নিজেকে নিয়ে কিছু একটা লেখার চেষ্টা, এখোনো করে যাচ্ছি . . .
আজ সকালে আওয়াজ খুলতেই প্রথম যে সাউট-টা চোখে পড়ল তা কিছুনা ’র একটা ছোট্ট সাউট। “আজকে আমার আম্মার শুভ জন্মদিন ”, আজ কিছুনা’র মায়ের জন্মদিন।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা কিছুনা’র আম্মুর প্রতি।
‘মা’ শব্দটাই আমার কাছে হৃদয়ঘটিত ব্যপার। অন্য কোন অনুভূতি এতটা মায়া কখনো আনতে পারেনা যা একমাত্র ‘মা’ শব্দটাই পারে।
কিছুনা’র মায়ের কথা ভাবতে ভাবতে আমার মা’য়ের কথা মনে পড়ে গ্যালো। একবার এরকম হয়েছে মা’কে জিজ্ঞেস করছি ‘মা তোমার জন্মদিন কবে’ মা তো হেসেই খুন, ‘কি করবি খোকা’ আমিও নাছোরবান্দা ‘আহা বলোনা, কবে তোমার জন্মদিন’ মা অনেকক্ষন কি জানি খোঁজাখুজি করলেন তারপর ‘খোকা, তোকে পরে বলবোনে’ – অবশ্য পরে আর জানাও হয়নি মায়ের জন্মদিনের তারিখ’টা।
‘মা’ নিয়ে যখন দু-কথা বলতে বসলাম, তখন এইতো কিছুদিন আগেকার দুটো স্মৃতি শেয়ার করা যাক ....
প্রতিদিনকার মত সকালে চা বানিয়ে সবাইকে খাওয়ানো আমার রুটিন মাফিক অভ্যাস। এটার কোন বাধ্যবাধকতা নেই কিন্তু নিয়মে দাড়িয়ে গিয়েছে। সেদিনও চা করে মায়ে’র রুমে চা দিতে গিয়ে দেখি মা’ নামাজ পড়ে চেয়ারেই ঘুমিয়ে পড়েছেন, আমি আর তাকে ডাকিনি, অবিকল চায়ের কাপ হাতে ঠাই দাড়িয়ে থাকলাম, কতক্ষণ হবে, বড়জোড় ৫০ সেকেন্ড থেকে ৬০ সেকেন্ড, মা জেগে উঠলেন ‘কি রে, চা হাতে দাড়ায় আছিস’ আমি সুযোগ্য সুযোগে ‘মা, দেখো দেখো তোমার প্রতি আমার ...’ মা কথা কেড়ে নিলেন ‘কতক্ষণ দাড়ায় আছিস’ এবার আমিও ‘যতক্ষণই থাকি না কেনো, বায়েজীদ বোস্তামী পানি হাতে সারা রাত দাড়িয়ে পরে বড় পীড় হয়েছিলেন মায়ের দোআয়, আর আমাকে দেখো সকাল সকাল চা হাতে তোমার পাশে দাড়িয়ে, মা এবার তাড়াতাড়ি বায়েজীদ বোস্তামীর মায়ের মত একটা দোআ দাওতো’ – মাথাখানি নীচে নামিয়ে দিলাম ‘খোকা, আমি তোর মা-ই দোআ দিচ্ছি, অনেক বড় হবিরে খোকা’ – মা’কে জড়িয়ে ধরে বললাম ‘মা, তুমি তো সব সময় দোআ করো, আর লাগবেনা’
ওইদিনটা আমার সবচে ভালো গ্যালো।
দ্বিতীয় ঘটনাটা, অফিস ছুটির দিন বাসায় আছি। তখন সন্ধ্যার দিকে একটা ফোন এসেছে সেলফোনে। ধরতে ইচ্ছে করছিলোনা, মা তখন ওযু করছেন, মাকে গিয়ে অনুরোধ করলাম ‘মা, ফোনটা ধরে বলো, শুয়ে আছি’, ওযু করতে করতেই মা বলছেন ‘আমি ওযু করছি আর তুই আমাকে মিথ্যে বলতে বলছিস’ আমিও চিন্তায় পড়ে গেলাম, ফোনটা বেজেই চলেছে, সাথে সাথে তাই ‘মা, আমি বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ছি, তুমি এবার বলো – আমি শুয়ে আছি’ মা আমার দিকে গড়গড় চোখে তাকিয়ে আছেন, ফোনটার লাইন ততক্ষনে কেটে গ্যালো। পরক্ষনেই সেই ফোনটা আবার এলো এবার মাকে ফোনটা দিয়েই শুয়ে পড়লাম – মাও যথারীতি ফোনের লাইন-টা কেটে দিলেন। “খোকা এভাবে আমাকে দিয়ে আর কখনো মিথ্যা বলবার জন্য বলাবিনা” – রাতে মা’কে সরি বলেছিলাম, মা আর কিছুই বলেন নি।
মা’কে নিয়ে এরকম আমাদের সকলের জীবনে অনেক টুকিটাকি ঘটনা রয়েই গ্যাছে, খুব আনন্দিত হোই, আবেগে আপ্লুত হোই, ভালবাসাই সিক্ত হোই – সবটাই মা’য়ের উপলক্ষ।
আজ তাই এদিনে, কিছুনা’র আম্মুর জন্য আমাদের সকলের পক্ষ থেকে রইলো অনেক অনেক শুভকামনা। তিনি দীর্ঘজীবি হউন এ প্রার্থনাই করি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।