আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্টেফোর্ড-৭: হুইসেল স্টপ ভিজিট টু সেন্ট্রাল লন্ডন

oracle.samu@googlemail.com

'whistle stop visit to London' -এর আক্ষরিক বাংলা অনুবাদ করা মূশকিল। আমার কাছে বরং 'লন্ডন ঝটিকা ভ্রমণ' কেই যথাযথ বাংলা অনুবাদ মনে হচ্ছে। হটাত্ করেই অফারটা চোখে পড়ল, মাত্র ১৬ পাউন্ড, যেখানে লন্ডন-স্টেফোর্ড রোডে বাস ভাড়াই ৩৭*২ =৭৪ পাউন্ড। তার উপর ভিজিটিং লোকেশগুলো আরো আকর্ষনিয় - বাকিংহেম পেলেস, ওয়েস্ট মিনিস্টার্স এবি, হাউজ অব পার্লামেন্ট, ট্রাফালগা স্কয়ার, রিভার টেমস্, চায়না টাউন..... আতএব দেরি না করেই নাজমুল ভাই, কামাল ভাই আর আমি ট্রিপ বুকিং দিয়ে ফেল্লাম। যদিও যথেষ্ট সন্ধেহ ছিল ট্রিপের কোয়ালিটি নিয়ে, এত কম টাকা্য় কী দেখাবে আল্লাই জানে..... ১২ তরিখ ভোর ৭।

৩০ শে কেম্পাস থেকে বাস ছাড়বে আবং ট্রিপে কোন খাবার-দাবার দেবে না। তই রাতেই সবাই মিলে টুনা, সর্ডিন মাছের সেন্ডউচ বানালাম। পর দিন ভোরে নাকে-মুখে কিছু দিয়ে ঘুমাতে ঘুমাতে বাস ধরলাম। বাসে উঠেই মেজাজ খারাপ, ৫২ সিটের বাসে মানুষ আমরা ৪৮ জন, আমরা ৩ বাঙ্গালি, ড্রাইভার, সহকারী আর টুর গাইড ছাড়া বাকি সব চিংকু (চাইনিজ)। কোথা্য় একটু ঘুমাব কিচির-মিচিরের চোটে প্রেসার বেড়ে যাবার যোগার..।

আল্লার অশেষ রহমতে চিংকু অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি পেলাম সাড়ে ১১ টায়। পৌছে গেছি লন্ডনে, ইংলেন্ডে আসার সময় লন্ডনে নামলেও শহরটা দেখা হয় নি। আমাদের প্রথম গন্তব্য বাকিংহাম পেলেস। ৯২ জনের বিশল দল পদ-ব্রজে রওনা হলাম রানীর বাড়ি দেখতে.... পথেই পড়ল ১ম ও ২য় বিশ্ব যুদ্ধের মনুমেন্ট ও মেমরিয়াল গেট। যুদ্ধে শহীদ হওয়া সৈনিকদের সমাধি আছে এমন সব দেশের নাম খোদাই করা কিছু স্তম্ভ ও চোখে পড়ল..যার একটাতে আবার বাংলাদেশের নাম রয়েছে।

মেমরিয়াল গেট পাড় হয়ে কিছু দূর যেতেই রানী ভিক্টিরিয়ার বাড়ি বাকিংহাম পেলেস... এর পর বাকিংহাম পেলেস পার্ক পেড়িয়ে ৩-৪শ গজ যেতেই এমন এক জায়গায় নিজে কে আবিষ্কার করলাম যে কী আর বলব। যে দিকে তাকাই সেদিকেই চোখ আটকে যাচ্ছে। এক পাশে ওয়েস্ট মিনিষ্টার্স এবি - এখানে প্রিন্স চার্লস ও প্রিন্সেস ডায়ানার বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অপর পাশে ব্রিটিস হাউজ অব পার্লামেন্ট আর সমনেই চোখ জুড়ান বিগ-বেন, টেমস নদী আর নতুন সংযোজন লন্ডন আই। ছবি তুলতে তুলতে কখন যে মূল দল থেকে আলাদা হয়ে গেলাম টেরই পাইনি।

এ রাস্তা ও রাস্তা করতে করতে চোখে পড়ল ব্রিটিশদের জাতীয়তাবোধ, প্রায় প্রতিটি ইন্টারসেকশনেই কোন না কোন ব্রিটিশ বীরের স্টেচু। শিশুরা বইয়ের পাতায় নয়, রাস্তায় পথ চলতে চলতেই তাদের বীরদের সাথে পরিচিত হয়। আমরা কী পারিনা ঢাকার গুরুত্বপূর্ন স্কয়ার এভেনি্উগুলোতে আমাদের ৭ বীরশ্রষ্ঠের স্টেচু গড়তে.... অবশেষে অনেক খোজাখুজির পর মূল দলের দেখা পেলাম ট্রাফালগা স্কয়ারে... ট্রাফালগা স্কয়ারে এসে পড়লাম বৃষ্টির খপ্পরে। টুনা মাছের সেন্ডুইস আর অরেন্জ স্কোয়াশ খেয়ে বিকেলে ঘুরে বেড়ালাম চায়না টাউন আর লন্ডনের বিপনী বিতানগুলোতে। সন্ধায় ক্লান্ত হয়ে অবশেষে চড়ে বসলাম ফিরতি বাসে..।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।