আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নজরুল-অবহেলা ইনস্টিটিউট !!

Never argue with idiots. They bring you down to their level and then beat you with experience নজরুল ইনস্টিটিউটে বাজেট অপ্রতুল গবেষণা বন্ধ। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অনন্য কীর্তি প্রচার ও প্রসারে রাজধানীতে গড়ে ওঠা নজরুল ইনস্টিটিউট। প্রতিষ্ঠানটিতে এখন গবেষণা কার্যক্রম নেই বললেই চলে বাংলা সাহিত্যের অবিস্মরণীয় যুগস্রষ্টা আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। বিস্ময়কর প্রতিভার জাদুস্পর্শে তিনি বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে রেখেছেন অতুলনীয় অবদান। তার এই অনন্য কীর্তি সর্বসাধারণে ব্যাপকভাবে প্রচার ও প্রসারে এদেশে গড়ে তোলা হয়েছে নজরুল ইনস্টিটিউট।

অথচ সেই প্রতিষ্ঠানেই চরম অবহেলার শিকার এই কবি। কাজী নজরুল ইসলামের কৃতি সম্পর্কে ব্যাপক গবেষণা ও তার স্মৃতিরক্ষা, জীবনী প্রকাশ-প্রচার এবং ভাবমূর্তি দেশ-বিদেশে উজ্জ্বলরূপে তুলে ধরার জন্যই প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত হয়। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন অজুহাতে সে কার্যক্রম স্তিমিত হয়ে এসেছে। এর মধ্যে লোকবল সংকট এবং বাজেট না থাকাকে প্রধান অন্তরায় হিসেবে বলছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। তবে অভিযোগ রয়েছে, নজরুল ইনস্টিটিউটের জন্য যে বাজেট বরাদ্দ আছে তার বড় অংশই ব্যয় হয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেছনে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে নজরুল বিষয়ে গবেষণার জন্য ১৩টি বিষয়ে গবেষণা বৃত্তি চালু করা হয়। কিন্তু সে বৃত্তি এখন বন্ধ। সর্বশেষ ২০০৬ সালে ইনস্টিটিউটের ‘উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ (সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় বৃত্তি দেওয়া হয়। একই বছর নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলোর তথ্যচিত্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ক্ষুদ্রাকৃতির ‘কুমিল্লায় নজরুল’, ‘ত্রিশালে নজরুল’ এবং ‘চট্টগ্রামে নজরুল’— এ তিনটি তথ্যচিত্র নির্মিতও হয়।

তবে এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়নি। নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত অন্যান্য এলাকা নিয়ে আর কোনও তথ্যচিত্র নির্মিত হয়নি। ২০০৬ সালের ২১ জানুয়ারি বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন নজরুল ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় দেশি-বিদেশি পর্যটক আকর্ষণের জন্য নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত স্থাপনা দেখানোর একটি প্রকল্প হাতে নেয়। কিন্তু প্রকল্পটি বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমান সরকারের চার বছর কেটে গেলেও এ প্রকল্প ফের চালুর কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

নজরুল বিষয়ক গবেষণা বন্ধ করে, বছরে নজরুলকে নিয়ে হাতেগোনা কয়েকটি অনুষ্ঠান আয়োজনেই সীমাবদ্ধ ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম। প্রতি বছর প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় আন্তর্জাতিক নজরুল সম্মেলন। কিন্তু এ বছর সেই সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হয়নি। ‘ত্রৈমাসিক নজরুল ইনস্টিটিউট’ নামে বছরে চারটি সংখ্যা প্রকাশ করার কথা প্রতিষ্ঠানটির। কিন্তু ২০১২ সালের মে’র পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনও সংখ্যা বের হয়নি।

সেই সঙ্গে বন্ধ আছে নজরুলবিষয়ক ইংরেজি জার্নাল প্রকাশনার কাজও। এ প্রসঙ্গে নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক রশীদ হায়দার আমাদের সময়কে বলেন, নজরুল ইসলামের সংগ্রামমুখর বর্ণাঢ্য জীবন, তার সাহিত্য-সংগীত ও সামগ্রিক অবদান সম্পর্কে গবেষণা ও প্রকাশনা সময়সাপেক্ষ, শ্রমসাধ্য ও ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার। সূত্রে জানা গেছে, এর অন্যতম কারণ লোকবলের অভাব ও বাজেট। নজরুল চর্চা বিষয়ক একমাত্র সরকারি এ প্রতিষ্ঠানের বাজেটের বড় অংশই খরচ হচ্ছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, গাড়ির তেল ও অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও এখানে নেই যথাযথ সরকারি তদারকি।

এ প্রসঙ্গে রশীদ হায়দার বলেন, অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও নজরুল ইনস্টিটিউট গবেষণা ও প্রকাশনার ওপর জোর দিয়েছে। ইতোমধ্যে এ প্রতিষ্ঠান থেকে কবির জীবনী, সাহিত্য, সংগীত ও সামগ্রিক অবদান সম্পর্কে প্রায় দেড় হাজার গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ৩৭ খণ্ডে নজরুল সংগীত স্বরলিপি প্রকাশ করা হয়েছে। বেরিয়েছে নজরুলের জীবনভিত্তিক আলোকচিত্র সংগ্রহ ‘নজরুল অ্যালবাম’। এতে কবির কৈশোরকাল থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সংগ্রামশীল, বর্ণাঢ্য ও সুখ-দুঃখময় দীর্ঘ জীবনের অনেক রঙিন ও সাদা-কালো ছবি আছে।

নজরুল সংগীতের গুচ্ছ সংকলন প্রকাশ করা হয়েছে ১১টি সিডিতে। প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয় বিপণন শাখার তথ্যানুযায়ী ইনস্টিটিউট থেকে নজরুল বিষয়ক প্রকাশিত বইগুলোর চাহিদা রয়েছে পাঠকদের কাছে। কিন্তু বইগুলোর পুনর্মুদ্রণ বর্তমানে বন্ধ। বাংলাদেশ সরকার নজরুল ইনস্টিটিউট অধ্যাদেশ ১২ জুন ১৯৮৪ অনুযায়ী ১৯৮৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কবির স্মৃতিবাহী রাজধানীর ধানমণ্ডির পুরনো ২৮ নম্বর রোডের ৩৩০বি বাড়ি ‘কবিভবনে’ নজরুল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়। তথ্যসুত্র:: ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।