বাংলাদেশ ব্লগারস এসোসিয়েশন সদস্য নং: ১০ । facebook.com/milton3d
সাত সকালে ঘুম থেকে উঠে তাড়াতাড়ি ফ্রেশরুমে ঢুকি প্রয়োজনীয় কাজগুলো সারতে। কারণ অফিস যেতে হবে। তার আগে একটু পেপারে চোখ বুলিয়ে নেই। কিন্তু আজ দরজা খুলে বারান্দায় পেপার না পেয়ে ফ্রেশরুমে ঢুকে যাই।
তাড়াতাড়ি করে নাস্তার টেবিলে বসি। কিন্তু আজ নাকি বুয়া আসেনি তাই নাস্তাতেও একটু দেরী হয়েছে। অগত্যা কোনমত একটা রুটি খেয়ে দৌড়ে বের হয়ে পড়ি রাস্তায়। বাসষ্ট্যান্ডে এসে দেখি বাসের যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন। অপেক্ষার পালা শেষে, মনে হয়, “এটা কোন ব্যাপারই না, এমনটা ঘটতেই পারে।
”
অবশেষে বাস পেয়ে হুড়পাড় করে উঠি। সিট না পেয়ে বাসের রড ধরে ঝুলি। প্রধানমন্ত্রীর কার্য্যালয়ের সামনে বিশাল জ্যাম, সার্জেন্টমশাই আগারগাঁও দিক থেকে আসা গাড়ী গুলোকে মোটেই পাত্তা দিচ্ছে না। প্রায়োরিটি দিচ্ছে জাহাঙ্গীর গেট হতে ফার্মগেটের গাড়ী গুলোকে। বাসের রডে ঝুলন্ত আমি নিজের মনকে প্রবোধ দেই, “এটা কোন ব্যাপারই না, এমনটা ঘটতেই পারে”।
”
মহাখালী ষ্ট্যান্ডে রেল ক্রসিং এ বিশাল জ্যাম। কিছু যাত্রী নেমে গেলো। অতি উৎসাহী একযাত্রীর হাতের ধাক্কা লেগে আমার চশমাটা নাকের ডগার কাছাকাছি পিছলে গেলো। সামনে একটা সিট খালি হতেই তাড়াতাড়ি বসতে যেতেই দেখি আরেকজন বসতে চাইছে। ভদ্রতাবশতঃ তাকে বসতে দিলাম।
আমাকে শুধু একবার আপাদমস্তক দেখলেন উনি। ভাবখানা এমন যে, আমি বড় ভুল করে ফেলেছি। জ্যাম ছাড়তেই, সব বাস আশ-পাশ দিয়ে চলে গেলেও আমাদের বাসের ড্রাইভার যাচ্ছে না, বসেই আছে। প্যাসেঞ্জাররা সবাই গালাগালি করছে তাকে। মনে মনে বলি, “এটা কোন ব্যাপারই না, এমনটা ঘটতেই পারে।
”
বাস থেকে নেমে বেশী ভাড়া দিয়ে রিক্সা ভাড়া করলাম। এলোপাথাড়ি রিক্সা টানতে গিয়ে দু’বার চেইন পড়লো। চেইন তুলতে তুলতে রিক্সাওয়ালা কয়েক কিস্তি রিক্সার মালিককে গালি দিলো। কিছুদুর আসার পরে আমি রিক্সাওয়ালাকে বললাম, “ভাই সামনের দোকানে একটু থামাবেন? একটা কাগজ ফটোকপি করবো। ” জবাবে বলল, ”ভাই থামলে দেরী হইবো, ভাড়া বেশী দেওন লাগবো।
” কথা শুনে মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। বললাম, “আপনার চেইন পড়লে আমার সময় নষ্ট হয় না? তখন কি ভাড়া কম রাখেন?” রিক্সাওয়ালা পিছনঘুরে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো। অনেক কষ্টে মাথা ঠান্ডা করে নিজের মনকে সান্তনা দিলাম “এটা কোন ব্যাপারই না, এমনটা ঘটতেই পারে”। ”
অফিসে ঢুকেই শুনি বস নাকি তলব করেছিলেন। দরজা নক করেই তার রুমে ঢুকলাম।
অনেক কথা শুনালেন। আমি নাকি কোন কাজই ঠিক মত করি না। তার বিক্ষিপ্ত কথা শুনে শুধু বুঝলাম, একটা ফাইল উনি খুজে পাচ্ছেন না। বুঝলাম না, এখানে আমার করার কি আছে? তবুও তার সাথে আমিও খুঁজতে লাগলাম। ওটা পাওয়া গেলো ওনার সাইড শেলফে যেখানে উনিই রেখেছিলেন।
ওটা পাওয়ার পর আর ওনার মুখের দিকে তাকালাম না কারণ উনি যদি লজ্জা পেয়ে যায়? তাড়াতাড়ি রুম থেকে বের হয়ে আসলাম। শুধু শুধু কিছুক্ষণ গালিগালাজ শুনলাম। কি আর করবো, মনকে প্রবোধ দিলাম, "এটা কোন ব্যাপারই না, এমনটা ঘটতেই পারে। "
এমন করেই শুরু হয় আমার দিনগুলো। কোনকিছুই মিলাতে পারছি না।
তখন শুধু ঘুরে ফিরে একটা কথাই মনে আসছে। যখন কোন কিছু মিলাতে পারিনা, তখন নিজের অক্ষমতাকে ঢাকার জন্য নিজের মনকে বুঝ দেই, "এটা কোন ব্যাপারই না, এমনটা ঘটতেই পারে। "
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।