আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাম রাজনীতির কিংবদন্তি পুরুষ বরুণ রায় আর নেই

দাগ খতিয়ান নাইতো আমার/ঘুরি আতাইর পাতাইর...

প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও বাম রাজনীতি পুরোধা ও ভাটি বাংলার কৃষক শ্রমিক আন্দোলনের বর্ষীয়ান নেতা প্রসূণ কান্তি রায় (বরুন রায়) আর নেই। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় সুনামগঞ্জ শহরের হাছননগরস্থ বাস ভবনে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১ ছেলেসহ অসংখ্য আতœীয়স্বজন রাজনৈতিক ভক্তবৃন্দ ও গুনগ্রাহী রেখে যান। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরলে শহরময় নেমে আসে শোকের ছায়া।

শেষবার দেখার জন্য রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সর্বস্তরের জনতা ভিড় জমায় তার বাড়িতে। বিকাল ৪ টার তার মরদেহ সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়। সেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা তার রাজনৈতিক সহকর্মী ও দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের জন্য আপো করা হবে। এসময় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ তাকে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তার পর কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে অন্ত্যোষ্ট্রিক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে শহরের ষোলঘরে।

কমরেড বরুন রায় ১৯২২ সালের ১০ই নভেম্বর সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার বেহেলী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। পিতা করুনা সিন্ধু রায় (প্রজা বাবু) আসাম প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ছিলেন। বরুন রায় ১৯৪২ কুমিল্লা-ব্রাম্মনবাড়িয়া মোগরা হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা, ১৯৪৭ সালে সুনামগঞ্জ সরকারী কলেজ থেকে আই এ পাশ করে ১৯৪৮ সালে সিলেট এম সি কলেজে বি এ প্রথম বর্ষে ভর্তি হন। ১৯৪২ সালে তিনি প্রথম কমিউনিষ্ট পার্টির সদস্যপদ লাভ করেন এবং ১৯৫০ সালে পার্টির সিলেট জেলা সেক্রেটারী নির্বাচিত হন। ৪৮ সালে তিনি যখন সিলেট এম সি কলেজে ভর্তি হন তখন থেকেই মূলত রাজনৈতিক অঙ্গনে তার দুরন্তপনার শুরু।

যৌবনের বেশীর ভাগ সময়ই কেটেছে জেলের ভিতর। জেল থেকে জেলান্তরে, হুলিয়া আর আন্তগোপন এভাবেই তার সংগ্রামী জীবনের অনেকগুলো বছর কেটে যায়। ১৯৮৮ সালে সৈরাচার এরশাদ সরকারের সময় তিনি সুনামগঞ্জ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৪৭ এর দেশবিভাগ, ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৭৯’র গনঅভ্র্যত্থান ১৯৭১ এর স্বাধীনতা সংগ্রামসহ সকল আন্দোলন সংগ্রামের অগ্রপথিক আপামর জনসাধারণের প্রিয় সেই বরুন দা আজ সবাইকে কাদিঁয়ে চলে গেছেন। এক সময়ের পতাপশালী জমিদার পুত্র বরুন রায় আজীবন মানুষের জন্য কাজ করে গেলেও মৃত্যুকালে তিনি নানান রোগব্যধিতে ভুগছিলেন।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি শহরের হাসননগরস্থ তার বাস ভবনে স্ত্রীক অবস্থান করছিলেন তার মৃত্যুতে অর্থ মন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সাংসদ সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, সিলেট সিটি মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সাংসদ মতিউর রহমান, এমএ মান্নান, মুহিবুর রহমান মানিক শোক প্রকাশ করেছেন। নির্মোহ এই ব্যক্তিত্ব জাতীয় রাজনীতিতে দলমত নির্বিশেষ ছিলেন অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। জাতীয় রাজনীতিতে নেতৃত্ব প্রদানকারী অনেকেই তার কাছ থেকে রাজনৈতিক দীা নিয়েছেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।