আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শেষ বিকেলে



শেষ বিকেলে এক পশলা বৃস্টি ,এক টুকরো বাংলাদেশকেই মনে করিয়ে দিল। বড় রাস্তাটার পাশ দিয়ে আস্তে আস্তে হাটতে থাকে আরিফ। চারিদিকে অচেনা মানুষেরা ছুটে চলেছে,একমাত্র তারই কোনো তাড়া নেই। চার বছর আগে হলেও খুব কস্ট লাগতো যখন সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে চলে আসতে হলো । মা কি খুব বেশি কান্নাকাটি করছিলো ঐদিন?মায়ের কান্নাভেজা মুখটাও আস্তে আস্তে ঝাপসা হয়ে এসেছে।

সেই প্রিয় মুখগুলো দেখা হয়নি অনেকদিন, আর কখনো দেখা হবে কিনা সেটাও জানা নেই। সারাদিনের পরিশ্রম শেষে অনেকক্ষন স্মৃতি হাতড়ানো সেটাও অনেকদিন আগেরকথা ,এখন হৃদয় অনেকটাই আবেগশূন্য হয়ে এসেছে। একদিক থেকে ভালোই হয়েছে কস্ট অনেক কম হয়। অনেকের চেয়েই তো ভালো আছি ,মনে মনে সান্ত্বনা খুজে সে। এখানে এক রেস্তোরায় কাজ করে সে ,সাথে যারা এসেছিলো তাদের অনেকেই তো পুলিশের হাতে ধরা খেয়ে এখন জেলের ভিতরে পঁচে মরছে।

দালাল ভূয়া ভিসা হাতে ধরিয়ে দিয়ে ভেগে গেছে অনেক আগেই,পালিয়ে বেড়ানোই এখন নিয়তি। অনেক টাকা কামানোর স্বপ্নও ভেঙে গেছে অনেক আগেই,বেচে থাকাটাই যেখানে আসল সেখানে অন্য কিছুর স্বপ্ন দেখার সময় কোথায়?বাড়ির শেষ সম্বলটুকুও বিক্রি করে দিয়ে এসেছে, বাবাকে বলেছে দেখ এখন একটু কস্ট করো ,একবার বিদেশ যেতে পারলে আর কোনো কস্ট থাকবেনা। বাবার সামনে দাড়ানোর শক্তি বা সাহস কোনটাই এখন আর অবশিস্ট নেই। মাঝে মাঝে দেশের উপর খুব অভিমান হয়, কেন আমি তো কখনো দেশ ছাড়তে চায়নি ,তবে কেন দেশ আমাকে তার বুকে একটু আশ্রয় দিতে পারলোনা?দেশ থেকে খবর এসেছে ,মায়ের শরীরটা বেশি ভালোনা। আর কিছু টাকা জমাতে পারলেই দেশে যেতে পারবে ,মনে মনে স্বপ্ন দেখে সে।

বাবা রাগ করলেও শেষ পর্যন্ত বুকে টেনে না নিয়ে থাকতে পারবেনা। বড় রাস্তাটা ধরে আস্তে আস্তে আরো কিছুটা এগিয়ে যায় সে। আকাশটা আবার অন্ধকার হয়ে আসছে। আসুক আরো বৃস্টি আসুক, সব কিছু ধুয়ে মুছে নিয়ে যাক। সবকিছু শুরু হোক আবার নতুন করে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।