আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৭১-এ কাদের মোল্লার পরিচয় মিরপুরের কসাই ও জল্লাদ



আবার গর্জে উঠেছে এই বাংলাদেশ । কে রাজাকার , কে যুদ্ধাপরাধী তা খুঁজেই নিচ্ছে এই প্রজন্ম। এদের বিচারের দাবীতে সোচ্চার আপামর মানুষ। পড়ুন একজন যুদ্ধাপরাধীর অতীত । [দৈনিক আমাদের সময় / ১ এপ্রিল ২০১০ এর রিপোর্ট ] ৭১-এ কাদের মোল্লার পরিচয় মিরপুরের কসাই ও জল্লাদ শামীম খান ----------------------------------------------------------------- মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকার মিরপুর এলাকায় কসাই ও জল্লাদ নামে পরিচিত ছিলেন বর্তমান জামায়াতর নেতা আব্দুল কাদের মোল্লা।

শিয়ালবাড়ী ও রূপনগরসহ পুরো এলাকায় শত শত বাঙালি হত্যার প্রধান নায়ক ছিলেন তিনি। স্বাধীনতার পর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে আবিস্কৃত হয় দেশের অন্যতম বড় গণকবর। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই কাদের মোল্লার নেতৃত্বে মিরপুরে বাঙালি হত্যা শুরু হয়। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম দিকে মণিপুর, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া এবং মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনে বসবাসকারী অবাঙালিদের নিয়ে নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গঠন করেছিলেন কাদের মোল্লা। তাদের সহযোগিতায় তিনি মিরপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বাধীনতাকামী বাঙালিদের অনেককে তিনি শিয়ালবাড়ী, রূপনগর, বালুঘাট প্রভৃতি স্থানে ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছিলেন।

আব্দুল কাদের মোল্লার বাড়ি ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায়। একাত্তরে তিনি ছিলেন ইসলামী ছাত্র সংঘের নেতা। কাদের মোল্লা বর্তমানে জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল। মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির গণতদন্ত কমিশন রিপোর্টসহ বিভিন্ন সুত্র থেকে এসব তথ্য পাওয়া যায়। মিরপুরের তালতলার মো. ফরজ আলী নামে এক ব্যক্তি গণতদন্ত কমিশনকে কাদের মোল্লার বিষয়ে তথ্য দেন।

কমিশনকে দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, তার ছোট ভাই মিরপুর বাংলা কলেজের ছাত্র শহীদ পল্লবকে কাদের মোল্লার নির্দেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর স্থানীয় দালালরা হত্যা করে। মার্চের প্রথম দিক থেকেই শহীদ পল্লব স্থানীয় বাঙালি ও অবাঙালিদের ঐক্যবদ্ধ করার উদ্যোগ নেন। এসব কারণে স্বাধীনতাবিরোধীদের হত্যা পরিকল্পনায় তার নাম যোগ হয়। ২৯ মার্চ তারা পল্লবকে নবাবপুর থেকে মিরপুরে কাদের মোল্লার কাছে নিয়ে যায়। পরে কাদের মোল্লার নির্দেশে তার সহযোগীরা পল্লবকে মিরপুর ১২ নম্বর থেকে ১ নম্বর সেকশন শাহ আলী মাজার হয়ে ১১ নম্বর সেকশনের ঈদগাহ মাঠ পর্যন্ত হাত বেঁধে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে।

সেখানে গাছের সঙ্গে বেঁধে পল্লবের দেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়। তার হাতের আঙুল কেটে ফেলা হয় এবং পরে তার বুকে পরপর পাঁচবার গুলি করে মারা হয়। প্রতিটি গুলির জন্য কাদের মোল্লা পুরস্কারও ঘোষণা করেছিলেন। হত্যার পর তার লাশ দুইদিন গাছের ডালে ঝুলিয়ে রেখা হয় মানুষকে ভীতসন্ত্রস্ত করার জন্য। এরপর ঘাতকরা মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনে কালাপানি ঝিলের পাশে আরও ৭ জনের লাশের সঙ্গে পল্লবের লাশ মাটি চাপা দেয়।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী মো. শহিদুর রহমান চৌধুরীর সাক্ষ্য থেকে জানা যায়, অক্টোবর মাসে কাদের মোল্লার নেতৃত্বে রাজাকাররা মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনে মহিলা কবি মেহেরুন্নেসাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দেখে সেই বাড়ির সিরাজ নামে এক ব্যক্তি তখন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে ৬ মার্চ মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজের গেটের সামনে ৭ মার্চকে সামনে রেখে স্বাধীনতাকামী মানুষদের একটি সভা হয়। সেই সভায় অংশগ্রহণকারীরা ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিলে কাদের মোল্লার নেতৃত্বে তার সহযোগীরা ‘নারায়ে তাকবীর’ শ্লোগান দিয়ে তলোয়ার, দা ও অন্যান্য ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে বহু মানুষকে আহত করে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।