আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

’৭৩-এ যে দল ৭ বিরোধী এমপিকে সহ্য করেনি তারা এখন এক আমার দেশকে মানতে পারছে না



রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে সন্ত্রাসের ধারাবাহিকতা : গণতান্ত্রিক শাসনের কার্যকারিতা— শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, ফ্যাসিবাদী ও সন্ত্রাসী আওয়ামী সরকারের নির্যাতন এবং দেশবিরোধী তত্পরতা রুখতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই। আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ১৯৭৩ সালে মাত্র ৭ জন বিরোধীদলীয় এমপিকে মেনে নিতে পারেনি আওয়ামী লীগ। গঠন করেছিল বাকশাল। এখন তারা একটি পত্রিকাকে মেনে নিতে পারছে না। নাগরিক ফোরাম আয়োজিত আবদুল্লাহিল মাসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল আলোচনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা ও দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান এমপি, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন এমপি, ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক, শফিউল আলম প্রধান, রুহুল আমীন গাজী, শওকত হোসেন নিলু, মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী, ড. মাহবুবউল্লা, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, শামা ওবায়েদ প্রমুখ।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, গণতন্ত্রের লেবাসে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার একদলীয় শাসন চালাচ্ছে। দেশজুড়ে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত দেশবিরোধী চুক্তিগুলো ধামাচাপা দিতে সরকার একের পর এক ইস্যু তৈরি করছে। জামায়াত-শিবিরসহ বিরোধী দলের প্রতি হামলা-নির্যাতন, জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি, বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন, সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে হামলা-মামলা সবকিছুই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার নীলনকশার অংশ। সরকারের এ ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রুখতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই।

শেখ হাসিনা তার নিজের অস্তিত্ব ভারতের কাছে বিকিয়ে দিয়েছেন। বক্তারা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ অঘোষিতভাবে দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে চায়। বর্তমান যেসব ফ্যাসিবাদী পদক্ষেপ সরকার নিচ্ছে তা সেই একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এক একটি টেস্ট কেস। এ ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ড এখনই রুখতে না পারলে পরবর্তীতে তা কঠিন হয়ে পড়বে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে চারদলীয় জোটকে দায়িত্ব নিতে হবে সরকারের এই স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ১৯৭২ সাল থেকে শুরু হয়েছিল রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। বিনা বিচারে আটক রাখার বিধান তৈরি করে প্রথমে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস শুরু করেছিল আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিবাদী দল। তাদের কাছ থেকে গণতান্ত্রিক আচরণ আশা করা যায় না। তারা গণতন্ত্র হত্যাকারী।

১৯৭৩ সালে মাত্র ৭ জন বিরোধীদলীয় এমপিকে মেনে নিতে পারেনি আওয়ামী লীগ। গঠন করেছিল বাকশাল। এখন তারা একটি পত্রিকাকে মেনে নিতে পারছে না। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে ২৫টি মামলা দিয়েছে। তার ওপর হামলা চালিয়েছে তিনবার।

বর্তমান সরকার আসলে গণতন্ত্রের লেবাসে একদলীয় শাসন চালাচ্ছে। বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে কিনা সেই টেস্টটা করা দরকার। সরকারের অপকর্মের অগ্রযাত্রাকে মাঝপথে থামাতে না পারলে পরবর্তীতে তা আর প্রতিরোধ করা যাবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথের ক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হবে। তিনি বলেন, আদালতের রায়ে সবকিছু নির্ধারিত হয়ে যায় না।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা কোনো আদালতের রায়ে আসেনি। পঞ্চম সংশোধনী যদি অবৈধ হয় তাহলে বর্তমান আপিল বিভাগের বিচারপতিদের নিয়োগও অবৈধ। পঞ্চম সংশোধনীর পর এসব বিচারপতির নিয়োগ হয়েছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যেভাবে ভারতের কাছে নিজেকে সমর্পণ করেছেন এই কাজটি যদি তার বাবা করতেন তাহলে তাকে হয়তো মরতে হতো না। প্রধান বক্তার আলোচনায় মাহমুদুর রহমান বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ একটি ট্রানজিট রাষ্ট্র।

অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারত একই ধরনের সন্ত্রাসের শিকার। এ ধরনের বক্তব্যের পর তাদের স্বাধীনতার চেতনা নিয়ে যে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন। রাস্তা ও বন্দর ভাড়া দিয়ে আমরা চলব, এ ধরনের উদ্ভট চিন্তা কীভাবে অর্থমন্ত্রীর মাথায় এলো। তিন বলেন, বন্দর ভাড়া দিয়ে সর্বোচ্চ ৭ হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। অন্যদিকে বছরে আমাদের রফতানি আয় ১ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা।

ভারতকে ট্রানজিট ও বন্দর সুবিধা দিলে আগামী ১০ বছরে রফতানির ২৫ শতাংশ কমবে। অর্থনৈতিকভাবে এদেশকে পঙ্গু করতে ভারতকে ট্রানজিট দেয়ার পাঁয়তারা চলছে। বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র প্রমাণের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ ও ভারতে একই ধরনের সন্ত্রাস চলছে বলে বানোয়াট বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন মানবাধিকার লঙ্ঘনের রেকর্ড তৈরি হয়েছে। যারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার বিষয়ে সোচ্চার তাদের ওপর এখন ঝাঁপিয়ে পড়েছে সরকার।

কোনো দেশে যখন এ ধরনের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চলতে থাকে তখন আদালতেরই দায়িত্ব এর রাশ টেনে ধরা। Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।