আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নীল জল শৈশব-২



Click This Link বউটির পরণে ছিলো টকটকে লাল শাড়ি। কাদায় কাদায় তা হয়ে গেলো বিবর্ণ। বউটির কান্নার শব্দ মনে হয় এখনো কান পাতলে শুনতে পাই। সে যন্ত্রণার মধ্যে যন্ত্রণা আরো বাড়িয়ে তুললেন বয়স্ক এক মহিলা। অপয়া, পোড়া কপালী এই দুটি শব্দই মনে আছে।

তবে গালাগালি ভালোই চলছিলো, যেন ওই ছোট্ট বউটিই স্কুটারটিকে পানাপুকুরে ফেলেছিলো ! বরের ভাবনা শেরোয়ানী আর পাগড়ী নিয়ে। কোথা থেকে ভাড়া এনেছেন সেখানে তো পুরা টাকা দিতে হবে ! কাদাপানি, সদ্য বিয়ে করে আনা বউয়ের কান্না যেন কোন ব্যাপারই না ! আরেক দিন মাল বোঝাই এক মোষের গাড়ী পড়লো পানা পুকুরে। পানিতে বেমক্কা পড়া মোষের চিৎকারে ভয় পেয়ে গেলাম। সে ভয়ানক দৃশ্য কোনদিন ভুলতে পারবো না। টুটুর বালতি টুটুর সাথে খেলতে যেতাম, সেও আসতো আমাদের বাসায়।

শম্পাপাও আসতেন। টুটু বা শম্পাপার সাথে কখনো ঝগড়া হয়েছে মনে পড়ে না। ভালোই চলছিলো। একদিন টুটুর বাসায় গিয়ে দেখি ছোট্ট একটা বালতি দিয়ে মাথায় পানি ঢেলে গোসল করছে। বালতিটা এতো ছোট্ট যে আমার ধারণা ওতে বড়োজোর পোয়াখানিক পানি ধরতো।

বালতিটা আমার খুব ভালো লেগে গিয়েছিলো। কিন্তু আমাকে প্রায় বুকে ছুরি মারার মতো নিষ্ঠুরতায় টুটু সে বালতি ছুঁতেই দিলো না। খুব মন খারাপ করে বাসায় চলে এলাম। কিন্তু সে বালতি কিনে দেবার জন্য বায়না ধরার সাহস আমার ছিলো না। আমাদের যুগে বাবা মা ছিলেন বাবা মা।

আজ কালকার মতো বন্ধুপ্রতীম হয়ে ওঠেননি। তবু মনে মনে আশা ছিলো যদি দোকানে দেখতে পাই তাহলে আম্মাকে বলবো। এমন কপাল, এ জীবনে আর সে বালতির দেখা পেলাম না ! অথচ সেই বালতির চেহারা আজো চোখে ভাসে। এ নিয়ে অবশ্য টুটুর সাথে সম্পর্কের অবনতি হয়নি। (চলবে)


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।