মাই চাইল্ড ... লাভ এন্ড পেইন
শীতাবসান। ডাকে নেশা, ডাকে জুয়া। জুয়াড়ির পূর্বপুরুষ ছিল জোসনাখোর। তাই মাতাল হবার অধিকার শুধু তারই, যার জিন থেকে হ্রেষা ভেসে আসে, পাহাড়ি ঘোড়ার।
ঘটনা হচ্ছে, একদিন, বসন্তকালীন মন-খর্খরে আবহাওয়ায় একদল বন্ধুভাবাপন্ন দেবশিশুকে জড়ো করে ”দেন, জার্নি বাই এ সিনেমা” ব্ল্যাকআউট।
চিত্রগ্রাহক এবং সম্পাদক সামির আহমেদ ঘোরে-পাওয়া মানুষের মতো ব্ল্যাকআউট নিয়ে ব্যস্ত থাকল। মিউজিক এবং টাইটেল গান নিয়ে অর্ণবও বলিহারিÑ যেন বা একটা মাতাল সময় সবুজ হয়ে যায় ; সময়, সবুজ ডাইনি হয়ে যায়। সম্ভবত, ফুললেন্থ ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনায় অর্ণবের প্রথম কাজ ব্ল্যাকআউট। শিল্পী আবদুল হালিম চঞ্চল, আর্ট-গ্রাফিক্স-টাইটেল অ্যানিমেশনে যে মনোহরি খেলা দেখিয়েছে, যদিও ব্ল্যাকআউট-ই তার প্রথম সিনেমা। রেজা ঘটক, জন রোমেল-কে সহযোদ্ধার মতোই পাশে পেয়েছি এই যুদ্ধে...
...অনেক স্বপ্ন হত্যার পর আমি ব্ল্যাকআউট এবং আমার প্রথম ছবি ব্ল্যাকআউট।
রিয়েলি, মাই ফার্স্ট চাইল্ড। ...অবাধ্য। কথা শোনে না, যন্ত্রণার শেষ নেই...
ব্ল্যাকআউট আমার ভালবাসার শিশু। সম্ভবত আমি বা আমার ছবির পেছনের-সামনের বাসিন্দারা হয়তো আর ব্ল্যাকআউট অবস্থায় নেই। কে জানে, নাকি আছিই? তবে, আমি জানি এবং দেখি, এই মুহূর্তেও কেউ না কেউ ব্ল্যাকআউট হয়ে আছে, ব্ল্যাকআউট হয়ে যাচ্ছে, ভুবনডাঙায় ব্ল্যাকআউট হাওয়া বইছে... সুতরাং ঢাকা শহরের মম্যার্ত:শাহবাগÑ আজিজ মার্কেট থেকে চারুকলা-মোল্লা-ছবিরহাট-বটতলা-উদ্যান নন্দনে বা নগর রাজধানীর আর্ট-কালচারের তারুণ্যখচিত জুয়া ও যৌবনময় মুক্তাঞ্চলে ঘোরাফেরা করছে সেই যুবক, যে কবিতা লেখে, ছবি আঁকে, প্রেম করে, নেশা করে, স্বপ্ন দ্যাখে, স্বপ্ন ভাঙে, গাছের শেকড়ে কিংবা সাতআসমানের সিঁড়িতে বসে ঝিমোয় কিংবা কিছুই করে না... কিংবা রাত্রি গভীর হলে দলচ্যুত একা একা ফিরে যায় ভাড়াবাড়ির চিলেকোঠায়।
ঘরে, তার জন্য অপো করছে প্রিয়তমা বিছানা-বালিশ-অ্যাস্ট্রে, অপো করছে একটি ধূসর জানালা, অপো করছে স্ট্যরি স্ট্যরি নাইট, অপো করছে বীভৎস লোনলিনেস, আর আছে খাড়ার উপর যৌনময় সময়ের আত্মঘাতী ধাওয়া... ইত্যাদি।
তো ২০০৬ এর ফেব্র“য়ারিতে শুটিংয়ের পর আয়েশ করে পায়েস খাওয়ার মতো দীর্ঘ সময় নিয়ে ব্ল্যাকআউট এর সম্পাদনা-গ্রাফিক্সের কাজে সামির, চঞ্চল, রিচার্ড ও আমি বুঁদ হয়ে থাকলাম। ২০০৬ থেকে ২০০৯ গড়িয়ে গেল। ঘোরাক্রান্ত সময়ের ধাওয়ায় ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ধানমন্ডির রাশিয়ান কালচারাল সেন্টারে ব্ল্যাকআউট এর প্রথম পরীামূলক প্রদর্শনী করার পর আমার মনের অপূর্ণতা আমাকেই খোঁচাতে লাগল। পুনরায় ব্ল্যাকআউট নিয়ে আমার আরও কিছু নিরীা করার ইচ্ছা জাগে।
ওম্ ইচ্ছামতি। ছোটখাটো, বড়সড়ো, মাঝারি নানা আকারের দূর্গতির ভেতর দিয়ে আমি ব্ল্যাকআউট শেষ করার ইচ্ছায় কতকত রাত নির্ঘুম থাকলাম। অনেক কাটাছেঁড়ার শেষে ছবিটা দাঁড়াল মনে হচ্ছে। এরই মধ্যে দেশের কোথাও কোথাও ব্ল্যাকআউট এর আরও কিছু পর্যবেণমূলক প্রদর্শনীর সুযোগ হয়েছে। ফাইনালি, এখন ২০১০।
আমার পারা না পারার সীমানায় ব্ল্যাকআউট নির্মাণ শেষ। চলচ্চিত্রের একজন শিানবিশ হিসেবেন শুটিংয়ের পর এডিটিং এবং গ্রাফিক্স-টাইটেল অ্যানিমেশনে মনের মতো করে শেষ করতে সময় কিছুটা লাগল বটে! ওই যে, কবি বলেছেন, সময়, সবুজ ডাইনি...
শেষ কথা ছবির গল্প থেকে বলি, অনেকের মতো আমারও প্রশ্ন, ব্ল্যাকআউট এর দুই চরিত্র: কবি মাদল ও আর্টিস্ট রাফিÑ তারা কি সত্যি সত্যি মদ্দা কুকুর এবং মাদি কুকুর হয়ে যায়? ব্ল্যাকআউটÑ এই ছবির বাংলা নামকরণ মনে নেই। ছবিটা দেখার পর, সম্ভবত আপনার ম্যুড অফ হয়ে যাবে। আর আমি জানি, ম্যুড অফ মানুষ কথা বলতে পারে না...
২০১০
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।