যেখানে বাঁধ সেখানেই বিপর্যয়। তাই বাঁধ মুক্ত জীবনের জন্য চাই বাঁধ মুক্ত পৃথিবী
চিত্রঃ মৃত প্রাণী ব্যবহার করে মাছ শিকারের একটি টোপ।
রাজশাহীর পদ্মা নদীতে মৃত প্রাণী ব্যবহার করে মাছ শিকারের বিষয়টি প্রথম আমি জানতে পারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে। তার পর নিজে চোখে বিষয়টি দেখার জন্য রাজশাহী সিটি কর্পেরশন এলাকা সংলগ্ন পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে গেলে যে চিত্র দেখতে পাই তা এক কথায় ভয়ঙ্কর।
এই পদ্ধতিতে মাছ শিকারে মৃত প্রাণীকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
সেই মৃত প্রাণীর তালিকায় হাঁস হতে গরুর নাম পর্যন্ত রয়েছে। নদীর কোন একটি স্থানে বৃত্তাকার বা উপবৃত্তাকারে বাঁশ ও গাছের ডাল-পালা ব্যবহার করে একটা ছোট আকারের সীমানা নির্ধারণ করা হয়। তারপর তার মাঝে মৃত ছাগল বা গরু একটি বাঁশ বা ভারী পাথর/বালুর বস্তা ইত্যাদির মাধ্যমে তলদেশের কাছাকাছি স্তরে বেঁধে রাখা হয়। এর এক থেকে দুই সপ্তাহ পর পুরো স্থানটি জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় এবং বাঁশ/ডাল-পালা/মৃত প্রাণী সরিয়ে জাল টেনে তুললে একসাথে অনেক মাছ পাওয়া যায়। সেই মাছের তালিকায় রয়েছে মূলত মাংশাসী মাছ যেমন- টেংরা, আঁইড়, গজার, বোয়াল, দেশী পাংগাস ইত্যাদি।
এর মধ্যে টেংরা ছাড়া আর সবই বিলুপ্তির হুমকির মূখে অবস্থান করা দেশীয় বড় মাছ যার বেশিরভাগই প্রজননে উপযুক্ত মা/বাবা মাছ।
একবার টোপ হিসেবে একটি মৃত প্রাণী ব্যবহার করার পর যতদিন না সেই প্রাণী শেষ হয় ততদিন পর্যন্ত প্রতি ১-২ সপ্তাহ অন্তর অন্তর জাল দিয়ে ঘিরে ফেলে মাছ ধরা যায়। খরচ কমানোর জন্য মূলত মৃত প্রাণী ব্যবহার করা হয। প্রাণী হিসেবে কী ব্যবহার করা হবে তা নির্ভর করে এর ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িতদের অর্থনৈতিক সামর্থের উপর। জানা যায় রাজশাহী সিটি কর্পেরশন এলাকা সংলগ্ন পদ্মা নদীতে এরকম বড় আকারের টোপের সংখ্যা ৩৮টি।
এই চিত্র থেকে স্পষ্ট ভাবে বলা যায় এই পদ্ধতিতে মাছ শিকার করা যেমন মৎস্যবৈচিত্র্য তেমনি মৎস্যসম্পদের ভবিষ্যতের জন্য একটি বড় হুমকি। তাই যত দ্রুত সম্ভব মাছ শিকারের এই ভয়ঙ্কর পদ্ধতিটি এখনই বন্ধ করা প্রয়োজন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।