পরিবর্তনের জন্য লেখালেখি
হঠাৎ করেই নিজের নামটা লিখে আন্তর্জালে খোঁজ দিয়েছিলাম আজকে । তার ফলে অনেক উদ্ভট সব লিংকু এলো কিন্তু হাসতে হাসতে উলটে পড়ে গেছি নিচেরটা দেখে ।
সামহোয়ার ইনে যারা আমার লেখার সাথে সামান্যতম পরিচিত , তাঁরা খুবই ভালো করে জানেন যে, যুক্তি, বুদ্ধি, বিবেক ও বিবেচনাহীন চরম্পন্থা অবলম্বন এর প্রতি আমি কি ভীষণ রকমের কড়া ! যারা কূটনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি কিংবা রণনীতির দোহাই দিয়ে অন্যদেশের উপর আগ্রাসন চালায় , তাদের আমি ঘৃণা করি। আমার কথা হইলো, বেটার লিভ এন্ড লেট লিভ।
এজন্য পোস্টটার নিচের অংশ পড়ে হাসি থামানো মুশকিল হয়ে গেছে!
লোটা কম্বলের ভোম্বলের বানী
আমাদের ন্যাশনাল ইন্টিগ্রীটিকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন চরম হিন্দুবিদ্বেষী এই RADICAL ISLAMIST মহিলা রাগ ইমন - এতে আপনি খুশি বাকিদের সাথে? এই মহিলা এর আগেও আমাদের ফ্ল্যাগ নিয়ে উল্টোপাল্টা কথা বলেছিল।
ভারতের ফ্ল্যাগ নিয়ে তো দূরের কথা, আমি ইউটোপিয়ার ফ্ল্যাগ নিয়েও কোন উলটা পালটা কেন করবো, কোথায় করতে পারি আমার মাথায় আসে নাই। সে যাই হোক , চরম হিন্দুবিদ্বেষী র্যাডিক্যাল ইসলামিস্ট --- এত গুলা বিশেষণের পরে আমারে নুবেল কেন দেওয়া হইপে না , ঝাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন , কেনু কেনু কেনু?
ঐখানে দেখলাম এই বিশাল আবিষ্কারটি করেছেন জনৈক অপরাজিত। তিনি যে নির্বোধ চিন্তা ভাবনায় আর না জেনে কথা বলায় অপরাজিত, তার এই মন্তব্য পড়ে আমার ধারণা বদ্ধমূল হয়েছে। লোটাকম্বলে আগে কখনো যাই নাই। এইটা কি? কোন জায়গা? যেই জায়গায় আমি জীবনে কোন দিন যাই নাই, আর যাবোও না ( আজকে নিজের নামের লিংক না পেলে জানতেও পারতাম না এই নামে মুজতবা আলীর বই ছাড়া আর কোন কিছু আছে ) সেইখানে গিয়ে কান্না কাটি করে কেনু লুকে?
যারা কেন্দে বুক ভাসিয়েছেন তাদের কাউকেই দেখলাম না আমার যেই পোস্ট থেকে আমার এই খেতাব প্রাপ্তী ( একটা মিলাদ কি দিব ? ) সেই এ শালার বাঙ্গাল ব্যড়া ঘাউরা চিজ হ্যায় না? লেখায় কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করতে ।
ভারতীয় কেউই ওখানে তথ্য কিংবা যুক্তি দিয়ে প্রমান করলেন না যে নির্মম সত্য গুলো আমি মনে বড় কষ্ট আর জ্বালা নিয়ে লিখেছি সেই লেখা আমার কেন লেখা উচিত হবে না । আমার কোন কথাটা ভুল বা মিথ্যা সেইটাও কেউ বলে নাই।
" কয়েকটি লাইনের জন্য রিপোর্টেড" বলে কেটে পড়েছেন ।
দীপঙ্কর , টিপাইমুখে বাঁধ হলে বাংলাদেশ শুকিয়ে মরুভূমি হয়ে যাবে , কথাটা কি মিথ্যা ? চীন বাঁধ দিলে বিবেক জেগে উঠে , বাংলাদেশ মরলে আপনাদের প্রতিবাদী মন কেন জেগে উঠে না ?
ভারত আর বার্মা মিলে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার বেশির ভাগটুকু দখলের আবেদন জানিয়েছে , এইটা কি মিথ্যা ?
নাহ, কোনটাই মিথ্যা নয় , তারপরেও আমি ওই পোস্টের সারা শরীর জুড়ে বার বার বলে গেছি প্রতিরোধের কথা , প্রতি আক্রমনের কথা একবারও বলিনি । বলেছি নিজেদের বাঁচার লড়াই এ সামিল হতে , কিন্তু ভারতে গিয়ে বোমা মেরে আসতে বলিনি।
অপরাজিত, আপনার কেন মনে হলো আমি ভারত আক্রমণ করতে চাই?
নিজেরা সারাদিন অন্যরটা লুটে খাওয়ার সরকারের অধীনে থাকেন বলেই কি বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় বাঙালী নিজেরটা নিজে চাষ বাস করে খেতে পেলেই খুশি ? সে অন্যের দিকে হাত বাড়ায় না!
ধিক আপনাদের এই সংকীর্ণতাকে । প্রতিবেশী পাকিস্তানের সাথে পান থেকে চুল খসলেই যুদ্ধ যুদ্ধ খেলাটা আপনাদের স্বভাব । কোথায় কোন গরীবের বুক খালি হইলো তাতে আপনাদের মনে হয় না কিছু যায় আসে । নইলে বি এস এফ দিয়ে আপনার বাড়ির উঠান থেকে যারা আমাদের গরীব বাঙ্গাল গুলার শরীরে গুলি বিধিয়ে টার্গেট প্র্যাক্টিস করে , তাদেরকে আপনারা সবার আগে উঠান থেকে তাড়াইতেন । ফারাক্কা রাজনীতি বন্ধে দিল্লী সরকারকে চাপের মুখে ফেলতেন।
ওহ হো ভুলে গেছি , আপনাদের তো সেই ক্ষমতাই নেই! পশ্চিম বাংলার বাইরে ভারতের বাঙালী বাঘ কেবল মেউ মেউই করতে পারে , দিল্লীর কাছে গেলেই মেরুদন্ডের সমস্ত বেলুন ফুস!
সেভেন সিস্টারকে স্বাধীন করে দেওয়ার আশঙ্কায় আপনার ইন্টেগ্রিটি জেগে ওঠে কিন্তু , প্রতিবেশী যখন চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ১০০ কোটি ভালো মানুষের দেশ ভারত এর দিল্লী সরকার বাংলাদেশের সাথে কি নারকীয় আচরণ করছে , তখন দিল্লীর ধামা ধরার জন্য ছাড়া আপনাদের ইন্টেগ্রিটি কোথায় থাকে ?
চাইলে আমরা পূবে ভারতের সেভেন সিস্টারকে স্বাধীন করে দিতে পারি, সেটা কূটচাল।
কেবল এই লাইন্টাই চোখে পড়লো ? সারা পোস্ট জুড়ে আমি যে বার বার উল্লেখ করে গেলাম যে বাঙ্গালী দুবেলা দুমুঠো খেতে পেলে আর কিছু চায় না , অন্যের সম্পদের উপর আক্রমণ করে না - আমাদের এই গুণগুলাই আমাদের শক্তি - এইটা চোখে পড়লো না?
আমরা নিজে দু মুঠো খেতে পেলেই অন্য কারো পাতে হাত বাড়াই না ।
উপরের এই লাইনটা চোখে পড়লো না ? কেন এইটাকে হাইলাইট করলেন না? কারণ একটাই। আপনি নিজেও জানেন , আমার পোস্টে বলা কথা গুলা মিথ্যে না । দীপঙ্কর বেড়া ভাঙার কথা বলেছেন , দিল্লী যখন আমাদের গলায় পা চেপে ধরে মেরে ফেলতে চায়, তখন সেই পায়ে লাথি না মেরে " সর্ব ভারতীয় ইন্টেগ্রিটির " দোহাই দিলে আমরাই বা কি করে বুঝব আপনারা বেড়া ভাঙতে চান?
অতনু ব্যানার্জী , পলিটিক্যাল থেকে ফিনানশিয়াল সব দিক থেকেই থেকে বাংলাদেশের অবস্থান আর ভারতের অবস্থান এ আকাশ পাতাল তফাৎ দেখতে পেয়েছেন।
তা তো বটেই , ভারত হইলো সেই দেশ যেই দেশ মহাশূন্যে রকেট পাঠায় কিন্তু সেভেন সিস্টারকে খাওয়াইতে পারে না।
আমাদের বাংলাদেশের খাবার আর পণ্য দিয়ে সেভেন সিস্টার বাঁচে ।
আমাদের " বাংলা তেল না হলে" আপনাদের পশ্চিম বঙ্গে কৃষিযন্ত্র চলে না ।
কিন্তু তারপরেও নিউক্লিয়ার থাপ্পড় খাওয়ার ভয়ে দিল্লীর দাদাগিরি আপনারা মুখ বুঁজে সহ্য করেন , একটা ন্যুনতম প্রতিবাদ করেন না , " টিপাই মুখি আগ্রাসন বন্ধ হোক। "
ভয় পাবেন না , দীপঙ্কর ! আপনার অতিলোভী দিল্লী সরকারকে নিশ্চিন্ত করুন, আমরা ভদ্র জাতি ।
সেভেন সিস্টারকে আপনারা খাওয়াতে না পারেন, আমরা খাওয়াবো । কিন্তু ভারতের কাছ থেকে স্বাধীন হওয়ার কূটবুদ্ধি দেব না । ওইটা সেভেন সিস্টারের নিজস্ব বিবেচনা , আমাদের সেইখানে বলার কিছুই নাই। আসেন, আমরা বরং বেড়াই ভাঙি ।
বেড়াজাল ভাঙার সংজ্ঞা কি ভাই দীপঙ্কর ? আমাদের পদ্মা যমুনা শুকিয়ে মরুভূমি হয়ে যাবে আর আমরা প্রতিবছর দুই দেশে বইমেলা করে হৃদ্যতা বাড়াবো?
দয়া করে , ঢাকাকে দিল্লী বলে ভুল করবেন না ।
সিকিম নামের একটি স্বাধীন দেশকে দখল করে নেওয়ার ইতিহাস আপনাদের আছে , আমরা অন্যের ঘর লুট করে নিজের ঘর সাজাই না ।
বাংলাদেশ আর পাকিস্তানকে এক করে দেখার চক্ষুটাও ছাড়ুন। বাঙ্গালী দুর্বলের পিঠে ঝাপিয়ে বীরত্ব দেখাতে পছন্দ করে না । এই ব্লগে মন্তব্য করার পূর্ণ স্বাধীনতা থাকার পরেও নিজের চিলেকোঠায় গিয়ে কান্দাকাটি আর গীবতের বাহার দেখে বার বার একটি কথাই মনে পড়ে যায়,
" অত্যাচারী চিরকালই ভীরু। "
কথাটা " পাপীর ক্ষেত্রেও সমান প্রযোগ্য , যে জানে সে পাপের ভাগীদার, তার ন্যায়ের কণ্ঠ কখনো উঁচু হয় না "।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।