তুমি যদি কাউকে তোমার আপন করতে চাও, তাহলে প্রথমে তুমি নিজে তার আপন হয়ে যায়। দেখবে একসময় সে নিজেও তোমার আপন হয়ে গেছে
(আসমান থেকে লাফ দিয়েন না আমার এ শিরোনাম দেইখা। আর চোখগুলা বড় করাও দরকার নাই। যেমন আছেন, তেমনই থাকেন। সেইটা হইবো আমাদের সবার জন্য মঙ্গলময়।
ঠিক আছে এবার শোনেন আমার ঘটনাটা..........)
মানুষের জীবনে কখনো কখনো এমন কিছু মুহূর্ত আসে, যা সে চাইলেও এড়াতে পারে না, আবার না চাইলেও ছাড়াতে পারে না।
আমার জীবনেও এমন একটা ক্ষণ ছিল, যা আমি বলছি আপনাদের।
শুরু করার আমি দুটো প্রশ্ন করি আপনাদেরকে, কথায় বলে, চোর নাকি কখনো ধর্মের কাহিনী শোনে না। আর, নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি নাকি মানুষের লোভ থাকে একটু বেশী।
এ কথাগুলো আপনারা কতটুকু বিশ্বাস করেন? যদিও আমি আগে করতাম না।
কিন্তু এখন বিশ্বাস করি।
এর কারণটা হচ্ছে এ রকমঃ-
(গত কয়েক মাস ধরে আরোহীকে খুব শাসনে রাখছি, যেন সে কোন ভুল না করে। কুমিল্লা শহরে তার কেউ নেই বলে, সে আমাকে তার বড় ভাইয়ের মত সম্মান করে। আর আমিও তাকে নিজের ছোট বোনের মতো স্নেহ করতাম এতদিন। এজন্য তাকে অনেক কিছু শিখিয়েছি।
আমি নিজেই তাকে ফোন করেছি বেশীরভাগ সময়। মুসলিম সমাজের রীতি নীতি সম্পর্কে প্রচুর ধারণা দিয়েছি। যেন জয়ের পরিবারের সাথে সে খাপ খাইয়ে নিতে পারে নিজেকে।
এখন আরোহীর সাথে কথা বললেই আমি বুঝতে পারি, সে অনেক কিছুই শিখেছে। তারপরও একটা কিন্তু থেকে যায়।
)
আজ সন্ধ্যাবেলা আরোহী ঘন ঘন মিসকল দিয়েছে আমাকে।
খুব ব্যস্ত ছিলাম, তাই কল ব্যাক করতে পারি নি তখন।
রাত নয়টা বাজে ফোন করলাম তাকে।
সে ফোন রিসিভ করেই কাদতে লাগলো।
আমি তার কান্না শোনে ঘাবড়ে গেলাম।
তাকে প্রশ্ন করলাম,"কি হয়েছে তোমার? কাদচ্ছো কেন?"
সে জবাব দিলো,"ভাইয়া, আমি তোমাকে একটা কথা বলবো, তুমি কি রাগ করবে আমার কথা শোনে?"
"ঠিক আছে বল? আমি রাগ করবো না মোটেও। "
"সত্যি তো?"
"হ্যা, তিন সত্যি। "
এবার সে খুব ঠান্ডা মাথায় বললো,"ভাইয়ারে তোর আরোহী আর নেই। "
আমি বিন্দুমাত্র বুঝতে পারলাম না তার কথার অর্থ। তাই জিজ্ঞেস করলাম, "এ কথার মানে কি?"
"মানে আবার কি? মানে, আমি হারিয়ে গেছি?"
"বুঝলাম না?"
"বুঝলে না?"
"না।
"
"তুমি যে কথা বলে সবসময় সাবধান করতে আমাকে,আমি রাখতে পারি নি সে কথা। "
(যারা এ লেখা পড়ছেন, তাদেরকে জানিয়ে দেই, আমার সাবধান বাণীটা ছিলঃ-"বিয়ের আগে জয়কে কোন রকম সুযোগ দেবে না। কারণ, তোমার সবকিছু জয়ের নয়, তোমার স্বামীর। আর জয় যদি তোমার দুবর্লতার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করে, তুমি সরাসরি আমাকে বলবে। " আরোহীর জবাব ছিল,"ঠিক আছে।
")
"তারমানে?"
আরোহী কাদতে কাদতে বললো, "ভাইয়ারে, আমি তোমার কথা রাখতে পারি নি। আমি আমার সবকিছু হারিয়ে ফেলেছি। আমি আমার সবকিছু তুলে দিয়েছি জয়ের হাতে। "
এবার আমার আর কোন অসুবিধা হলো না আরোহীর কথা বুঝতে।
এসব কি বলছে সে? এসব কি শুনলাম আমি?
আমি নিজেই নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছি না।
আগে জানতাম, কোন মেয়ে তার সব হারানোর কথা নিজের মায়ের কাছেও নাকি গোপন রাখে।
তাই আরোহীর কথাটাও আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না মোটেও।
ভাবলাম, সে হয়তো মিথ্যে বলছে আমার সাথে। কিন্তু কোন মেয়ে নিজের এই ব্যাপারটা নিয়ে মিথ্যে বলবে?
তাও আবার আমার মতো অচেনা-অজানা মানুষের কাছে?
আমার সবকিছু কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে?
আমি একটুও মিথ্যের গন্ধ পাচ্ছি না তার কথায়।
কারণ, আমার ধারণা, যে কোন মেয়ে অন্তত তার এ ব্যাপার নিয়ে মিথ্যে বলবে না কখনো।
তার কথা শোনার পর কেমন যেন অবশ লাগছে আমার শরীরটা।
একটুও শক্তি পাচ্ছি না নড়াচড়া করার।
বুঝতে পারছি না, বেচে আছি, নাকি মরে গেছি।
কিন্তু আমি যে কাদচ্ছি, এটা বুঝতে পারছি পরিস্কারভাবে।
(কারণ, একজন টিচার একজন ছাত্রকে যেভাবে পড়ায়, ঠিক সেভাবে আমিও আরোহীকে অনেক কিছু শিখিয়েছি।
একজন ছাত্র যখন ফেল করে, তখন টিচারের যে কি অবস্থাটা হয় তখন আমারও একই অবস্থা হয়েছিল। )
প্রায় পাঁচ মিনিট পর আমি আরোহীকে জিজ্ঞেস করলাম, "তুমি নিজেকে তার হাতে তুলে দেওয়ার আগে, তোমার কি একটুও মনে ছিল না তোমার তোমার বাবা-মা আর বোনদের কথা। আর আমার কথা না হয় আমি বাদ-ই দিলাম?"
সেও কাদতে কাদতে বললো,"না, আরমান, তুমি এরকম করে বলো না। সবার কথাই আমার মনে ছিল। এমন কি তোমার কথাও আমি ভুলি নি।
"
"তারপরও তুমি কেন করলে এমন কাজটা?"
(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।