A Million Dollar Question.
সেদিন দুপুরে লাইব্রেরি থেকে হলে ফিরছিলাম, হঠাৎ পিছনে এই ধর ধর চিৎকার শুনে পিছনে থাকালাম দেখি ৩য় কিংবা চতুর্থ বর্ষের একটি ছেলেকে প্রথম বর্ষের কয়েকটি ছেলে চড় থাপ্পড় ও কিল ঘুষি মারছে। ব্যাপার কি দে খার জন্য কাছে গেয়ে ওদের একটি ছেলেকে জিজ্ঞেস করতেই শুনলাম ছেলেটি অন্য একটি ছাত্র সংগঠনের কর্মী যে আগে হলে ছিল এ সরকার আসার পর হল থেকে বেরিয়ে গেছে তাই এখন যারা আগে থেকেই ওকে চিনত তাদের নেতৃত্বে ওই ছেলেকে পেটানো হচ্ছে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারনে একজন ছাত্র তারই মত আরেকজন ছাত্রের গায়ে কোন কারন ছাড়াই হাত তুলছে! সত্যিই বিচিত্র এই দেশ!
ক্যাম্পাস থেকে রুমে ফিরে ঐ দিনের পত্রিকা হাতে নিতেই লাল কালিতে লেখা শিরোনামের দিকচোখ আটকে গেল। পত্রিকাটি লিখেছে বগুড়া সরকারী আযীযুল হক কলেজে ক্ষমতাসীন আ’লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ও জামা’য়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংগঠিত রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ক্যাম্পাস রণক্ষেত্র, এতে কমপক্ষে ৫০ জন ছাত্র আহত হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
তখন মনে একটি প্রশ্ন দেখাদিল, আচ্ছা ছাত্র-ছাত্রীদের কী তাদের বাবা মা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠায় রাজনীতি (পলিটিক্স) করার জন্য। ক্যাম্পাসে ছাত্ররা আসে কত সপ্ন নিয়ে অনার্স, মাস্টার্স পাশ করবে, মোটা বেতনে চাকরী করবে, বাবা, মায়ের সপ্ন সফল হবে। কিন্তূ হায়! ক্যাম্পাসে আসার পর অনেক ছাত্রেরই সে আশা পূর্ণ হয় না কিংবা বাবা মায়ের সে সপ্ন বাস্তবে রুপ লাভ করেনা। নিষ্ঠুর ছাত্র রাজনীতির নির্মর্ম শিকার হয়ে কেউ মায়ের বুকে ফিরে লাশ হয়ে আবার কেউ অনার্স শেষ না করতে পেরে হতাশায় আত্নহুতি দেয়। যার নিষ্ঠুর প্রমাণ প্রতিদিন পত্রিকার পাতায় চোখরাখলেই পাওয়া যায়।
সবাই রাতে রুমে ফিরলেই গতদিনের সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে আলোচনা শুরু হল। হঠাৎ এক রুমমেট প্রশ্ন ছুড়ে দিল, আচ্ছা এই ছাত্র রাজনীতির দরকারটা কী?ছাত্ররা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবে পড়াশুনার জন্য এখানে এসে পলিটিক্স করবে কেন?সবার রাজনৈতিক দৃষ্টিভংগী থাকতেই পারে তা নিয়ে খুনোখুনি হবে কেন? তার কথা নিয়ে তাৎক্ষণিক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হল। আমাদের রুমের একজন আবার পলিটিক্স করে বলা বাহুল্য তা অবশ্যই ক্ষমতাসীন দলের। সে তাৎক্ষনিক উত্তরে বলল ছাত্র রাজনীতি না থাকলে পরবর্তী নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে কিভাবে?
আমার রুমমেটেদের একজন আবার প্রচন্ড রাজনীতি বিদ্বেষী আবার বিতার্কিক ও, সে খানিকটা ঝাঝের সাথেই বল্ল, Duffer এর মত কথা বল না। ছাত্ররাজনী না হলে নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে না এ কথাট্ পুরোপুরি ভাওতাবাজী, ছাত্রদের রাজনীতিতে জড়িত করার জন্য আমাদের পলিটিশিয়ানরা এ কথা বলে, কত জন বড় মাপের নেতা আছেন যারা ছাত্রজীবনে ছাত্র নেতা ছিলেন? তার কথা শুনে আমার ছাত্র নেতা রুমমেট অনেক নেতার নাম বলল যাদের বেশীর ভাগই এখন প্রায় অস্তিত্বহীন বিভিন্ন সংগঠনের নেতা।
তার জবাবে বিতার্কিক রুমমেট বলল আচ্ছা শেখ হাসিনা বা খালেদাজিয়া কোন ছাত্র সংগঠনের নেত্রী ছিলেন? কিংবা তারেক অথবা জয় কোন ছাত্র সংগঠনের নেতা ছিলেন, তবে এটা স্বীকার করি ছাত্র নেতারা দেশের ক্রান্তিকালে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন । এবার ছাত্র নেতা রুমমেট চুপসে গেল।
শেষ মুহূর্তে ডিবেটর রুমমেট একটি প্রশ্ন রেখে তার কথা শেষ করল। প্রশ্নটি ছিল এমন আচ্ছা বল বারাক ওবামা, বিল ক্লিনটন অথবা জর্জ বুশ কোন ছাত্র সংগঠনের নেতা ছিলেন?????
প্রশ্নটি শুনে সবাই চুপ। সবার মুখে যেন তালা লেগে গেল।
আমার মনে ও প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দিল। সাথে সাথেই Internet ঘাটা শুরু করলাম। Wikipedia থেকে শুরু করে তাদের Personal Website কোথাও খুজেঁ পেলাম না তারা ছাত্রজীবনে Democratic বা Republican party কোন ছাত্র সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন কিনা। ব্লগারদের কাছে প্রশ্ন থাকল তারা কোন রাজনৈতিক ছাত্র সংঠনের রাজনীতি করেছেন। যদি কেউ জানেন তাহলে লিংক দিন Please………
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।