আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গত রাতে ঘুমাতে পারিনি! ওর কান্নায় আর...



বাংলাদেশের চ্যানেলগুলো টিউন করছিল সে, যাই শুনছি কেবল মিথ্যে আর বাড়াবাড়িতে ভরপুর এবং একপেশে বলে মনে হতে থাকে আমার। এর চেয়ে বিদেশী চ্যানেলগুলো ঢের ভালো অন্তত বোমা মেরে অন্যের নাম দেয়া কিংবা বোমায় আহত হয়ে... কাটাঘায়ে নুনের ছিটা দিতে হয় না। ... বৈশাখীতে এসে থামল সে...আমি অপেক্ষা করি তার বিরক্তি উৎপাদনের কিন্তু না সে থেমে গেলো, সংবাদটাতে আমিও মনোযোগী হলাম। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ওপর নির্মিত! নিহত পরিবারের সদস্যের নিয়ে। কেউ হারিয়েছে সদ্য বিবাহের স্বামী, সদ্যোজাত সন্তান হারিয়েছে পিতাকে কেউ হারিয়েছে স্বামী সন্তান উভয়কে।

যতদূর জানি সবমিলে ৭৩ জন। এরপরও নেত্রী বলেছেন তারা সফল! কোন ক্ষেত্রে সফল হত্যাকাণ্ডে নাকি রক্ষায়? হিংস্র, ভিনদেশী গুপ্তঘাতকদের রক্ষায় সফল? বাবার শোকে ছেলেও মারা যায় চারমাস পর। কার কবরে যাবে মা এবং স্ত্রী? কে অগ্রাধিকার পাবে? তারচেয়ে বড় প্রশ্ন কেউতো নেই সান্ত্বনা দেবার। হত্যাকাণ্ড শুরু হয় সকাল ১০টার পর। সকাল আটটায় ডিজি শাকিল ফোনে আশঙ্কার কথা জানান সরকারের ঊর্ধতনদের! তারা কী করলেন? এসব প্রশ্নে উত্তর দিতে পারেনি নেত্রী।

সেনা সদস্যদের প্রশ্নোত্তরের সেই রেকর্ড ইন্টারনেটের বদৗলতে তা আমরা জেনেছি। ... আমি কিছুতেই ভুলতে পারিছিলাম না, ঘুম থেকে উঠে ছেলে তার বাবার ছবির দিকে তাকিয়ে থাকে!... সম্প্রতি আমার ছেলের ভীষণ অসুখ হয়। ওকে কয়েকবার হাসপাতালে নিতে হয়। শেষে হাসপাতালের কাছাকাছি আপুর বাসায় নিয়ে রাখি। মাত্র দু'দিন, তাতেই আমার দুবছরেরও কম ছেলের যে প্রতিক্রিয়া আমি দেখলাম তাতে অবাক না হয়ে উপায় নাই।

দুদিন সে খুবই অসুস্থ তবু যেভাবে প্রতিমুহূর্তে বাবাকে স্মরণে রেখেছে.... এবং বাসায় ফেরার পর বাবাকে পেয়ে সে যা করলো....কথা বলবে না। সে কী কান্না! এরপর সে রীতিমতো সুস্থ! আমার নিজেরও মনে হয়েছিল কতোকাল বাড়ির বাইরে! অথচ যেই ছেলে আর কোনওদিন তার বাবাকে ফিরে পাবে না তাকে সান্ত্বনা দেবার লোক হয়ত আছে, কিন্তু সান্ত্বনাকি আছে? সেই বাবা! সে....ই বাবাকে কী পাওয়া যাবে? অপুর্ণাঙ্গ ভালোবাসা নিয়ে একধরণের বৈকল্য নিয়ে বেড়ে উঠবে এরা। নেত্রী বলছেন খুব ভালোভাবে হ্যান্ডেল করতে পেরেছেন তারা। হয়ত ঠিক এমনতো বলেছিল ডালিমরাও। অকালে পিতৃহারা এসব সন্তান যেদিন বড় হবে নেত্রীর মতো পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নেবে সেদিন বিবেচনা করা যাবে কতটুকু ঠিক ছিল তার ভূমিকা।

সে আমাকে তার পাশে যেতে বলে, খুব কষ্ট হচ্ছে তার, এ কষ্ট ব্যর্থতার! কিছুই করতে পারলাম না! নীরবে সয়ে গেলাম! তার অনুশোচনা। শোয়া থেকে উঠে গিয়ে কম্পিউটারে গান ছেড়ে দেয়, হায়দারের। আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া করিতে পারিনি চিৎকার.....বুকে চাপা নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার! সত্যিতো এ ধিক্কার দেয়া ছাড়া আর কীইবা করতে পেরেছি আমরা? গান শুনতে শুনতে সে শুয়ে পড়লো। আমাকে বলে আমাকে একটু সান্ত্বনা দেবে? আমি চেষ্টা করি বোঝাতে, আমাদের কী করার ছিল? সে নিজেও গাইতে শুরু করে আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া... তার সমস্ত মুখটা ভরে যায় অশ্রুতে। তাকে বোঝাতে চেষ্টা করি....যারা দেশকে ভালোবেসে সবাইকে ছেড়ে এক নির্বাসনের জীবনযাপন বেছে নেয়, তার নাম আর্মি।

....সরকারের বেধে দেয়া জনাকয়েক বাবা মা ছেলে সন্তান সহোদর ভাইবোন ছাড়া আর কারও সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে দেয়া হয় না ওদের। বাকীসব দেশের জনগণ। ওরা শেখে দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য জীবন দেয়াই ওদের একমাত্র মিশন। অথচ কোনও গৗরবজনক কাজের বিনিময় ছাড়া বড় মূল্যহীন জীবন দিতে হলো। আর তাতে পাশের দেশ হলো খুশিতে আত্মহারা! আর কোনওদিন সীমানা নিয়ে বিরোধে জড়াবে না বাঙলাদেশ।

মেরুদণ্ড সোজা করে শক্ত কথা বলবে না বাংলাদেশ। পদুয়া বা ছিটমহল নিয়ে, কিংবা সীমান্তে অবৈধ মাল আটকাতে সাহস করবে না বাংলাদেশ। .... ফিলিস্তিন কিংবা তুরস্ক, আফগানিস্তান ইরাক অথবা পাকিস্তানের মতো হতে যাচ্ছে আমাদের দশা? এসব ভাবতে সারারাত ঘুমাতে পারিনি। ফজরের আযানে তন্দ্রাটুকু টুটে গেলো। নামাজের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে মনে পড়লো আবার সেই কথা... শহীদ এক সেনা কর্মকর্তার স্ত্রীর কথা: তার স্বামী বলতো--আমার ছেলেকে নামাজী বানাবে, সে যেন ইসলামী ভাবধারার হয় এই দায়িত্বটুকু তোমার, বাকী সব দায়িত্ব নিয়েছিল সে।

এখন সে নেই ওর বাবা মা সব আমি। ...জানি না তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবো কি না। ....টাইপের কথা গুলো।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।