আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আরো কিছূ অবমূল্যায়িত ছবির গুণকীর্তন

সৃষ্টিকর্তার সকল অপূর্ব সৃষ্টির মাঝে একমাত্র খুঁত সম্ভবত তাঁর সেরা সৃষ্টি ...
The English Patient(1996) Directed By: Anthony Minghella শ্রিলঙ্কান বংশোদ্ভুত মাইকেল ওনডাটিয়ের একই নামের উপন্যাসকে '৯৬ সালে সেলুলয়েডের ফিতায় বন্দী করেন ডিরেক্টর অ্যান্থনি মিংঘেলা। তাঁর এ রূপান্তর ব্যর্থ হয় নি তার প্রমাণ ছবিটির জেতা নয়টি অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড যার মাঝে সেরা ছবির পুরষ্কারটিও রয়েছে। অথচ আইএমডিবির মতে ছবিটি নাকি তেমন দর্শকপ্রিয় নয়! যারা ছবিটি দেখেছেন তারাই কেবল বলতে পারবেন ছবিটির অদ্বিতীয় ভিজ্যুয়াল স্টাইল, চমৎকার চিত্রনাট্য, দারুণ সংলাপ আর সেই সাথে সকল কলাকুশলীর দারুণ অভিনয় এবং সাহারা মরুভূমির উষর দৃশ্যপটের মহিমা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে বিমান দুর্ঘটনায় সমস্ত শরীর দগ্ধ হয়ে যাওয়া হাঙ্গেরিয়ান জিওগ্রাফার কাউন্ট অ্যালমাসির জীবনের শেষ মুহূর্তগুলোতে তার স্মৃতি ফিরে আসা এবং একমাত্র সঙ্গী একজন ইংলিশ নার্সের কাছে তার স্মৃতিচারণ - এই নিয়েই ইংলিশ পেশেন্টের কাহিনী। একটি অপূর্ব প্রেম এবং বিরহের কাহিনী, এবং অবশ্যই অবশ্যই সবার দেখা উচিত।

ছবিটা সম্পর্কে আমেরিকান সমালোচক রবার্ট এবার্টের কথাটা দিয়েই শেষ করছি - "এ ছবিটা পরপর দুবার দেখা উচিত সকলের, প্রথমবার প্রশ্নের জন্য আর পরের বার প্রশ্নগুলোর উত্তরের জন্য। " Out of Africa(1985) Directed By: Sidney Pollack একজন ড্যানিশ ব্যারোনেস, ক্যারেন বিক্সেনের জীবনী অবলম্বনে আউট অফ আফ্রিকা ছবিটি তৈরী। এক দুশ্চরিত্র লম্পট ব্যারনের সাথে বিয়ে হওয়ার পর আফ্রিকায় তার কফি প্ল্যান্টেশনে কাটানো দিনগুলোর কথা। যারা ফাস্ট পেসড, অ্যাকশন প্যাক ছবি দেখে অভ্যস্ত তাদের জন্য অবশ্যই এ ছবিটি নয়। এ ছবিটি আমার দেখা অন্যতম সেরা ছবিগুলোর একটি।

মেরিল স্ট্রিপের অভিনয়, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, দারুণ চিত্রনাট্য আর কাহিনীর ধারাবর্ণনা সবমিলিয়ে ছবিটিকে একটি মাস্টারপিসের মর্যাদা দেওয়াই যায়। এবং সম্ভবত সে কারণে ঐ বছর ছবিটি সেরা মুভির অস্কার জিতে নেয় সহজেই। The Ninth Gate (1999) directed by Roman Polanski ছবিটি আমি যখন প্রথম দেখা শুরু করি তখন আমি খেয়াল করি নাই যে এটা রোমান পোলানস্কির ছবি। ছবিটির শুরু দেখে কাল্ট মুভি মনে হলেও আসলে ছবিটি একটা দারুণ থ্রিলার। ডেভিল ওয়রশিপের ওপরে একটা দুর্লভ বইয়ের আরো দুটো জেনুইন কপি খুঁজে বের করে যাচাই করবার জন্য একজন বুক ডিলার ডিন কর্সকে পাঠানো হয়।

কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে স্বাভাবিক এই ছোট্ট কাজটা জটিল করতে থাকে কিছূ অস্বাভাবিক আর অতিপ্রাকৃত ঘটনা। পোলানস্কির আরেকটা মাস্টারপিস। Pleasantville(1998) directed by Gary Ross টিভিতে এখনকার মেগাসিরিয়াল ব্রিগেডের সাথে যারা পরিচিত তাদের জন্য একটা দারুণ প্যারোডি এবং সেইসাথে চিরয়ত একটি সামাজিক দ্বন্দ্বের সিম্বলিক প্রকাশ হলো প্লেজ্যান্টভিল। "প্লেজ্যান্টভিল" নামের সিরিয়ালে আসক্ত টিনেজার টোবি ম্যাগুয়ারে আর তার জমজ বোন রিজ উইদারস্পুন যখন টিভির ভেতর দিয়ে প্লেজ্যান্টভিলের কাহিনীর মাঝেই ঢুকে যায় তখন কি বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় তা নিয়েই এই কাহিনী। সবাই এই ছবিটা দেখে মজা পাবেন এটার গ্যারান্টি দেওয়া যায়।

টিভি সিরিয়ালের স্টিরিওটাইপিংকে ইচ্ছেমতো পচানো হয়েছে ছবিটায়। আর আপাতদৃষ্টিতে প্যারোডি মনে হলেও মুভিটা শেষ করবার পর যদি মুভিটার আসল মেসেজটা ধরতে পারেন তবেই বুঝতে পারবেন যে শূরুতে ছবিটা যতটা ফাজলামি মনে হয়েছিল আসলে তা নয়। ছবিটার মূল থিম হল একটা চিরন্তন যুদ্ধ - মুক্তমনা আর সংরক্ষণশীলদের লড়াইয়ের কাহিনী। The Talented Mr. Ripley (1999) Directed By: Anthony Minghella অ্যান্থনি মিংঘেলার আরেকটা দারুণ ছবি। তাঁর দুটো ছবি দেখে বুঝলাম যে তিনি মানুষের সম্পর্কেল জটিলতা নিয়ে কাজ করে মজা পান।

ইংলিশ পেশেন্টও যেমন গতানুগতিক রোমান্টিক ছবি নয়, তেমনি নয় এই ছবিটিও। বলে রাখা ভালো এটিও রোমান্সের ছবি যদিও ছবির শেষের মাথায় না গিয়ে তা বোঝার কোন উপায় নেই। একজন চালাক চতুর এবং একইসাথে নিঃসঙ্গ তরুণ রিপলি অদ্ভুত ভাবে জড়িয়ে যায় এক মিলিওনিয়ারের বখে যাওয়া ফূর্তিবাজ ছেলের সাথে। তাদের মাঝে তৈরী হয় চমৎকার একটা বন্ধূত্বের সম্পর্কের কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তার ধনী বন্ধূর সাথে বন্ধূত্বের সম্পর্কটা যে ক্রমেই অবসেশনে পরিণত হচ্ছে সেটা রিপলি বুঝতে পারে না। আর যখন বুঝতে পারে ততক্ষণে সে করে ফেলেছে ভয়াবহ ধরনের একটা অপরাধ।

খূবই দারুণ ছবি আরো উপভোগ্য হয়েছে জুড ল আর ম্যাট ডেমনের দারুণ অভিনয় আর চমৎকার ইতালিয়ান পটভূমির জন্য। আগের পোস্ট: কিছু অবমূল্যায়িত ছবির গুণকীর্তন
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।