আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঈদ কি শ্যাষ?

এডিট করুন

খুব ভালা ঈদ কাটাইলাম এইবার। চমৎকার একটা ঈদ কাটল। অত্যন্ত আনন্দের সহিত ঈদের দিনটা পার করেছি। এমন ঈদ খুবই কম এসেছে জীবনে। বালের এক জঘন্য জীবন।

কি হইব এতসব কইরা? কিছুই না। যামুগা শ্যাষম্যাষ মইরা। ঐ যে বেডা কামলা দিয়া খায় সেও মরব আমিও মরুম। হুদাই এত তেনা পেচাইয়া কি হইব? কিছুই হইব না। ঈদের দিন আছিল কেলাস।

যাই নাই। ভাবলাম একটু ফূর্তি করুম। মাগার ফূর্তি আর হইল না। কামের কাম হইল বেলা চাইরটার সময় ঘুম থিকা উঠলাম। ঘরে কিছুই আছিলনা খাওনের মতন।

ভাবলাম একটু দুকানে যাই। দুকানে যাইতে না যাইতেই ইমরুল ( আরেক হতভাগা ) দিল ফুন। কয় আমি আইতাছি। আমি কইলাম আয় তাইলে। রাইতে আমার হুষ্টেলে থাকবি।

কয় ঠিক আছে। রান্না বান্না কোনকালে করি নাই। খালি খাইছি। যার ফলাফল জঘন্য সব খাবার খাইতে হয়। তার উপর আমার রান্নার হাত চরম জঘন্য।

বান্নাবান্নায় আমি বিশেষভাবে অজ্ঞ। বহুদিন হইল নিজেই রান্না কইরা খাই। কিন্তু কি যে খাই রান্না কইরা তা নিজেই জানি না। এইবার দেশে যাওনের সময় দুই প্যাকেট মাকারনি নিয়া গেছিলাম। ভাবছিলাম বাবা মারে রান্না কইরা খাওয়ামু।

দেহামু যে আমি কি সুন্দর খানা খাদ্য খাই। যাই হোক মাকারনি রান্ধনের সবাই খাইতে বইলাম। ছোটবোনডাতো আগেই ঝাড়ি মাইরা বিদায় দিল। আমি বেশ উৎসাহের সাথে খাইতে লাগলাম। বাবা-মারে জিগাইলাম কেমন হইছে? কইল ভাল হইছে।

ঐদিকে আমি ঠিকই বুঝতে পারতাছিলাম যে কেমন হইছে (!) মাংশ রান্না কইতে খালি মুরগীই পারি। তাও সেইডা আবার আমার ষ্টাইলে। মশলা, লবন, মাংশ পানি সব একলগে দিয়া ঘুটা দিয়া হাড়িতে কইরা চুলায় বসাইয়া ঢাকনা দিয়া ঢাইকা দেই। আধাঘন্টা পরে আইয়া নামাই। মাঝে মাঝে পেয়াজ দেই, আইলসামী লাগলে পেয়াজ কাটার ঝামেলায় যাইনা।

ভাত রানতে আইলসামী লাগলে ঐ মুরগীর তরকারীতেই কিছু চাইল ছাইড়া দেই। একলগে ভাত তরকারী সব হইয়া যায়। মুরগীরাই আমার হাতে যেমনে নাজেহাল হয় আর আমার রান্না করা তরকারী যা স্বাদ (!) হয় তাতে আর অন্য মাংশ কিননের সাহস পাই না। তা ইমরুল মেট্রোতে আইতাছে। আরো পয়তাল্লিশ মিনিট লাগব কইল।

আমি একটা মুরগীই কিনলাম। ইমরুলের রান্নার হাত আবার ভালা আছে। তয় ওর দৌড়ও বড়জোর মুরগী পর্যন্ত। যতই রেসিপি আমাগোরে দেন না কেন কুন লাভ নাই। রান্নাবান্নার জন্য হাত লাগে।

সবার হাতে রান্না হয় না। ইমরুইল্যারে নিয়া আইলাম হুষ্টেলে। আইয়া দেহি বাজে ছয়টা। সাতটার আগে আবার গেষ্ট ঢুকা নিষেধ। কি আর করা।

ইমরুলরে কইলাম তুই একটু দাড়া আমি জিনিসপাতিগুলান রুমে থুইয়া আহি। তারপরে বাইরে দিয়া কতক্ষণ হাইটা টাইম পাস করুমনে। নীচে নামতেই ইমরুলে আমারে শুরু করল গালি। জিগাইলাম কি হইছে? কয় এইমাত্র একটা মাইয়া আইয়া তার বয়ফ্রেন্ডরে ঢুকাইল। আর সিকিউরিঠির মাইয়াডা ( ভার্সিটিরই ছাত্রী ) আরেক পুলার লগে হাইসা হাইসা কইতে আছিল যে, "দেখ দেখ পুলাডা দাড়াইয়া আছে "।

মাথামুথা আবার গরম হইয়া গেলগা। শালার কি কমু। মেজাজটা চরম খারাপ হইয়া গেল। কতক্ষণ আমরা দুই বিদেশী রাস্তা দিয়া হাটলাম আর গাইলাইলাম। কি গাইলাইলাম সেইডা আর কইলাম না।

পরে ঢুকলাম হুষ্টেলে। সিকিউরিঠিতে সাধারণত হুষ্টেলের ষ্টাফরা থাকে। কয়েকদিন হইল এই চ্যাংড়া মাইয়াটা আইয়া জুটছে। অন্য মহিলাগোরে কহনো নিয়মের ব্যাতিক্রম করতে দেহি নাই। এই চ্যাংড়ীডারে এহন দেখলেই গা জ্বলে।

গতকাল সকালে হালকা ঝাড়ি দিছি। বেশী ঝাড়ী দিবার পারি নাই। পরে কমান্দান্তের ( হুষ্টেল সুপারের মত ) কাছে বিচার দিলে আমার কিছু করার থাকব না। অন্য আরেক হুষ্টেলে আমার এই অভিজ্ঞতা আছে। আরেক মাইয়ারে ঝাড়ি দিছিলাম।

পরে আমার নামে বিরাট মিথ্যা মিথ্যা বিচার দিয়া আইছিল। শালার কি কমু! শান্তি নাই। অবশ্য আমি যহনই সুযোগ পাই এইগুলানরে ভালামত অপমান করি। কুন খাতির নাই। পরে আমি আর ইমরুলে কতক্ষণ বইয়া বইয়া ইউটিউবে পেলেন আর হেলিকপ্টার দেখলাম।

এক পর্যায়ে কইলাম, বহুত তো ভালা ভালা জিনিস দেখলি, এইবার বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর যে দু চাইরডা ভিডিও আছে দেখ। ইমরুলে কয়, মরার বুদ্ধি দিছস! এমনিতে ভালা আছি, থাকতে দে। হুদাই মন খারাপ কইরা লাভ নাই। নিজে যে ভিখারী এইডা আর মনে করার কুন দরকার নাই। এর থিকা এফ-২২ দেখ।

ভালা লাগব। মন খারাপ করনের একটা ভালা বুদ্ধি দেই। ইউটিউবের মাধ্যমে কাজটা হইব। প্রথমে কতক্ষণ পাকিস্তান আর ভারতের বিভিন্ন জাতীয় সংগীত শুনেন। তারপরে তাদের সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন ভিডিও দেখেন।

তাদের বিমান বাহিনীর বিভিন্ন ভিডিও দেখেন। ভারতের এভিয়েশন আর এরোস্পেসের উপ্রে ভিডিও দেখেন। এরপরে রাশিয়ার এভিয়েশন মানে বিভিন্ন যুদ্ধবিমানের উপরে বিভিন্ন ভিডিও দেখেন। এরপরে একই কাজ করেন আমেরিকা নিয়া। এরপরে ডাইরেক্ট নাইমা যান বাংলাদেশে, ব্যাস আর কিছু লাগব না।

রাইত বারোটার সময় রান্না করতে গেলাম। খাইয়া ভাবছিলাম একটু গপসপ করুম। মাগার ইমরুইল্যা দিল ঘুম। রাইত বাজে তিনডা। আমিও কতক্ষণ নেটে ঘুরাঘুরি কইরা দিলাম ঘুম।

সকাল নয়টার সময় আবার ইমরুলের কেলাস। কিন্তু ঘুম থিকা উঠতে উঠতে ওর সাড়ে নয়টা বাইজা গেলগা। একটা কেলাস ওর মিস গেল। পরের কেলাসের লাইগা আরো আরো আধা ঘন্টা ঘুমাইয়া ও দৌড় মারল। আমি ওরে মেট্রো পর্যন্ত পৌছাইয়া দিয়া আইলাম।

এর মধ্যে ঐ চ্যাংড়ীরে পাইলাম সিকিউড়িটিতে। এইবার দিলাম হালকা পাতলা ঝাড়ি। বেশী দিলে আবার বিচার দিতে পারে। এই ডরে বেশী কিছু কইলাম না। এরপরে আরেক দুকানে গিয়া কি-বোর্ড মাউস কিনলাম।

হুষ্টেলে আইয়া দিলাম ঘুম। গত কয়েকদিন ধইরা ঘুমের উপ্রেই আছি। বন্ধু বান্ধবরে কুন মেসেজ দেই নাই ঈদের শুভেচ্ছা জানাইয়া। বাসায় কথা কইছি দুই মিনিট। ভালা লাগে না।

কঠিন জায়গায় থাকতে থাকতে মনটাও কঠিন হইয়া গেছে। বাসায় কথা কইছি দুই মিনিট। ইমরুইল্যায় তো বাসায় কথাই কইল না ঈদ উপলক্ষে। বালের জীবন। ঈদ কই দিয়া আইল আর কই দিয়া গেল কিছুই বুঝলাম না।

ঈদ মানে আসলে কি? ভুইলা গেছি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।