচের জন্য গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।

যদিও এ জন্য ঢাকার মানুষের গালি খেতে হচ্ছে। তবুও বোরো উৎপাদনকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। " বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রাধমিক জ্বালানি সঙ্কটকে সামনে রেখে সরকার পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়টিও বিবেচনা করছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরো বলেন, ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার থেকে বিদ্যুৎ আমদানির উপায় খোঁজা হচ্ছে। ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ বিনিময় কার্যক্রম নিয়ে দু'দেশের কারিগরি প্রতিনিধি দল কাজ করে যাচ্ছে।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুর থেকে বাংলাদেশের ভেড়ামারা পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন এবং ভেড়ামারায় বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে হাসিনা বলেন, এ সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করে ২০১২ সালের মাঝামাঝি সময়ে ভারত থেকে অন্তত ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর তীরে ২০০৭ সালের ২৬ জুন ১৩০ জন মিলে প্রতিষ্ঠা করেন বিইডিএল। উদ্যোক্তাদের ৭৫ ভাগই প্রবাসী বিনিয়োগকারী। প্রধানমন্ত্রী প্রবাসীদের আরো বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, "বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে সরকার যে পরিকল্পনা নিয়েছে তা বাস্তবায়ন সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়, তাই আমাদের বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে কাজ করে যেতে হবে। " বিনিয়োগ করতে চাইলে প্রবাসীদের সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি।

হাসিনা বলেন, দেশের জনসংখ্যার মোট ৪৭ ভাগ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। প্রতিবছর বিদ্যুৎ চাহিদা প্রায় ৭ থেকে ৮ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিরাজমান পরিস্থিতিতে লোড শেডিংয়ের মাত্রা কমিয়ে আনতে এবং ২০২০ সালে 'সবার জন্য বিদ্যুৎ' নিশ্চিত করতে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুল হক, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুবিদ আলী ভূঁইয়া, সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী ও বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব আবুল কালাম আজাদ। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদও উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।

এতে সভাপতিত্ব করেন বারাকাতুল্লাহ ইলেকট্রো ডায়নামিকস লিমিটেডের (বিইডিএল) চেয়ারম্যান ফয়সাল আহমেদ চোধুরী। ফয়সল চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বিইডিএল থেকে ইতিমধ্যে পুরোদমে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। প্রতিদিন এ কেন্দ্র থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ৫১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে। ২০০৮ সালের ২৮ এপ্রিল বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) সঙ্গে কোম্পানিটির স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী এ কেন্দ্র থেকে ২ টাকা ১৫ পয়সা দরে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ পিডিবির কাছে বিক্রি করা হবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী হজরত শাহজালাল (রা.) ও হযরত শাহপরান (রা.) এর মাজার জিয়ারত করতে সিলেট নগরীর পথে রওনা হন।

দুপুরের পর তিনি সিলেট ডাক বাংলোয় বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এরপর স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন তিনি। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/কিউএইচ/এমআই/১৫৩০ ঘ.

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।