কাঁদছো !! কান্নাতে তোমাকে দারুণ দেখায় ! "মুক্তিযুদ্ধ" শব্দটা কারো মুখে উচ্চারিত হলেই আমার ভিতরে অদ্ভূত একটা শিহরন জাগিয়ে তুলে।
বাবার কাছে যখন মুক্তিবাহিনীর গল্পগুলো শুনি তখন খুব আবেগ তাড়িত হয়ে পড়ি। বাবারা কিভাবে পরিকল্পনা করতেন, বাবার সাখে খোকা চাচা, মতি চাচা, মুক্তা চাচা, মুরাদ চাচা সবাই মিলে ঝটিকা হামলা চালাতেন ঢাকাতে। বাবার অপারেশন গেরিলা টিমে বাবা একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন যিনি গাড়ী চালাতে পারতেন। প্রতিটি অপারেশনে বাবা গাড়ী চালিয়ে যেতেন।
বিজয় নগর ওয়াসা ভবন উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
আমার বড় হওয়ার সময়ের গল্পগুলো সবগুলো মুক্তিযুদ্ধ। আমি ছোটবেলা থেকে আফসোস করে আসছি, "ইশ! বাবার সাথে যদি যুদ্ধে যেতে পারতাম, তাইলে একদম সব হানাদারকে মেরে ফেলতাম"। বাবা হাসেন আর বলেন, "খোকা! যুদ্ধ কোন খেলা নয় এইটা অনেক কঠিন একটা কাজ। সবাই পারে না"।
আমরা প্রতিদিন না খাওয়ার কথা ভাবতে পারি না, নির্ঘুম রাত কাটাতে পারি না। আমরা ভয় পাই দুম করে মরে যেতে। আমরা অন্ধকার হলে বাড়ী ফিরে চলি। ক্লান্ত হলে নরম ফোমের বিছানা খুঁজি। আমরা মাইলের পর মাইল না খেয়ে হাঁটি না।
আমাদের কোন বন্ধু কবর খোরার মতন আমাদের মানসিকতা আমাদের নেই। আমরা রেডিও শুনে উজ্জীবিত হতে প্রস্তত নই।
অথচ ঠিক বেয়াল্লিশটা বছর আগে এই আমার বয়সে একটা যুবক বন্দুক হাতে নিয়ে পাহারা দিচ্ছে। সারাদিন পানি খেয়ে আছে। সারা শরীর জুড়ে মাইলের পর মাইল বয়ে বেড়ানো ক্লান্তি।
ঘুমানোর জায়গা নেই। মশারা কামড়াচ্ছে কিছুক্ষন পর পর। রেডিও খবর বাজছে।
আমি গর্ব করি এই যুবকটাই আমার বাবা। আমার অহংকার আমার মুক্তিযোদ্ধা বাবা ও আমার স্বপ্নের মুক্তিযুদ্ধ।
৯ই ফ্রেবুয়ারী , ২০১৩
--------------------------------------------------------------------------------
লেখালেখি ৩৬৫ প্রজেক্ট ২৪৩/৩৬৫
(বিলম্বে আপলোডের জন্যে দুঃখিত) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।