আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

Your No Counts... Anti-Corruption Day 2009, (9th December)

কোন একদিন.. এদেশের আকাশে... কালেমার পতাকা দুলবে, সেদিন সবাই ... খোদায়ী বিধান পেয়ে দু:খ বেদনা ভুলবে..

আগামী কাল বিশ্ব দুর্নীতি বিরোধী দিবস। এবারের দুর্নীতি বিরোধী দিবসের স্লোগান হল, "Your No Counts"। আসুন আমরা দুর্নীতিকে না বলি। দুর্নীতি আমাদের সমাজে মহামারীতে পরিণত হয়েছে। আসুন আমরা প্রত্যেকে নিজেদের দুর্নীতির সাথে সম্পর্কিত একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করি।

এখনো কর্মজীবনে পৌছাইনি, তাই দুর্নীতি নিয়ে কঠিন কোন অভিজ্ঞতা আমার নাই। ইন্টারমিডিয়েটে সরকারী বাঙলা কলেজে পড়তে গিয়ে ব্যপক হয়রানির স্বীকার হতে হয়েছে। তার ছোট একটা বর্ণনা দেই। কলেজে চান্স পাওয়ার পর টাকা-পয়সা নিয়ে গেছি ভর্তি হতে। ভোর হতে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকি, কিন্তু অফিস খোলে না।

দশটা এগারোটার পর একজন দুজন করে অফিসে আসে। একাউন্টেন্ট সাহেবও তার ডেস্ক ছেড়ে ঘোরাফিরা করে। এভাবে চার-পাঁচদিন পর ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হল। ক্লাস শুরু হল কিছুদিন পর। সরকারী কলেজের শিক্ষকগন এতই ব্যস্ত থাকেন যে, তাঁরা ক্লাস নেন না।

ফিজিক্স স্যার দুবছরেও প্রথম চাপ্টার শেষ করতে পারেননি, কেমিস্ট্রির শিক্ষকেরাও তেমন আসেননা। বাংলা, ইংরেজির ক্লাস আদৌ খেয়াল করতে পারিনি হয়েছে কি হয়নি। তবে বায়োলজীর ম্যাডামেরা অত্যন্ত নিয়মানুবর্তি ছিলেন, তাঁরা পুরোপুরিভাবে সিলেবাস শেষ করেছেন। আবার প্রত্যেকটা ল্যাবের ক্লাসও হত ঠিকভাবে। আর ল্যাবগুলোতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির কোন অভাব ছিলনা।

কিন্তু ল্যাবগুলোর সঠিক দেখাশুনা হত না বলে বেশিরভাগ যন্ত্রপাতিই অকেজো হয়ে পড়েছিল। সময় গেল, ফরম ফিলাপের সময় এল। কিছু কাগজপত্রের সত্যায়ন প্রয়োজন হয়েছিল। কলেজের অধ্যাপকেরাই সাধারনত এই সত্যায়নগুলো করার ক্ষমতা রাখেন। কিন্তু কোন শিক্ষকই এইটুকু সাহায্য করতে রাজী হলেননা।

এক শিক্ষকের কাছে গেলে তিনি অন্য আরেক শিক্ষকের কাছে পাঠাতেন, আবার ঐ শিক্ষক পাঠাতেন অন্য জনের কাছে, শেষে মাঠে বসে সবাই মিলে স্বাক্ষর নকল করে, নকল সিল দিয়েই কাগজপত্র সত্যায়িত করে জমা দিয়ে দিলাম। অর্থাৎ শিক্ষকগনের দায়িত্বে অবহেলা তথা দুর্নীতির কারনে আমাদেরকে দুর্নীতি করতে হল। পরীক্ষা শেষ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ফরম কিনেছি। কলেজ হতে কিছু কাগজপত্র উঠাতে হবে। অফিসে গেলাম, বলল টেবুলেশনের জন্য পঞ্চাশ টাকা করে এবং টিসির জন্য বিশ টাকা করে দিতে হবে।

না দিয়ে উপায় নাই, তাই টাকা দিয়ে এলাম। তারপর আরো দুএকদিন যাওয়ার পর কাগজপত্র নিয়ে এলাম। এছাড়াও ফরম ফিলাপের সময়ও বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হয়েছে। যেমন, লাইব্রেরী ক্লিয়ারেন্স, ফরম ও টাকা জমা দেওয়া ইত্যাদির প্রতি ক্ষেত্রে বিশ কিংবা তিরিশ টাকা করে দিতে হয়েছে। অফিসের কেরানী হতে শুরু করে পিওন পর্যন্ত সকলের দুর্ব্যবহার সহ্য করতে হয়েছে।

অফিসের এই কর্মচারীগুলোর দৃষ্টি ষাঁড়ের চেচিয়েও আকর্ষন করা যেতনা। তাই যেদিন সব কাগজপত্র নিয়ে কলেজের গেট শেষবারের মত পার হলাম সেদিন হাঁফ ছেড়ে বেচেছিলাম।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।