ঘুনে খাওয়া হৃদয়টাকে নিয়ে চলতে চলতে আজকাল খুব ক্লান্ত লাগে নিজেকে..
মানুষ সামাজিক জীব। কথাটি প্রাথমিক পাঠ্যপুস্তকে পেয়েছিলাম। তখন শুধু পড়েছিলাম মাত্র, কিন্তু এর অন্তর্নিহিত অর্থ ঠিক বুঝতে পারিনি। যুগে যুগে বিভিন্ন মনিষী সমাজের কথা বলেছেন, সামাজিক বন্ধনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। বলেছেন সামাজিক সৌহার্দের কথা।
কিন্তু আমরা বর্তমানে এই উন্নত প্রযুক্তির যুগে নিজেদের কতটুকু সমাজবদ্ধ মনে করি ? আমরা আদতে কতটুকু সমাজবদ্ধ হতে পেরেছি ? আমাদের পারস্পরিক বন্ধন কতটুকু মজবুত ? নাকি সমাজই আমাদের কাছে আবদ্ধ হয়ে আছে আমাদেরই নিজস্ব লোহার শিকলে ?
আমার এক বন্ধুর বাড়ি কুষ্টিয়ায়। তার কাছ থেকেই শোনা তাদেরই গ্রামের বাড়ির কথা, যেখানে মানুষে মানুষে রয়েছে এক গভীর সামাজিক বন্ধন।
কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলার ছোট্ট একটি গ্রাম দক্ষিণ ভবানীপুর। সমাজের উচ্চ ও নিম্ন স্তরের বিবিধ মানুষের সহাবস্থান এই গ্রামে। তবুও তাদের মধ্যে নেই কোন ভেদাভেদ।
প্রতিবছর ঈদের দিন নামাজ শেষে গ্রামের সবাই বাড়ি থেকে রান্না করে আনা খিচুড়ি নিয়ে জমায়েত হয় একটি নির্দিষ্ট জায়গায়। গ্রামের প্রতিটি বাড়ির খিচুড়ি একটি বড় পাত্রে একত্রে মেশানো হয় এবং প্রতি পরিবারের জন্য সৌহার্দ্যের বন্ধনাবদ্ধ সেই খিচুড়ি বিতরণ করা হয়।
এ সমাজে একটি আর্থিক তহবিল আছে যেখানে ঈদের দিন সবাই সাধ্যমত কিছু সহায়তা করে। কোন দরিদ্রের মেয়ের বিয়ে অথবা মসজিদ-মাদ্রাসা এবং গোরস্তানে এই তহবিলের টাকা কাজে লাগানো হয়। গ্রামবাসীরা কেউ কখনও নিজেকে একা ভাবেনা।
পুরো গ্রামটাই যেন একটা মস্ত পরিবার।
ক্ষুদ্র গ্রামটির তুচ্ছ পরিসরের ঐক্যের এ উদাহরণ সমাজবদ্ধতার এক কার্যকর নিদর্শন হতে পারে। আসুন, সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এমন একটি সমাজ গঠনের অঙ্গীকার করি, যাতে থাকবেনা কোন হিংসা, দ্বেষ, হিংস্রতা। সকল হবে সকলের জন্য। বিশৃঙ্খলা, বিদ্বেষ ভুলে গড়ে তুলি একটি সজীব সবুজ বাংলাদেশ।
যেখানে প্রতিটি মানুষের মন থাকবে আমাদের পতাকার মতনই পবিত্র।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।