আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চা এর উপরে টিকে থাকা এক ছেলের কাহিনী - আমার নিজের কাহিনী

আমি ব্লগ লিখি মূলত - আমার স্মৃতি,আমার চিন্তা-ভাবনা এগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য।

শিরোনাম দেখে যারা ভাবছেন বিলিভ ইট অর নট টাইপ কোন গল্প ফেঁদেছে ছোকরা। তাদের জন্য আমার সমবেদনা, কারন তাদের ধারনা পুরাপুরি ভুল। চা উপর টিকে থাকা ছেলেটা আসলে আমি। এই গল্পের শুরু হয়েছিল, যখন আমি খুব ছোট, তখন।

খুব ছোট থাকতেই, আব্বুর চা খাওয়ার সময় পিরিচে করে চা খেতাম। এভাবেই শুরু হয়েছিল। এর পর আর কখনো পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নাই। এই ফাকে বলে রাখি, আমার আব্বু নিজেও একজন টি টেস্টার। কাজের কথায় আসি।

এখন আমার অবস্হা এমন হয়েছে যে, দিনে কয় কাপ চা খাই, আমি ঠিক করে বলতে পারি না। অনেকক্ষন চিন্তা করে বলতে হয়। এই সমস্যাটা আরো প্রকট আকার ধারন করেছে, কারন আমাদের অফিসে যে ছেলে দুটো আছে, তারা একটু পর পর এসে জিজ্ঞেস করে, স্যার চা দিমু? আগে যে ছেলেট ছিল (ছুটিতে গেছে), সে জানত আমি কখন কখন চা খাই। তাই এই ব্যাপারে ডিস্টার্ব করত না। কিন্ত এরা নতুন, তাই এই মধুর যন্ত্রনা !!! একটা মানুষ অতিরিক্ত চা খায়, কিভাবে খায় - এই গল্প শুনতে নিশ্চই কারো ভালো লাগবে না।

তাই আমি সেদিকে যাব না। আমি যখন ময়মনসিংহে নানা বাড়ী যাই, তখন প্রায়ই একটা মজার ঘটনা ঘটে। দেখা যায়, আমি চা খেতে খেতে খালাদের সাথে গল্প করছি, এমন সময় কাজের মেয়েটা এসে আমাকে জিজ্ঞেস করে, ভাইয়া চা তো আবার খাইবেন, না? এর অর্থ হচ্ছে, সে খালাদের জন্য চা বানাবে এখন, আমি খাব কিনা। অথচ, আমি তখন অলরেডি চা খাচ্ছি। আমার চা প্রীতি সবাই জানে - তাই কাজের মেয়ের এ জিজ্ঞাসা।

আজ পর্যন্ত কখনো এই জিজ্ঞাসার উত্তর "না" বলি নাই - সবসময় হ্যা। আরেকটি ঘটনা - সবে ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি। ক্যাম্পাসে যাব, বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। যেহেতু নতুন, অনেক কিছুই চিনি না। যাই হোক, একটা চা এর টং এ দাড়িয়ে এক কাপ চা খেলাম।

অসাধারন ছিল চা টা। দিলাম আর এককাপ চা এর অর্ডার। হুমম! আগের চেয়ে বেশী ভালো লাগল এখন। কি করা যায়, এতো মহা ফ্যাসাদের পড়লাম। দিলাম আর এক কাপ এর অর্ডার।

জীবনে অনেক ধরনের চা ই তো খেয়েছি, কখনো তো এরকম হয় নাই। এসব ভাবতে ভাবতে আমার চা শেষ হয়ে গেল। না, কোন কথা নাই, কী আছে জীবনে। আর এককাপ খেয়েই নিই। অর্ডার ও দিলাম, কিন্তু হায়।

দেখি, ভার্সিটির বেরসিক বাস আসতেছে। অগত্যা বাদ দিলাম। না না, চা এর অর্ডার বাদ দিলাম, বাস বাদ দেই নাই। নতুন তো, ক্লাস মিস দিতে কেমন লাগে, তখনো জানি না। পরবর্তীতিতে কত ক্লাস যে মিস দিয়েছি, তার ইয়েত্তা নেই।

কিন্ত ঐ চা টা আমি আজো মিস করি। আসলে এই লেখাটা যদি আমার রুমমেট লিখত, তা হলে বেশী ভালো হত। ও অনেক কথা বলতে পারত - আমার চা সমাচার নিয়ে। তবে ও ছিলো আমার পুরাপুরি উলটো - জোর করেও এক কাপ চা খাওয়ানো যেত না বিঃদ্রঃ এই লেখাটা লিখতে আমার ২কাপ চা শেষ হইছে। ভুল বললাম, ২ কাপ না, ২ মগ।



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।