একটা গোপন কথা বলি আজ। সবাই আমাকে যতটা চুপচাপ আর বোকা মনে করে আমি আসলে ওমন না। কথা বলিনা, হয়ত সাহস পাইনা; কিন্তু কথা ঠিকই জানি। বলতে পারিনা তো কি, ভাবছি না বলা কথাগুলো লিখব এখন। এবার বুঝবে মজা।
"উউউউউউউউ........... মালডা হালার জব্বর ছিলরে। আল্লার কি কুদরত, আর আমার আট কপাল্লিয়া ভাগ্য। অতক্ষণ ওরে একটু দূর থেকে দেখতাছিলাম, গন্ডগোলডা লাগতেই আমি ঠিকই ওরে ঠাহর করতাম পারছি। ভয়ে কাপতাছিল ওয়। আমি জরাইয়া ধরলাম।
উফ. . . মাল একটা। . . . . . । . . . . . . . . । . . . . . . . । জীবনে এই সুযোগ পামু কল্পনাও করতাম পারছি না।
পিংকি (ছদ্দনাম) অবশ্য কানতাছিল। হুড়াহুড়ি আর অন্ধকারের মধ্যে আমি ওরে জাবরাইয়া ধইরা রাখছিলাম সব শক্তি দিয়া। ওরে চুমাও খাইছি। কইছি চল দুইজন বাইর হইয়া যাই। রাজি হয় নাই ও।
বান্ধবীগরে খোজে আর আমারে বার বার ধাক্কা মারতাছিল। পিংকিরে কইলাম যে আমি ওরে ভালোবাসি। ও উত্তর দেয় 'ছোটলোক। ভালোবাসার নমুনা তো দেখলাম। ' চিন্তা কর শালীর সাহস কত।
এর পর আর আমারে আটকায় কে। যে দুই মিনিট সময় পাইছিলাম পুরা সুদে আসলে উসুল কইরা লইছি। আর একটু ওইলে বিয়া করার সাধটাও মিটাইয়া দিতে পারতাম। "
-পিংকির ক্লাসমেট খসরু (ছদ্দনাম) এভাবেই বলছিল সেদিন আনন্দমোহন কলেজে তার জীবনের সেরা একটা ঘটনার বিবরন। রসালো কারে কয়, ওর চোখে মুখে রস ঝরছিল যেন।
চকচক করছিল খসরুর চোখ। খসরু গর্বীত সেদিন পিংকিকে এভাবে পেয়ে। আর এ ঘটনা সে কয়েকশ জনকে বলেছে এভাবে রসিয়ে রসিয়ে। খসরু আসলেই ভাগ্যবান।
শরিফ নিরীহ টাইপ পোলা।
পিংকির প্রায় বন্ধু (বন্ধু বন্ধু একটা ভাব আছে। ক্লাশে টুকটাক কথা হয়। এর বেশিদুর আগানোর সাহস নাই শরিফের। তবে পিংকিকে নিয়ে স্বপ্ন দখতে কোনই কার্পন্য নাই তার। ) ।
খসরুর রসালো কাহিনী শুনতে হয়েছিল শরিফেরও। কিছুই করার নেই। বুকটা ফেটে গেলেও খসরুকে কিছু বলার ক্ষমতা শরিফের নেই, বরং ওর কথায় তাল দিয়েছিল সে। খসরু, শরিফ, পিংকি সবাই আনন্দমোহন কলেজে গণিতে এমএসসি ১ম বর্ষে পড়ে। তবে খসরু একটু আলাদা।
আলাদা তো বটেই। ও ময়নসিংহের স্থানীয় ছেলে, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের সংগেও যুক্ত।
ওই ঘটনার ৩/৪ দিন পর পিংকি ক্লাসে এসেছিল। এই ঘটনার পর দেখা হলে পিংকির সাথে খসরু কেমন ব্যবহার করে তা দেখার খুব শখ ছিল শরিফের । শখ মিটল।
অন্যদিন পিংকির সাথে কথা না বললেও সেদিন খসরু বেশ গর্বের সাথেই পিংকির সামনে হাজির হয়েছিল। 'কিরম আছ?' 'ভালো'-এপাশ-ওপাশ তাকিয়েছিল পিংকি বার দুয়েক। তার পরে স্বাভাবিক ভাবেই 'ভালো' বলে কেটে পড়ে সে। খসরুর ঠোটে অনেক্ষণ ধরে লেগে থাকা মুচকি হাসিটার মধ্য থেকে শব্দ বেরুতে থাকে। ও হাসছে।
এটা আমাদের দেশে খবই স্বাভাবিক ঘটনা।
তবে ঘটনাটা সত্য। শুধু নামগুলো সাজানো। আসল নাম দিলে খসরুর কোন আপত্তি থাকবে এই ভয়ে নয়। ভয়টা পিংকি আর শরিফদের নিয়ে।
ওদের এই কথাগুলো কখনোই কেউ আসল নামে শুনতে পারবে না। শুনবে খসরুদের সেই হাসির স্বরটাই।
গতকাল শরিফের সঙ্গে কথা হয় আমার। কাল অগ্রণী ব্যাংকের চাকরির পরীক্ষা দিতে ঢাকায় এসেছিল সে। আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে ওর সঙ্গে কথা হয়।
আনন্দমোহন কলেজের ছাত্র শুনে ওই দিনের কথা জিজ্ঞেস করেছিলাম। কথায় কথায় পুরো গল্পটা শুনি। এর অনেকটাই অবশ্য ও মুখ ফুটে বলেনি, আমি অনুমান করে নিয়েছিলাম। নিউজ লিংক-প্রথম আলো
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।