আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লাশ !!! -ভয়ানক অস্তিত্বের নাম (বিধাতার নষ্ট খেলা )

বাংলার আলো-জলে ধূলো মেখে বেড়ে ওঠা মুক্তি

সম্পর্ক খুব নিষ্ঠুর একটা জিনিস। মানুষ কাছে থেকে সম্পর্কের যে মূল্যায়ন করে দুই মিনিটের ব্যবধানেই তা কতো নিষ্ঠুর রূপ ধারণ করে তা ভাবাটাই যেন অবিশ্বাস্য কিন্তু বাস্তব। যে সহধর্মীনির সাথে অনায়াসে হাজারটা রাত পার করা যায় দেহের উত্তাপ ভাগ করে নিয়ে , নিমিষেই ছোট্ট একটু পার্থক্যের কারণে সেই সম্পর্কের ধরণ বদলে যায়। সম্বোধন বদলে যায়। এক কথায় সম্পর্কটাই বদলে যায় ।

যে প্রিয় মুখগুলো ছাড়া একটা সেকেন্ড নিজের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না, নিমিষেই তাদের রূপান্তর ঘটলে তখন যত দ্রুত সম্ভব ঘর থেকে বের করে দেয়ার কাজ শুরু হয়ে যায়। আগের রাতেই যে শয্যাসঙ্গী উপকুলের এলোমেলো দমকা বাতাসের উত্তপ্ত দোলা খেয়েছে, সেই মানুষটিই তখন অন্ধকারে শীতল দেহ স্পর্শ করে চিতকার করে ঘর থেকে বের হয়ে যায়.....লাশ..!!!!!!! কী ভয়ানক একটা অস্তিত্বের নাম । যে মায়ের নাড়ী ছিড়ে এসে আজও পৃথিবীকে সচল রেখে চলেছি আমরা , জীবনের জয়গান গেয়ে যাচ্ছি , মানবতার আবরনে ঢেকে দিতে চাচ্ছি এই পৃথিবী। সেই আমরাই , সেই আমরাই তাকে দ্রুত বিছানা থেকে খাটিয়ায় নামাব। তারপর অন্ধকার কবর কিংবা জ্বলন্ত আগুনে নিক্ষিপ্ত করব তাকে।

যখন শুধুমাত্র স্পন্দন থেমে যাবে মহীয়সী মায়ের। পার্থক্য শুধু স্পন্দনগুলো। মাটিতে যাকে পুতে রাখছি কিংবা আগুনে যাকে ঝলসাচ্ছি -সেও আমার জন্মদাত্রী , যে আমাকে পৃথিবীর আলো দান করেছে। সারা জীবন যারা আমাদের কল্যাণে বিমোহিত থেকেছেন , আমরা কতো দ্রুতই তাদেরকে নিষ্ঠুর প্রতিদান দিয়ে চলেছি । এবং আমরা জানি , আমাদেও ভাগ্যেও একই পরিণতি অপেক্ষা করছে।

কারণ তখন আমরা আর নাম সর্বস্ব ধ্রুব থাকব না, কিংবা বন্ধনের পরিচয় বাবা, মা, জীবন সাথী এসব কিছুই থাকবে না। তখন আমরা হয়ে যাব লাশ্..। জীবনানন্দ , হুমায়ন আজাদ কিংবা তাজউদ্দিনরা যেমন স্পন্দন থামার সাথে সাথেই হারিয়েছে মানবসৃষ্ট নাম, পরিচয় ও পরিচিতি চিহ্ন। তখন তারা পরিবর্তিত হয়েছে ... তারা হয়েছে -লাশ!!! এক ভয়ানক অস্তিত্ব। দ্রুত তাদের বিদায় করে দেয়া হয়েছে এই সবুজের বুক থেকে।

অথচ এই সবুজের রূপ-রস-অস্তিতকে কত ভাবেই না রংগিন করে গেছেন তারা। তারপরও তাদেরকে বিদায় করে দেয়া হয়েছে শুধুমাত্র একটা কারণে । তাদের স্পন্দন থেমে গেছে, তারা লাশ হয়ে গেছে!! একটা মাত্র শব্দ মানুষকে কতটা নিষ্ঠুর করে তুলেছে। সম্পর্কগুলো যে কি নিষ্ঠুর অভিনয় তার মুখোশ উম্মোচিত করেছে। আমি লাশ হতে চাই না , আমি ধ্রুব হয়েই থাকতে চাই অনন্তকাল ।

আমি কোন লাশ দেখতে চাই না, আমি চাই সবার স্বতন্ত্র পরিচয় নিয়েই সবাই বেচে থাক অনন্তকাল , অনন্তকাল ধরে...। নিষ্ঠুর এই অভিনয়ের পরিসমাপ্তি ঘটুক, নচেত ধ্বংস হয়ে যাক সমাজ নামের শৃঙ্খল, বিনাস ঘটুক মহাবিধাতা ও তার নষ্ট খেলার। নিষ্ঠুর প্রতারণার পরিসমাপ্তি ঘটুক, বিলুপ্ত হয়ে যাক -লাশ.. ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।