আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

*~* অনন্তের ২০০তম পোষ্ট: আমার পাক্কা গিন্নী দেড়ফুটি কোকড়াচুলওয়ালী *~*

এই ব্লগের সব লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
রোদে ঝলমল সাত সকালে চোখ খুলতেই বাইরে দেখি তুষারপাত হচ্ছে ... জ্বরের কারনে সারা রাত ঘুম না হওয়ায় ক্লান্তির রেশ থাকলেও দৃশ্যটা দেখতে দেখতে মনটা আনন্দে ভরে যাচ্ছিলো ... তুলতুলে বরফগুলোকে কেন যেন বড় আদর লাগছিলো ... আর মনে হচ্ছিল এমন সময় যদি সুস্হ থাকতাম তবে দেড়ফুটি কোকড়াচুলওয়ালীকে নিয়ে আজকে একটা মস্ত বড় স্নোম্যান বানাতে চলে যেতাম ... কথাগুলো মনে মনে বলতে না বলতেই যেন ... না চাইতেই বৃষ্টি নামলো ... ডিং ডং শব্দে দরজা খুলতেই দেখি পুরা প্যাকেট হয়ে ঘরের সামনে দাড়িয়ে আছে আমার জানের টুকরা কোকড়াচুলওয়ালী আর ওর আম্মু .... আমার হাতে বেশ বড় একটা হটপট বক্স ধরিয়ে দিয়ে বললো - নাও তোমার রাজকন্যার আজকে ছুট্টি তাই সে নাকি তোমার সাথে সারাদিন থাকবে , খেলবে ... তোমাদের জন্য ভুনা খিচুড়ি রান্না করে দিয়ে অফিসে গেলাম... বিকেলে এসে যদি দেখি বক্স শেষ হয়নি তবে কিন্তু তোমাদের দুইটার ই খবর আছে ... লক্ষী বাচ্চার মত আমরা দুজন ওকে বিদায় দিয়ে দরজা বন্ধ করতেই দু জন একবার দুজনের দিকে আরেকবার হটপটের দিকে তাকাই ... এর পরে হঠাৎ খিক খিক করে হেসে উঠে কোকড়াচুলওয়ালী বলে -- আম্মু মনে হয় আমাদেরকে রাক্কস মনে করসে .... ওর কথা শুনে ... হাসতে হাসতে গড়াগড়ি যাকে বলে আমরা দুজনেই আক্ষরিক অর্থে সেটাই শুরু করে দিলাম ,কিছুক্ষন পর দুজনেই একটু শান্ত হয়ে আলোচনা শুরু করলাম ... প্রথম কথা যতটা খিচুড়ী এখানে আছে আমরা দুজনে সকাল ~ দুপুর ~ বিকাল তো দুরের কথা, দু দিনেও শেষ করতে পারবো না, সুতরাং নতুন কোন বুদ্ধি বের করা লাগবে ... অনেক ভেবে চিন্তে বের করা হলো , বাসায় একটা পার্টি করি আরো এক দু জনকে আসতে বলি এর পরে একসাথে সবাই মিলে খেলে খিচুড়িও শেষ হবে আর একটা ছোটখাট পিকনিক ও হয়ে যাবে ... যে ভাবা সেই কাজ... ফোন করে আরিফ আর মাসুদকে আসতে বলতেই একজন বললো কাজে যাচ্ছে আরেকজন বললো আসছি ... ঘন্টাখানিকের মধ্যে আরিফ এসে পড়তেই আমাদের রান্না বান্না পর্ব শুরু হলো ... জ্বরের মাঝে রান্না করতে ইচ্ছে করে না আর আরিফ ও রান্নাঘরে কখনো ঢুকেনি, সুতরাং একটা নরমাল ডিম ভুনা করে খিচুড়ীর সাথে খাওয়ার প্ল্যান করে দিলাম চুলায় পানি চড়িয়ে .... একটু পরে ফ্রিজ থেকে গোটা দশেক ডিমের একটা প্যাকেট বের করে ওটা খুলতেই আরিফ বলে -- ডিমের ভুনা কিভাবে করতে হবে ? আমি বললাম -- আগে এটাকে পানিতে দিয়ে সিদ্ধ করতে হবে আরিফ - এর পরে ? কোকড়াচুলওয়ালী -- এপ্পর নান্না বানাতে হবে .... আরিফ - কি ? আমি -- ওটাকে রান্না করতে হবে.... দেখ তুমি জানো না কি করতে হবে আর আমার জানের টুকরাটা জানে ... এই শুনে আরিফ বিজ্ঞের মত বললো -- যে কোন জিনিসের স্বাদ লবনের উপর নির্ভর করে, ডিম সিদ্ধেরও নিশ্চয়ই এমনটাই হবে কি বলো ? পানির মধ্যে লবন দেই ? কোকড়াচুলী আমাকে খোঁচা মেরে বলে -- আংকেল পানিতে লবন দেবে... আমি আরিফকে বলি -- ঠিক বলসো, এই নেও লবন ..... বিষ্ফোরিত চোখে আমি আর কোকড়াচুলওয়ালী দেখলাম আরিফ সত্যি সত্যি বেশ কয়েক চামচ লবন পানিতে দিয়ে ফেললো ... এর পর জিজ্ঞেস করে -- এখন কি করতে হবে ? আমি পুসকিকে জিজ্ঞেস করি -- তুমি বলো , এখন কি করা লাগবে ? কোকড়াচুলওয়ালী বলে -- ওকানে ডিম দেও .. ওর বলা শেষ হতে না হতেই আরিফ বলে উঠলো -- ডিম কি আস্ত দিবো নাকি খোশা ছিলে দিতে হবে ? ..... জলদি জলদি কোকড়াচুলওয়ালী ডিমের প্যাকেট টা থেকে একটা ডিম নিয়ে আরিফের হাতে দিয়ে বলে -- আংকেল, আমরা আগে এইগুলো আস্ত দেই আপনি পরে ভেঙ্গে দিয়েন ......
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।