আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছাত্রলীগ-যুবলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ১০

..............................

কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে গতকাল সোমবার ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়। ক্যাম্পাসে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আধিপত্য বিস্তার ও ভর্তি-বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয় বলে জানা গেছে। তবে দুই সংগঠনের নেতারাই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, কলেজ শাখা ছাত্রলীগের এনামুল-সাইফুল পক্ষের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসে ছিলেন। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহর যুবলীগের হান্নান-জাহিদ পক্ষের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসে ঢোকেন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ এলে হান্নানের পক্ষ কলেজের পূর্ব পাশে ও সাইফুলের পক্ষের নেতা-কর্মীরা পশ্চিম পাশে অবস্থান নেন। আধা ঘণ্টা পর ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে রামদা, হাঁসুয়া, লাঠিসোঁটা নিয়ে উভয় পক্ষ আবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

এ পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসে আরও পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশের সামনেই দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা পাল্টাপাল্টি লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় পুলিশ টিয়ার গ্যাসের কয়েকটি শেল ছুড়ে নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১০ জন নেতা-কর্মী আহত হন। তাঁদের মধ্যে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন (৩২) ও কচিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

যুবলীগের কর্মী কাশেম (৩০) স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিত্সাধীন। সরোয়ার হোসেনসহ (৩০) আহত অন্য সাতজন প্রাথমিক চিকিত্সা নিয়েছেন। কলেজ ক্যাম্পাসের সামনে সনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এক কর্মচারী বলেন, সংঘর্ষের সময় তিনি এক ছাত্রকে কলেজের মধ্যে ককটেল নিক্ষেপ করতে দেখেছেন। তখন তিনি দুটি গুলির শব্দও শুনতে পান। এ সংঘর্ষের ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যায় পুলিশ কলেজের খেলার মাঠ থেকে সদর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু তৈয়ব ওরফে বাদশাকে আটক করেছে।

ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক আহত আবদুল্লাহ আল মামুন মোবাইল ফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ভর্তি-বাণিজ্যের অভিযোগ সত্য নয়। তাঁদের পক্ষের নেতা-কর্মীরা কলেজে মিছিল করছিলেন। এ সময় হান্নানের পক্ষের নেতা-কর্মীরা তাঁদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালান। শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হান্নান বিশ্বাস গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘রোববার সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে আমরা একটি মিছিল বের করি। কলেজের সামনে গেলে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের ওপর হামলা করেন।

’ কলেজের অধ্যক্ষ হাসানুজ্জামান বলেন, কলেজে তিনি দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা শুনেছেন। তবে তাতে প্রথম বর্ষে ভর্তির মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণসহ স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড বিঘ্নিত হয়নি। কুষ্টিয়া পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার গ্যাসের আটটি শেল নিক্ষেপ করে। পরে ঘটনাস্থল থেকে চারটি বড় হাঁসুয়া, একটি রামদা, চারটি হকিস্টিক ও একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়। ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

এর আগে গত রোববার সকালে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তির মৌখিক পরীক্ষা বন্ধ করে দেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের মারধরের শিকার হন প্রথম আলো ও দেশ টিভির কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি। সাংবাদিকদের রক্ষা করতে গিয়ে এক শিক্ষকও আহত হন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।