আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৫ ওয়াক্ত নামায কেন ফরজ হলো ?

চলার পথ অনেক, সত্য পথ একটাই

ইসলাম ধর্মকে দূর্বল হিসেবে তুলে ধরার জন্য ইহুদি পন্ডিতরা একবার এক ফন্দি আঁটে। এ ফন্দি অনুযায়ী বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে জ্ঞানের দিক থেকে দূর্বল হিসেবে তুলে ধরার জন্য ইহুদি পন্ডিতরা তাঁকে কিছু জটিল প্রশ্ন করার উদ্যোগ নেয়। আল্লাহর সর্বশেষ (সাঃ) রাসূল এইসব জটিল প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন না এবং এর ফলে তাঁর ও ইসলাম ধর্মের দূর্বলতা মানুষের কাছে তুলে ধরা সম্ভব হবে বলে ইহুদি পন্ডিতরা ভেবেছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে মসজিদে প্রকাশ্য জনসভায় বিশ্বনবী (সাঃ) ইহুদি পন্ডিতদের জটিল সব প্রশ্নের জবাব দিতে লাগলেন এবং তারা সবাই উত্তর পেয়ে বিস্মিত হল। সবশেষে ইহুদি পন্ডিতদের নেতা তার দৃষ্টিতে সবচেয়ে কঠিন প্রশ্নটি উত্থাপন করে রাসূল (সাঃ)কে জব্দ করতে চাইলেন।

ঐ পন্ডিত বললেন, হে মুহাম্মাদ! বলুন তো দেখি আল্লাহ কেন দিন ও রাতে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আপনার ওপর ফরজ বা বাধ্যতামূলক করেছেন ? কেন এর চেয়ে কম বা বেশী করা হল না ? বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)'র পবিত্র চোখে তখন বিদ্যুৎ খেলছিল এবং মহান আল্লাহর প্রেমে তাঁর নূরানী চেহারা ছিল উদ্ভাসিত । তিনি বললেন, যোহরের নামাজের সময় আল্লাহর আরশের নীচে অবস্থিত সব কিছু আল্লাহর প্রশংসা করে ও তাঁর গুণ-গানে মশগুল হয়। আর এ জন্যই আল্লাহ এ সময় অর্থাৎ মধ্যাহ্নের পর আমার ও আমার উম্মতের জন্য নামাজ ওয়াজেব করেছেন এবং এ জন্যই মহান আল্লাহ বলেছেন, সূর্য মধ্য আকাশ থেকে পশ্চিমে হেলে পড়ার পর থেকে অন্ধকার নেমে আসার সময় পর্যন্ত নামাজ আদায় কর। আল্লাহর রাসূল (সাঃ) আসরের নামাজ ফরজ বা বাধ্যতামূলক হবার কারণ সম্পর্কে বললেন, আসরের সময় হল সেই সময় যখন হযরত আদম (আঃ) তার জন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত গাছের ফল খেয়েছিলেন। ফলে আল্লাহ তাঁকে বেহশত থেকে বহিষ্কার করেন।

আল্লাহ আদমের সন্তানদেরকে আসরের নামাজ পড়তে বলেছেন এবং আমার উম্মতের জন্যও তা ওয়াজেব করা হয়েছে। এই নামাজ মহান আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় নামাজসমূহের মধ্যে অন্যতম। এরপর আল্লাহর রাসূল (সাঃ) মাগরিবের নামাজ ফরজ বা বাধ্যতামূলক হবার কারণ সম্পর্কে বললেন, মহান আল্লাহ অনেক বছর পর হযরত আদম (আঃ)'র তওবা কবুল করেন এবং তিনি তখন তিন রাকাত নামাজ আদায় করেন। আল্লাহ আমার উম্মতের জন্যও মাগরিবের নামাজ বাধ্যতামূলক করেছেন, কারণ এ সময় দোয়া কবুল হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, তোমরা রাত নেমে আসার সময় ও সকালে আল্লাহর প্রশংসা কর ।

আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এশা'র নামাজ ফরজ বা বাধ্যতামূলক হবার কারণ সম্পর্কে বললেন, কবরে ও কিয়ামতের দিনের ভয়াবহ অন্ধকারগুলো এশা'র নামাজের আলোয় কেটে গিয়ে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। আল্লাহ বলেছেন, এশা'র নামাজ আদায়ের জন্য অগ্রসর হওয়া এমন কোনো ব্যক্তি নেই যাকে আল্লাহ দোযখ বা জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবেন না। আর ফজরের নামাজের দর্শন হল, সূর্য-পূজারীরা সূর্য উদয়ের সময়ে এবাদত করতো। তাই আল্লাহ কাফেরদের সিজদার আগেই ইবাদতে মশগুল হতে মুমিনদেরকে ফজরের নামাজ আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের রহস্য বা দর্শন সম্পর্কে বিশ্বনবী (সাঃ)'র কাছ থেকে বক্তব্য শোনার পর ইহুদি পন্ডিতরা লা-জওয়াব হয়ে গেলেন।

কারণ, তাদের আর বলার কিছুই ছিল না। ফলে তারা অবনত মস্তকে মসজিদ ত্যাগ করে। তথ্যসূত্র : নামায: আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের উপায় (৮ম পর্ব )

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।