রাজীবের বহুবিদ ব্যবসা। সবচেয়ে বড় ব্যবসা সে মডেল বানায়। সেসব করতে করতে সেও একসময় খ্যাতিমান মডেল হয়ে ওঠছিল। কিন্তু বাধ সেধেছিল তার আগে আগে চলা ব্যাপক ভুড়ি। তারপরও সে ক্ষান্ত দেয়নি।
দুয়েকটা মিউজিক ভিডিও সুন্দরী মেয়েদের সঙ্গে নেচে গেয়ে নির্মাণ করেছিল, সব সখিদের পার করিতে নেব...।
কোথাও প্রচার না হওয়া সেসব ভিসিডি করে বিক্রি হতো।
আমাকেও এক কপি ধরিয়ে দিল একদিন।
ভিসিডি নিয়ে আমি বললাম, আর কিছু বলবি?
সে চুপ।
জিজ্ঞাসা করলাম, ভিসিডির দাম দিতে হবে নাকি?
সে মিনমিন করে বলল,দিতে পারস।
আমি বললাম, তোর কি মনে হয় আমার টাকায় সুতা নেই? তোর কি মনে হয় আমি কী জাল টাকা নিয়ে ঘুরে বেড়াই?
সে অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করল, এগুলো বলছিস ক্যান?
আমি বললাম, তাহলে তুই ভিসিডির দাম চাচ্ছিস ক্যান? তোর এসব অশ্লীল গান আমি টাকা দিয়ে কিনে কী বাংলাদেশ ব্যাংক গর্ভনরের স্বাক্ষরের অপমান করবো?
সে রেগে গেল, যা লাগবে না।
আমি বললাম, একদিন খেয়ে যাস। দশ ভিসিডির দামের সমপরিমান খাবার খাওয়াবো। কিন্তু এর দাম দিতে পারবো না।
সে আরো রেগে গেল, বললাম তো লাগবে না।
আমি বললাম, ধন্যবাদ।
কিশোর বয়স থেকে রাজীবকে দেখে বুঝেছিলাম সে নারীঘেষা এক ছেলে হিসেবে সবাইকে ছাড়িয়ে যাবে।
একদিন হলোও।
প্রচুর মেয়েদের নাম্বার তার মোবাইলে। সারাক্ষণ-ই ঘাড় বাকা করে কথা বলে।
দেখা হলেই সে জলদি মোবাইল কান থেকে নামিয়ে হাতে রাখবে। এর কিছুক্ষণ পর আবার মোবাইল তুলে জানাবে, শোন আমি একটু পর আবার ফোন করছি।
বহুদিন আমরা বন্ধুরা তাকে যন্ত্রণা করেছি, ওই ব্যাটা, যার সাথে কথা বললি তার নাম্বার দে।
সে কাচুমাচু শুরু করতো।
কিছুদিন পর সে নিজেই আগ বাড়িয়ে বলতো, তোদের জন্য কয়েকটা নাম্বার আছে।
নিবি?
আমাকে একদিন বললো, নে তোর জন্য একটা ভালো মেয়ের নাম্বার আছে।
আমি বললাম, যে মেয়ে নাম্বার তোর মোবাইলে থাকে, সে আবার ভালো হয় কী করে?
রাজীব একটা সময় মোবাইল সম্রাজ্যে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে লাগলো। মিসকল আর কল দিয়ে দুনিয়ার মেয়েদের জ্বালাতো।
কয়েক জায়গা থেকে সে প্রমাণও পেয়েছিলাম।
অনেকদিন পর তার সাথে গতকাল দেখা।
কথা বললাম, খোঁজ খবর নিলাম। এখনো মেয়েদের সমানতালে জ্বালায় কিনা?
সে উড়িয়ে দিল,আরে দুর।
আমি বললাম, আমার কাছে একাধিক প্রমান আছে রে। মিছা কথা কইয়া লাভ নাই।
সে চুপ করে রইলো।
হঠাৎ তার মোবাইলে, এসএমএস এর শব্দ।
আমি বললাম, দেখা কে এসএমএস পাঠিয়েছে? যদি কোনো মেয়ে হয় তাহলে তার নাম্বার দে।
সে বলল, আরে মেয়েরা যা ডিষ্টার্ব শুরু করেছে ইদানিং।
আমি বলালম, তোরে ডিষ্টার্ব! তোর ডিষ্টার্বের কারনেই তো মেয়েদের পালানোর কথা। সে যাক, এসএমএস দেখা।
অনেকক্ষন চেষ্টা করে না পেরে মোবাইল দেখালো। দেখলাম, জিপির এসএমএস। ডিষ্টার্বিং নাম্বারগুলো ব্লক করার সুবিধা জানিয়ে এসএমএস।
আমি দ্রুত তার কাছে মোবাইল দিয়ে দিলাম। কি অদ্ভুত ঘটনা।
যে নিজেই ডিষ্টার্ব করে তার কাছে ডিষ্টার্বিং কল ব্লকের এসএমএস।
মজা লাগলো, হায়! গ্রামীন যদি জানতো! কার মোবাইলে কী এসএমএস পাঠিয়েছে?
তবে হয়তো, সরি জানিয়ে আরেকটা এসএমএস পাঠাতো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।