আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আল্ কোরআন যে এক বিস্ময়কর গ্রন্থ তা কেবল মুসলমানেরাই বলেনা বরং অনেক অমুসলিমরাও এ পবিত্র গ্রন্থকে বিস্ময়কর বলে চিহ্নিত করেছেন।



সত্যিকার মুসলমানেরা এ গ্রন্থকে মহান আল্লাহ প্রদত্ত সঠিক বানী হিসাবে শুধু শ্রদ্ধাই করেনা বরং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট দেশে রাষ্ট্র বা সমাজ পরিচালনায় কোরআনের আইনকে প্রয়োগ করতে চায়। অবশ্য অনেক লোক যারা ইসলামকে খুবই ঘৃণা করে তারাও বাধ্য হয়ে কোরআনকে বিস্ময়কর গ্রন্থ হিসাবে স্বীকার করেছে। অমুসলিমদের অনেকে কোরআন নিয়ে গবেষনা চালাতে গিয়ে অবাক হতে হয় এ জন্য যে এ গ্রন্থের ব্যপারে তারা পূর্বে যে ধারনা করে আসছিল তার সাথে মোটেই মিলেনা। তাদের ধারনা ছিল কোরআন হচ্ছে আজ থেকে ১৪শত বছর আগের আরব মরুভূমির একটা পুরানো বই যার থাকবে বর্তমান বিশ্বের অনেক কিছুর সাথে বিশেষ করে বৈজ্ঞানিক আবিস্কারের সাথে প্রচণ্ড গড় মিল। উপরুন্ত কিছু লোকের ধারনা হল এটা হবে মুলত মরু কেন্দ্র্রিক।

অবশ্য মরুভুমীর কথা কোরআনের কিছু কিছু জায়গায় উল্লেখ আছে তবে কোরআনে সমুদ্র সর্ম্পকেও বক্তব্য আছে। সমুদ্র বক্ষে ঝড় তুফানের কথাও এতে স্থান পেয়েছে। টরন্টোতে এক অমুসলিম নাবিকের সাথে হয়েছে এরকম এক কাহিনী। জনৈক মুসলিম সমুদ্রগামী সেই নাবিককে পড়তে দিয়েছিলেন কোরআনের একখানি ইংরেজী অনুবাদ। সেই নাবিক ইসলাম সর্ম্পকে কিছুই অবগত ছিলেননা কিন্তু কোরআন পড়তে তার ছিল প্রচুর আগ্রহ এবং কোরআনে সমুদ্র বিষয়ক আলোচনা পড়তে গিয়ে তাঁর ধারনা জন্মে মুহাম্মদ (সঃ) নিশ্চয় একজন নাবিক ছিলেন তাই যে তাঁকে র্কোআন পড়তে দিয়েছিলেন তাকে প্রশ্ন করেন "এই মুহাম্মদ (সঃ) কি সত্যি কি একজন নাবিক ছিলেন? কেননা কোরআনে সমুদ্র সংক্রান্ত বক্তব্য বিশেষ করে সমুদ্র বক্ষে ঝড়ের বর্ননা একজন অভিজ্ঞ নাবিক হিসাবে তার কাছে নিখুতভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে বলেই তাঁর মনে সে প্রশ্নের উদয় হয়েছে কিন্তু তাকে যখন বলা হল মুহাম্মদ (সঃ) ছিলেন একজন মরুবাসী ব্যক্তি তখন এ তথ্যই ছিল তাঁর মনকে হেদায়েত দেয়ার জন্য যথেষ্ট।

তিনি তৎক্ষনাৎ ইসলাম গ্রহন করেন। কোরআন পাকের বর্ননায় তিনি দারুণ প্রভাবান্বিত হয়েছিলেন। কারন তিনি নিজে সাগরবক্ষে ঝড়ের কবলে পড়ে ছিলেন এবং বুঝতে সক্ষম হন যে কারআনে সেই বর্ননাকারী নিশ্চয়ই এরকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিল। "উত্তাল তরঙ্গের পর তরঙ্গ আর তার উপর মেঘরাশি" সমুদ্রঝড় কি রকম হবে এ তার কল্পনা প্রসুত কোন বর্ননা হতে পারেনা বরং এটা লিখিত হয়েছে এমন স্বত্তা দ্বারা যিনি জানেন সমুদ্র জঞ্ঝার স্বরুপ কি? কোরআন্ যে কোন নির্দিষ্ট স্থান ও কালের সাথে বাধা নয় এটি হচ্ছে তার স্পষ্ট উদাহরণ। পবিত্র র্কোআনে সুরা নুর (২৪-৪০) আয়াতে আমরা পড়ি: " অতবা উহার দৃষ্টান্ত এমন, যেমন এক গভীর সমুদ্রের বুকে অন্ধকার ঢেউ সমাচ্ছন্ন।

মানুষ নিজের হাত বাহির করিলেও উহা সে দেখিতে পায়না। বস্তুতঃ আল্লাহ যাহাকে নুর দেন নাই তাহার জন্য কোন নুর নাই" পৃথিবীর মানুষ ১৭শ শতাব্দীতে প্রথম সাব্মার্সিবল’ তথা পানিতে ডুবে চলা বা নিমজ্জনসাধ্য জাহাজ তৈরী করা শুরু করে। পানিতে ডুবিয়ে চলার প্রথম জাহাজ তৈরী করেন ইংল্যাণ্ড এর রাজা জেইম্স (১ম) এর দরবারে কর্মরত ইঞ্জিানয়ার কর্নলিস ডেরব্বিল (Cornlis Derbbel) ) এবং টেইমস নদীতে এর মহড়া প্রদর্শন করা হয় ১৬২০ সালে। তখন থেকে শুরু হয় এব্যপারে মানুষের ্প্রচেষ্টা যার ফলে বিংশ শতাব্দীতে মানুষ তৈরী করে ‘সাব্মেরীন’ এবং আরো স্পষ্ট করে বলা য়ায় যে ১৯৫৪ সালে সর্বপ্রথম মানুষ প্রস্তুত করতে সক্ষম হয় আধুনিক " নিউক্লিয়ার সাব্মেরীন" । আধুনিক যুগে মানুষ সমুদ্র তলদেশে গবেষণা চালিযে জানতে পেরেছে সাগরের উপর স্তরে জলের অবস্থা শান্ত বলে অনুভব হলেও সাগর গভীরে চলতে থাকে অশান্ত ঢেউ যাকে বলা হয় ।

"ডিপ্ সি কারেন্ট" এবং এর ক্ষমতা এত প্রবল আকার ধারন করে যে সাগরের তলদেশে পলি পল্ললকে স্থনান্তর করে সম্পূর্ন পুুনঃবিন্ন্যাস করতে সক্ষম হয়। এখন প্রশ্ন হল মহা সমুদ্রের গভীরের সেই ঢেউ আর অতল অবস্থার তথ্য হাজার শতাব্দি পূর্বে মুহাম্মদ (সঃ) জানলেন কিভাবে? তাইত আমরা সুরা ফোরকানে ( ২৫:৬) আয়াতে দেখতে পাই মহান আল্লাহ বলেন, " বল: ইহা নাযিল করিয়াছেন সেই মহান সত্তা, যিনি পৃথিবী ও আকাশ মণ্ডলের তত্ব-রহস্য জানেন; নিশ্চয়ই তিনি পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু" উপরোল্লেখিত আয়াত প্রসঙ্গে এখানে উল্লেখ্য যে বৈজ্ঞানিকরা সাগর গভীরের অন্ধকারকে ব্যখা দিয়েছেন "স্তরে স্তরে অন্ধকারাছন্ন পরিবেশ" (layer upon layer of darkness) যা ক্রমশঃ আলোর বর্ণাচ্ছটার কিরণ অনুযায়ী বিভিন্ন স্তরে ভিন্ন রঙ ধারন করে এমন কি এক স্তরে থাকে হলুদ আরেক স্তরে হয় লাল এবং এভাবে স্তরে স্তরে বিভিন্ন রঙ ধারন করে অবশেষে কালো রঙ হয়ে স্পূর্ন অন্ধকার হয়ে যায়। কুরআনের অনেক বাক্য আছে যার সত্যতা মোহাম্মদ (সঃ) মৃত্যুর শত শত বছর পর মানুষ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের মধ্যামে উপলব্ধি করছে এবং সে বিষয়ে অনেক কিছুরই সন্ধান মিলেছে বর্তমান শতাব্দীতে । বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় যেমন এনাটমী, কেমিস্ট্রি,এস্ট্রনমী, জিওলজি, হাড্রলজী সহ বিভি৭ন্ন ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিকরা কেবল অনুসন্ধান পেতে শুরু করছেন বর্তমানে । উদাহরন স্বরুপ, কুরআনে উল্লেখ আছে মানুষের ব্যথা অনুভবের বাহন (পেইন রিসিপ্টর) হচ্ছে তার গাত্রচর্ম বা ত্বক (সুরা নিছা ৪: ৫৬)।

মানুষের মস্তিষ্কের তথা ব্রেইনের সামনের ভাগ (ফ্রন্টেল লুব অফ হিউম্যান ব্রেইন) হচ্ছে মিথ্যা ও অপরাধকারী (সুরা আলাক্ ৯৬:১৬), আধুনিক ফিজোলজী যারা অধ্যায়ন করেছেন সবাই জানেন মানুষের মস্তিষ্কের ব্রেইন চার ভাগে সংযোজিত। ব্রেইনের সামনের অংশ তথা ফ্রন্টেল লুব মানুষের সকল কাজ কর্মের ব্যপারে সিদ্বান্ত নেয়। অতএব, আধুনিক যুগে মানুষের আবিষ্কার আর র্কোআনের বিভিন্ন আয়াতের মর্ম বুঝার চেষ্টা করলে দেখা যাবে সত্যি এই র্কোআন এক বিস্বয়কর গ্রন্থ । (সুত্র: The Amazing Quran : By: Gary Miller Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।