Only I know what is my goal, My heart is my temple.
কাজী সায়েমুজ্জামান : দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। একজন সরকার দলীয় এমপি এবং প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ট আত্মীয় ফজলে নুর তাপসের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ, গুলিস্তানে বোমা হামলা, তেজঁগায়ে প্রকাশ্য দিবালোকে প্রকৌশলীর ওপর গুলিবর্ষণ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে শিবিরের সংগে এবং ঢাকায় সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, ভাংচুর, টেন্ডার নিয়ে প্রতিদিনই ছোটবড় সংঘর্ষসহ অসংখ্য ঘটনাই প্রমাণ করে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছে। সর্বশেষ টঙ্গীর নিপ্পন গার্মেন্টস এ গুলি করে শ্রমিক হত্যার মাধ্যমে আইন শৃংখলা অবনতি ষ্পষ্ট হয়ে গেছে। বেড়েছে তুচ্ছ ঘটনায় খুন আর রাহাজানি। পুলিশ সদর দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী সারাদেশে গত সেপ্টেম্বর মাসেই চার’শ চার ব্যক্তি খুন হয়েছে।
আর ডিএমপি পুলিশের হিসেবে এ বছরের জানুয়ারী থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত রাজধানীতে ২৬১ জন মানুষ খুন হয়। গত সেপ্টেম্বর ও চলতি অক্টোবর মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত ৬০টি খুনের রেকর্ড করা হয়েছে। সারা দেশে গত জানুয়ারী থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয় মাসে তিন হাজার ১১৩ জন খুন হয়। অথচ সারা দেশে ২০০৭ সালে ১২ মাসেই তিন হাজার আটশ ৬৩ জন খুন হয়েছিল। অথচ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বরাবরই আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতির প্রসঙ্গ নাকচ করে দিচ্ছেন।
বলছেন, আইন শৃংখলা পরিস্থিতি ভালো। দিনে দুপুরে সন্ত্রাসী হামলা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এসব মোকাবেলায় পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার দিন বদলের সনদে যে পাঁটি বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছিল তার মধ্যে সুশাসন অধ্যায়ে বলা হয়েছে- “বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধ করা হবে। মানবাধিকার লংঘন কঠোরভাবে বন্ধ করা হবে।
জনজীবনের নিরাপত্তা বিধানে পুলিশ ও আইন শৃংখলা রাকারী বাহিনীসমূহকে রাজনীতির প্রভাবমুক্ত, আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তেলা হবে। ”
এছাড়াও রাজধানী জুড়ে সক্রিয় বিভিন্ন চাঁদাবাজ গ্রুপ। টেন্ডারবাজি চলছে একতরফাভাবে। ধামাচাপা পড়ছে চাঞ্চল্যকর ঘটনাও। অনেক খুনের রহস্য উন্মোচন হচ্ছেনা।
মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি আর ছিনতাইকারীর দৌরাত্ম্যে জনজীবন এখন অতিষ্ঠ। আর থানাও সাধারণত মামলা নিতে চায়না। ফলে হয়রানী এড়াতে ছিনতাইয়ের শিকার হলেও ভুক্তভোগীরা থানা পুলিশের কাছে যেতে চাননা। ফলে সরকারের অগোচরেই থেকে যাচ্ছে অনেক অপরাধের তথ্য। মানুষ আইনের ওপর ভরসা রাখতে পারছেনা বলেই গণপিটুনি বেড়েছে।
পুলিশের হিসেবে শুধু ঢাকাতেই গত মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১২ জন গনপিটুনিতে খুন হয়েছেন। সেপ্টেম্বর মাসেই তেঁজগাও, শাহাবাগ, কদমতলী, পল্টন ও পল্লবীতে পাঁচ জন গণপিটুনিতে খুন হয়েছে। বিভিন্নস্থানে খোদ পুলিশই আক্রান্ত হচ্ছে।
বর্তমানে দেশব্যাপী সাংবাদিকরাও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারী দলের নেতাদের আক্রোশের শিকার হচ্ছেন। তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে র্যাব-১০-এর কর্মকর্তারা নির্যাতন চালিয়ে নিউ এজ পত্রিকার সাংবাদিক এফ এম মাসুমকে পিটিয়ে জখম করে।
গত ২১ আগস্ট গলাচিপায় নদী দখল করে মার্কেট করা সংক্রান্ত প্রতিবেদন দুটি জাতীয় দৈনিকে ছাপা হয়। এতে স্থানীয় সাংসদের অনুসারীরা ওই প্রতিবেদককে নানাভাবে হয়রানি করে। রিপোর্টারের নামে চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, প্রতারণার তিনটি মামলা দেয়া হয়। পরে পুলিশও তার বাড়িতে হানা দিয়ে পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। ওই প্রতিবেদক এখন সপরিবারে এলাকা ছাড়া।
সেখানে আরও কয়েকজন সাংবাদিককে এমপির অনুসারীরা লাঞ্ছিত করে। পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দিতে অপারগতা জানায়। এ ঘটনার আগে চুয়াডাঙ্গা, যশোর ও রাজশাহীতে কয়েকজন সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হন। সাংসদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করায় চুয়াডাঙ্গায় তার অনুসারীরা এক সাংবাদিকের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। ওই সাংবাদিকও পরিবার নিয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন।
যশোরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা সমাবেশ করে সাংবাদিক পেটানোর ঘোষণাও পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। চলছে ক্রসফায়ার ও বন্দুকযুদ্ধের নামে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড। অধিকারের হিসেবে মহাজোট সরকার মতায় আসার পর গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯৭ জন বন্দুকযুদ্ধে খুন হন।
রাজনৈতিক সহিংসতা : অধিকারের হিসেবে চলতি বছরের ১লা জানুয়ারি থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৯ পর্যন্ত এ নয় মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় ১৮৫ জন ব্যক্তি খুন এবং দশ হাজার ৪৬৮ জন আহত হন। নিহতদের বেশিরভাগই আওয়ামীলীগ-বিএনপি’র কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে কিংবা অভ্যন্তরীণ সংঘাতে খুন হয়েছেন।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আওয়ামীলীগ সমর্থক ও কর্মীরাই এসব সহিংসতার বেশিরভাগ ঘটনায় জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ সময়ে আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ৩৬ জন ও বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ২ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশের সবোর্চ্চ কর্তাব্যক্তিরা পর্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তারা গত ২৩ অক্টোবর ডিএমপি কার্যালয়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষ সভা করেন। এতে জনজীবনে বিঘœ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে ওসিদের নির্দেশ দেয়া হয়।
গত কয়েকমাস ধরেই পুলিশের সবগুলো শাখা এখন নিরাপত্তা ইস্যুতে কাজ করছে। দেশব্যাপী সন্ত্রাসী হামলা মোকাবেলায় ব্যস্ত রয়েছেন তারা। এ সুযোগে দুবৃর্ত্তরা সরব হয়ে ওঠেছে। ছিচকে চোর, ডাকাত, ছিনতাইকারী ও খুনীদের কাছে নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ।
বেড়েছে খুন: পুলিশের অপরাধ পরিসংখ্যানেও খুন বাড়ার বিষয়টি ফুটে ওঠেছে।
এবছর মহাজোট সরকার ক্ষমতা নেয়ার পর জানুয়ারী থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয় মাসে সারা দেশে তিন হাজার ১১৩ জন খুন হয়। তবে ২০০৮ সালের একই সময় অর্থ্যাৎ জানুয়ারী থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে তিন হাজার ২৪২টি টি খুন হয়েছিল। ওই সময় রাজধানীতে খুন হয় ২২১ জন। ২০০৭ সালে সারা দেশে তিন হাজার আটশ ৬৩ জন ও ২০০৬ সালে চার হাজার একশ ৬৬ জন খুন হয়েছিল। ডিএমপির হিসেবে এ বছরে সেপ্টেম্বর মাসে ২৫ জন, আগস্ট মাসে ২৪ জন, জুলাই মাসে ২১ জন, জুন মাসে ২৯ জন, মে মাসে ২১ জন, এপ্রিল মাসে ২৪ জন, মার্চ মাসে ৩৪ জন, ফেব্রুয়ারী মাসে ১৬ জন, জানুয়ারী মাসে ৩২ জনসহ মোট ২২৬ খুন হয়।
কুষ্টিয়ায় চরমপন্থিরা মানুষের মাথা কেটে সাজিয়ে রেখে যাওয়ার মতো বিভৎস দৃষ্টান্ত তৈরী করেছে। এখন এমন অবস্থা দাড়িয়েছে, লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে তুচ্ছ ঘটনায় তাৎক্ষনিক খুনের ঘটনা ঘটিয়ে ফেলছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে কিশোরগঞ্জের পৌর এলাকায় এক টাকা পাওনা নিয়ে বচসা খুন খারাপি দিয়ে শেষ হয়েছে। খোদ রাজধানীতেই একজন বিদেশী নাগরিককে বাস থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। একজনকে প্রতিমা বিসর্জনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট গোলমালের জের ধরে ভাংগা কাঁেচর বোতল দিয়ে খুন হয়েছে।
দোকানের একজন কর্মচারী অন্য কর্মচারীর পেটে লাথি মেরে খুন করে ফেলেছে। টেম্পু ভাড়াকে কেন্দ্র করে গোলমালের জের হিসেবেও খুন হয়েছে একজন। পানাদার আদম ব্যবসায়ীকে ধরে আর আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে তুলে দিচ্ছেনা। পিটিয়েই মেরে ফেলেছে এক আদম ব্যবসায়ীকে। চোরাই রিক্সা উদ্ধার করতে গিয়েও চোরের হাতে খুন হয়েছেন রিক্সা মালিক।
ভাই তার বোনকে জবাই করে দিয়েছে। ভাই ভাইকে, স্বামী স্ত্রীকে আর স্ত্রী স্বামীকে খুন করছে। বাবা মারছে নিজের ছেলেকে। ছেলের হাতেও মরছে বাবা। তুচ্ছ একটি কানের দুলের জন্য প্রাণ হারাতে হয় শিশুকে।
সবশেষে পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীর লাশও এখন যেখানে সেখানে পাওয়া যাচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর আস্থাহীনতা থেকেই লোকজন এখন মারমুখী হয়ে ওঠছেন।
উদ্বেগের পর্যায়ে ছিনতাই: জুরাইন মুরাদপুরের বাসিন্দা রাইসুল ইসলাম রাসেল। তিনি গুলশানের একটি আইটি ফার্মে কাজ করেন। কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরার পথে পল্টনে ছিনতাইয়ের শিকার হন তিনি।
মোবাইল ও অর্থসহ মানিব্যাগ নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। এসময় একজন ছিনতাইকারী পথের ভাড়া হিসেবে একশ টাকাও ফেরত দেয়। এ ঘটনার পর তিনি থানা পুলিশের কাছে যাননি। এভাবে রাজধানীতে অহরহ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও তা পুলিশের অগোচরে থাকছে। পুলিশের হিসেবে রাজধানীতে ২০০৯ সালে জানুয়ারী থেকে অক্টোবর মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত ৭৬৯টি দস্যুতা ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
চলতি অক্টোবর মাসে এর সংখ্যা ৩১ টি। এছাড়াও ২০০৮ সালে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দস্যুতা ও ছিনতাই হয়েছে ৭৪৯ টি। ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশ নিয়মিত মামলা নিতে রাজি হয়না। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, মামলা কমনোর জন্য কর্তৃপরে চাপ রয়েছে। কোন থানায় বেশি মামলা রেকর্ড হলে ওই ওসিকে জবাবদিহি করতে হয়।
ফলে শতকরা ৯০ ভাগ ছিনতাইয়ের ঘটনা আর প্রকাশ পাচ্ছেনা। এজন্য লোকজন ছিনতাইকারীকে ধরতে পারলেই গণপিটুনি দিয়ে খুন করে ফেলছে। থানাগুলো মামলা না নেয়ার ফলও দেখা গেছে। ডিএমপি জানিয়েছে, এবছর সেপ্টেম্বর মাসে গত আগস্ট মাসের চেয়ে ২৯১ টি এবং গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের চেয়ে ৪৪৩ টি মামলা কম হয়েছে।
আক্রান্ত হচ্ছে পুলিশ: লোকজন অধৈর্য হয়ে যাওয়ার কারণে পুলিশের ওপর আক্রমনের ঘটনা বাড়ছে।
কোন স্থানে বাংচুর অবরোধ মোকাবেলা করতে গেলে এমনকি ছিনতাইকারীকে রা করতে গেলেও লোকজন একাট্টা হয়ে পুলিশের ওপর আক্রমন চালায়। মহাজোট সরকার মতায় আসার পর এর প্রবণতা বেড়ে গেছে। ডিএমপির এ বছরের গত নয়টি তুলনামূলক অপরাধ চিত্র বিশ্লেষন করে দেখা গেছে যে, পুলিশের ওপর হামলার কারণে ১১৩ টি মামলা হয়েছে। যা মাসিক গড়ে প্রায় ১৩টি। রাজনৈতিক সহিংসতা না থাকলেও পুলিশ আক্রান্তের সংখ্যা অস্বাভাবিক।
২০০৮ সালে এর গড় ছিল ৯টি। গত ২৮ আগস্ট হবিগঞ্জের মাধবপুরে নয়াহাটি এলাকায় মাদকদ্রব্য উদ্ধার অভিযান চালাতে গিয়ে জনতার পিটুনিতে র্যাব সদস্য আবুল কাশেম নিহত এবং মজিবুর রহমান নামে এক সদস্য আহত হন। গত ১৬ জুন সিলেটের বিয়ানীবাজারে বিরোধ মেটাতে গিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাগ্নের গুলিতে বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোনায়েমুল ইসলাম খুন হন।
সরকারী তথ্যে অপরাধ বাড়লেও মামলার সংখ্যা কমছে : পুলিশ সদর দপ্তর ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর এবং ২০০৮ সালের এই সময়ের মধ্যে তুলনামূলক অপরাধ-পরিসংখ্যানের তালিকা তৈরি করেছে। এই তালিকায় খুনসহ সকল অপরাধ চিত্রের বৃদ্ধি ও হ্রাসের তুলনামূলক তথ্যছক তুলে ধরেছে।
তবে এ তালিকায় মামলা কম হওয়ায় অপরাধের আসল চিত্রের খুব কমই উপস্থাপিত হয়েছে।
অপরাধ-পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে সেপেম্বর পর্যন্ত ৯৮৯ টি ছিনতাই, এক হাজার ৪৬০টি আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ ও ৬১৯টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ওই সময়ে দুই হাজার ২৩০টি ধর্ষণ, ৯ হাজার ৬৪৯টি নারী নির্যাতন, ৭৯৩টি শিশু নির্যাতন, ৬৫৩টি অপহরণ, দুই হাজার ৬২০টি সিঁধেল চুরিসহ মোট সাত হাজার ৬৪টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কেবল গাড়ি চুরি হয়েছে এক হাজার ৪৪৬টি। গত ৯ মাসে থানায় মোট মামলা হয়েছে এক লাখ ১৮ হাজার ৯৭৬টি।
রাজনৈতিক খুন গত বছর দু’টি হলেও এবার ৯ মাসে ঘটেছে আটটি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের হিসেবে এবছর গত নয় মাসে রাজধানীতে ৭৭ টি ডাকাতি, ৫৫৫ টি সিধেল চুরি, এক হাজার ৫৬০ টি সাধারণ চুরি ও ৫১৩ টি গাড়ি চুরি হয়েছে। তবে ডাকাতির অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলেও তা সাধারণ ডায়রি হিসেবে নেয়া হচ্ছে। ফলে প্রতি থানাতেই সাধারণ ডায়রি বেড়ে গেলেও মামলা বাড়ছেনা।
এখন চাদাঁ না দিয়ে কেউ কোন কাজ করতে পারেননা।
চাঁদাবাজদের রয়েছে রাজনৈতিক কানেকশন। ফলে ভুক্তভুগীরা চাদাবাজদের ভয়ে পুলিশের কাছে যেতে সাহস পাননা। এরপরেও গত জানুয়ারী মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত চাঁদা দাবী ও টেলিফোনে চাঁদাবাজির ঘটনায় ৭৯টি মামলা হয়েছে। ওই রাজধানীতে শতাধিক টেন্ডারবাজির ঘটনায় ২৫টির বেশি সংঘর্ষ হলেও মোটে একটি মামলা হয়েছে।
উন্মোচন হচ্ছেনা ঘটনা: দায়ের করা বেশিরভাগ মামলার তথ্য উদঘাটন হচ্ছেনা।
এক্ষেত্রে র্যাব পুলিশ ব্যর্থই বলতে হবে। সরকারী হিসেবেই এ চিত্র দেখা গেছে। চলতি বছরে মার্চ মাসে ডাকাতির ঘটনায় মামলা হয়েছিল ১০ টি। এর মধ্যে ছয়টি উদঘাটন করা যায়নি। দস্যুতা নিয়ে মামলা হয় ৪৬ টি।
এর মধ্যে ১৪ টির উদঘাটন সম্ভব হয়েছে। খুনের ৩৪ টি মামলার মধ্যে ১০টির রহস্য উদঘাটন সম্ভ হয়েছে। ৭০ টি সিধেল চুরির মামলা হলেও উদঘাটিত হয়েছে ২৩ টি। ২২১ টি সাধারণ চুরির মামলায় ১৩২ টি ঘটনা উদঘাটন করা যায়নি। ৬২টি গাড়ি চুরির মামলা হলেও ২৯ টির তথ্য উদঘাটন সম্ভব হয়েছে।
অজ্ঞান পার্টির নামে ১৩ টি মামলা হলেও ৬ টি ঘটনা ধামাচাপা পড়েছে। এপ্রিল মাসে ডাকাতি, দস্যুতা, খুন, সিধেঁল চুরি, চুরি, গাড়ি চুরি, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টির ঘটনায় চারশ’ ছয়টি মামলা হয়েছিল। এর মধ্যে ৩৩০ টি মামলাই উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।
১৯ জুন রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বিএনপি নেতা মঞ্জুর মোরশেদ শিপুকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনারও রহস্য উদঘাটিত হয়নি।
মানবাধিকার সংস্থা অধিকার এ ঘটনা তদন্ত করে আইন শৃংখলা রাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়। তবে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, মামমলাটির তদন্ত কাজ ডিবির হাতে রয়েছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। তদন্ত যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় এজন্যই হয়তো এত সময় লাগছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।